ল্যাব সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে ঢাকা কলেজে'র গবেষণা কার্য

প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর, ২০১৯ ১১:১৬:২৭

ল্যাব সঙ্কটে ব্যাহত হচ্ছে ঢাকা কলেজে'র গবেষণা কার্য

দেলাওয়ার হোসাইনঃ  দু'শতকের পুরনো ঐতিহ্যবাহি ঢাকা কলেজ। উপমহাদেশের প্রথম এই আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কালের চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এখনো গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখলে থাকলেও পূর্বের ন্যায় দেশ বিদেশ থেকে শিক্ষার্থীদের আগমন ঘটে না। বিজ্ঞান গবেষণায় অগ্রগামী মনে করা হলেও নানা সমস্যায় জর্জরিত ল্যাবগুলো। ক্লাসরুম না থাকায় ল্যাবেই ক্লাস হয় নিয়মিত।নেই স্নাতকোত্তর থিসিস গবেষণার সুযোগ।যন্ত্রাংশ থাকলেও নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি।

সেমিনারগুলো ব্যবহার করা হয় ক্লাসরুম হিসেবে। ল্যাবগুলোর পাশেই ব্যবহার অযোগ্য টয়লেট থাকায় নাক চেপে যাতায়াত করতে হয় ছাত্রদের । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত  হওয়ার পর থেকে ফলাফল বিপর্যয় দেখা দেয় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। পর্যালোচনায় দেখাযায় ল্যাব সম্পর্কিত বিষয়ে ফলাফল বিপর্যয় বেশি হয়েছে। নতুন ভবন নির্মানে ল্যাব এবং ক্লাসরুম সংকট সমাধান হবে মনে করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

রসায়ন ল্যাবঃ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি এবং সম্মান শ্রেণির জন্য রয়েছে মাত্র একটি ল্যাব। ফলে হাজারো শিক্ষার্থীদের নিয়মিত গবেষণা করা সম্ভব হয়না। সম্মান শ্রেণির ল্যাবে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে আছে। ল্যাবের একপাশে স্টল রুমের মতো অপ্রয়োজনীয় লোহার পাইব রাখা হয়েছে। ব্যাসিংগের অংশ  দীর্ঘদিন মেঝেতে পড়ে আছে। ফলে, স্যাঁতসেতে থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ল্যাবের একটি অংশ।

অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফ জানায়, একটা মাত্র ল্যাব থাকায় সিনিয়রদের জন্য আমরা তেমন একটা গবেষণার সুযোগ পাইনা। ল্যাবের যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের প্রয়েজন রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর লায়লা মুসতারিন বলেন, ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন। তবে অধ্যক্ষের  অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলার সুযোগ নেই। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছেলেরা পানি নিয়ে গবেষণা করে, ফলে পানি পড়ে থাকতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ল্যাবে রাখা আছেকিনা আমার জানানেই।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগঃ ক্লাস রুম কম থাকায় ল্যাবগুলোতেই নিয়মিত ক্লাস হয়। ফলে বিঘ্ন ঘটে গবেষণার।  মাস্টার্স পর্যায়ে থিসিস গবেষণার সুযোগ না থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে গবেষণা করতে হয়। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তারেক জানায়, সেমিনারে পর্যাপ্ত ল্যাব সম্পর্কিত বই নেই। একটি মাত্র ওয়েল-স্কেল আছে তা আবার নষ্ট। হাজারো শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র দুটি ক্লাসরুম  রয়েছে। অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী  মোবিন খান অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনের ক্লাসের পর নির্দষ্ট বিষয়ে ল্যাব করার কথা থাকলে আমরা সুযোগ পাইনা। ফলে ল্যাব বিষয়ে সম্পর্কিত বিষয়ে রেজাল্ট ভালো হয়না। ল্যাবের বর্তমান অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর শরিফা সুলতানা জানান, আমাদের একটি আলাদা ল্যাব প্রয়োজন।ক্লাসরুম সংঙ্কট থাকায় ল্যাবে ক্লাস করতে হয় ছাত্রদের। তবে, নতুন ভবনে কোন ডিপার্টমেন্ট গেলে হয়তো এ সমস্যা সমাধান হবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমাদের ডিপার্টমেন্টে প্রফেসরগণ থাকা সত্বেও মাস্টার্স পর্যায়ে থিসিস করার সুযোগ নেই। এর জন্য সবার অাগে একটা স্বতন্ত্র ল্যাব প্রয়োজন।

উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগঃ দু'টি ল্যাব থাকলেও নিয়মিত ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা হয় উচ্চমাধ্যমিক এবং সম্মান শ্রেণির। জায়গা সংকলন না হওয়ায় উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রদের দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে দেখা গেছে। অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরিদুল ইসলাম জানায়, মাইক্রোসফট অনেক পুরনো যা ব্যবহারে উপযুক্ত ফলাফল পাওয়া যায়না, তাও এগুলো দিয়েই আমাদের কাজ করতে হয়।ল্যাবগুলো ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার করায় ফ্যাট্রিকেল ক্লাস করার সুযোগ সবসময় হয়না। ল্যাবে নিয়মিত ক্লাস হওয়ার কারণ জানতে ছাইলে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর কামাল আফরোজ আহম্মেদ জানান, সাধারণত আমাদের ল্যাব গুলোতেই ক্লাস হয়।  ক্লাস  ল্যাবের সাথেই সম্পর্কিত একইসাথে ল্যাব ক্লাস হওয়ায় তেমন একটা সমস্যা হয়না। সব জায়গায় এমনই হয়ে থাকে।

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগঃ পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়েই চলছে ল্যাবে গবেষণা কার্য। শিক্ষক সংঙ্কটে থাকায় নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম চালালো সম্ভব হয়না। ল্যাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সৈয়দ মোহাম্মদ ছগীর জানান, ল্যাবে মেটেরিয়ালের ঘাটতি রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোন কলেজেই থিসিস করার সুযোগ নেই। যদিও ঢাকা কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভূত হলেও থিসিস করানোর মতো প্রফেসর আমাদের ডিপার্টমেন্টে নেই।

কলেজে আই সি টি কম্পিউটার ল্যাব মার্স্টার্স পর্যায়ে একটি এবং উচ্চমাধ্যমিকে রয়েছে একটি। এই বিভাগের জন্য আলাদা কোন শিক্ষক নেই। অন্য বিভাগ থেকে শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে ল্যাব দুটি। মাস্টার্স পর্যায়ে প্রতিটি ব্যাচে ৫০ জন ছাত্র থাকলেও কম্পিউটার আছে ৪০ টি। এরুপ অবস্তা সম্মান শ্রেণিরও।

ল্যাবের সার্বিক অবস্থা জানতে চাইলে  অধ্যাক্ষ প্রফেসর নেহাল আহম্মেদ   বলেন, আমাদের ক্লাসরুম কম, তাই ল্যাবে ক্লাস করাতে হয়। ল্যাবে যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের প্রয়োজন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে  বাজেট না থাকায় ল্যাব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে কিছু বিভাগের ক্লাস ল্যাব কেন্দ্রিক হওয়ায় ল্যাবেয় হয়ে থাকে।

প্রজন্মনিউজ২৪/রেজাউল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ