যেভাবে কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে


বাইরে থেকে সুস্থ। কেবল জোরে হাঁটাহাঁটি বা সিঁড়ি দিয়ে উঠলে হাঁফিয়ে উঠছেন প্রায়ই। অবশ্য তা তো কমবেশি সবারই হয়- এমন ভেবেই নিশ্চিন্ত থাকেন অনেকে। কিন্তু বুঝতে পারেন না চুপিসারে রক্তে কখন মিশে গিয়েছে একগাদা কোলেস্টেরল। পরে সমস্যা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করলে ধরা পড়ে তার দৌরাত্ম্য। উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি তো বটেই, কোলেস্টেরলের হাত ধরে হার্টেও বাসা বাঁধতে পারে নানা অসুখ।

কোলেস্টেরলকে অবহেলা করলে তার ফলও খুব একটা সুখকর হয় না। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রকাশ হাজরার মতে, ‘খাবারের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল শরীরে গেলেই বিপদ। বেশি করে শর্করা খাদ্যগ্রহণ করলে তা পরিবর্তিত হয় ফ্যাটে। তখন দেহকোষগুএলো তখন বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল তৈরি করে।

এই কোলেস্টেরলের একটা বড় অংশ ধমনীর প্রাচীরে জমা হয় ও রক্তের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। তার মতে, ‘কোলেস্টেরল নিয়ে প্রথম থেকে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে নানা জটিল অসুখের শিকার হতে হয়। তবে এই লাইফস্টাইল ডিজিজ নিয়ন্ত্রণও করা যায় রুটিনের কিছুটা অদলবদল ঘটিয়েও। সারা দিনের কাজে কিছু জরুরি পদক্ষেপ করা, কিছু ভুল বাদ দেয়া এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়।

একজন সুস্থ সবল মানুষের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা হওয়া উচিত প্রতি ডেসিলিটারে ১৬০ মিলিগ্রামেরও কম। জানেন, কী কী অভ্যাস আয়ত্তে আনলে সহজেই খারাপ কোলেস্টেরলকে ছেঁটে ফেলতে পারবেন শরীর থেকে? ডায়েট থেকে বাদ দিন সম্পৃক্ত খাবার- অর্থাৎ চর্বি জাতীয় মাংস, পাম তেল, ডালডা, নারকেল, ডিমের কুসুম, মাখন, ঘি, কাজু বাদাম ইত্যাদি।

কম তেল-মশলা হার্টের পক্ষে যেমন ভাল, তেমনই তা কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। বরং খাবারের তালিকায় থাকতে হবে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ফাইভার সমৃদ্ধ খাবার। শাক-সবজি, তরিতরকারি, ফল, তার সঙ্গে অত্যাবশ্যক ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারও। শুধু ডায়েটই নয়, কোলেস্টেরল রুখতে মন দিতে হবে আরও খুঁটিনাটি বিষয়েও। দোকান থেকে কোনও খাবারের প্যাকেট কেনাকাটার আগে সতর্ক হোন।

একটা ছোট্ট কাজ সারলেই কোলেস্টেরলের সঙ্গে লড়াই সহজ হবে। যা কিনছেন, তার পুষ্টিগুণ দেখে নিন। কতটা ফ্যাট শুধু তা দেখলেই হবে না, কতটা ট্রান্স ফ্যাট তা-ও দেখতে হবে। ট্রান্স ফ্যাট থেকেও শরীরে জমে কোলেস্টেরল। ওজন অনুপাতে আপনার শরীরের কতটা পানি প্রয়োজন তা জেনে নিন কোনও পুষ্টিবিদের কাছ থেকে। তারপর নিয়ম মেনে সেই পানিটুকু প্রতিদিন খান।

আজ কম খেয়ে কাল পুষিয়ে দেব, এই ধারণা একেবারে ভুল। শরীরের টক্সিন সরাতে ওস্তাদ পানি। যে কোনও হার্টের অসুখ ৫০-৬০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে উপযুক্ত পরিমাণ পানি খাওয়ার প্রবণতা। শরীরের ট্রাইগ্লিসারাইডকে নিয়ন্ত্রণ ও কোলেস্টেরলকে রুখতে চাইলে প্রতিদিন একমুঠো বাদামই হতে পারে আপনার সমস্যার অন্যতম সমাধান।

আমন্ড, বালিতে ভাজা বাদাম মিশিয়ে ২৫ গ্রাম ওজনের মতো নিন। বিকেলের টিফিনে খান তা। চিপস বা ভাজাভুজি এড়ানো যাবে, পেটও ভরা থাকবে অনেকক্ষণ। বাদাম শরীরে ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়ায়।

প্রজন্মনিউজ২৪/মামুন