উৎসাহ উদ্দীপনায় শেষ হলো ‘কঠিন চীবর দান’উৎসব


খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি: ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের শান্তি,সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘কঠিন চীবর দান’ উৎসব শুরু হয়েছে গত ১৭ অক্টোবর। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা হতে সুতা এবং ওই সুতায় চীবর (পরিধেয় কাপড়) তৈরি করা কঠিন চীবর দানের মূল আনন্দ। পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও অরন্য কুটিরের সভাপতি সমীর দত্ত চাকমা বলেন: বুদ্ধের অহিংস নীতি অনুসরণ করলে সমাজে শান্তি ও সুখ আসবে। তিনি আরো বলেনঃ- ধর্ম যার যার উৎসব সবার। প্রতি বছরের মতো এবারো অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পানছড়ি শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে ১৩ তম কঠিন চিরব দান অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে।

সকল প্রকার লোভ লালসা পরিহার করে ত্যাগের মহিমায় ধর্মপরায়ণ হতে হবে। ত্যাগের মহিমা ও অহিংস মননশীলতা মানুষকে পাপমুক্ত রাখে। শান্তি ও সম্প্রীতি উন্নয়নে প্রেরণা জোগায়। তিনি আরো বলেন:আজকের এই দানত্তম অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সবার জীবনে শান্তি সম্প্রীতি বয়ে আনুক এই প্রার্থনা জানাই। অনুষ্ঠানে চীবর দানের পাশাপাশি ধর্মীয় রীতিতে পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টপরিষ্কার দানসহ নানা দানের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

এরপর পাঁচ শতাধিক ভিক্ষু একযোগে ধর্মীয় প্রার্থনা করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে পানছড়ির শান্তিপুর অরণ্য কুটিরের অধ্যক্ষ শাসন রক্ষিত মহাস্থবির আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির,জ্যেষ্ঠ বৌদ্ধ সাধক ভৃগু মহাস্থবির ও জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির পুণ্যার্থী নারী-পুরুষের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা (উপদেশ বাণী) দেন। পরে কুটির প্রাঙ্গণে সারি সারি প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা করা হয়।

অনুষ্ঠানটি ঘিরে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।হাজার হাজার দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে পবিত্র অরণ্যকুটির এলাকা।যে যার বাসনা নিয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির সাথে এই কঠিন চীবর দানত্তর অনুষ্ঠান পালন করেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/ মামুন/ রুবেল