মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচের জন্য: কোটি টাকা ব্যয়ে আনা হচ্ছে জিম্বাবুয়েকে!


বিশ্বকাপে তিনি বল হাতে আগুন ঝরাতে পারেননি। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়ে খেলতে নেমে আসলে নিজেকে মেলে ধরা সম্ভবও হয়নি। তাই দুমুখোরা নড়েচড়ে বসেছেন। তীর্যক মন্তব্য করছেন, বিশ্বকাপে মাশরাফি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। তাতে কী হয়েছে? মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে? সন্দেহ নেই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ।

একদিনের মানে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে বিশ্বসেরা নির্ধারণের আসর। চার বছর পরপর এ আসর আসলেই বিশেষ সাড়া ও নাড়া পড়ে ক্রিকেট বিশ্বে। যারা সারা বছর ক্রিকেটের তেমন খোঁজ খবর রাখেন না, তারাও উৎসাহী হয়ে ওঠেন। অধিনায়ক হিসেবেও তার সাফল্য আকাশছোঁয়া। ইতিহাস-পরিসংখ্যান পরিষ্কার জানান দিচ্ছে মাশরাফিই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক।

তার নেতৃত্বেই ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত চার চারটি বিশ্ব শক্তির বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে টিম বাংলাদেশ। খুব স্বাভাবিকভাবেই এ সফল যোদ্ধা ও সফল সেনাপতির বিদায়টা হওয়া উচিৎ স্মরণীয় এবং বীরোচিত সংবর্ধনায়। তার অবসরের ঘোষণা ও দিনক্ষণ নিয়ে নানা কথা। রাজ্যের জল্পনা-কল্পনা।

কবে কোথায় কার সাথে কিভাবে মাশরাফি বিদায়ের ঘোষণা দেবেন? তা নিয়েও রাজ্যের জল্পনা-কল্পনা। তবে আশার খবর এই যে, বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বিশ্বকাপ শেষে লন্ডনে বসেই জানিয়ে দিয়েছেন, মাশরাফির বিদায়টা হবে স্মরণীয়। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সে সফলতম ও এক নম্বর অধিনায়ক। তাই তার আনুষ্ঠানিক বিদায়ের দিনটিকে রঙিন করে রাখতে যা যা করণীয় তা করবে বোর্ড।

বিসিবি বিগ বস আরও জানিয়েছেন, মাশরাফির আনুষ্ঠানিক বিদায়ী ম্যাচ হবে দেশের মাটিতে। যাতে করে নিজ দেশ, জাতি, চেনা জানা পরিবেশ আর ভক্ত, সমর্থক, সুহ্রদ, শুভানুধ্যায়ী সবার সামনেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে পারেন তিনি। কিন্তু বোর্ড প্রধানের কন্ঠে অমন আশ্বস্ত হবার মত খবর শোনার পরও কারো কারো মনে আছে সংশয়-সন্দেহ।

অনেকের মুখেই প্রশ্ন, অদূর ভবিষ্যতে দেশের মাটিতে টাইগারদের কোন ওয়ানডে নেই। তাহলে মাশরাফি কবে শেষ ম্যাচ খেলবেন? আর সেটা কি আদৌ এ বছর মানে ২০১৯ সালে হবে? এ প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর জানতে যে সব অগণিত মাশরাফি ও বাংলাদেশ ভক্ত উন্মুখ, তাদের জন্য আছে সুখবর।সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা অক্টোবরের প্রথম ভাগে দেশের মাটিতেই শেষ ওয়ানডে খেলবেন মাশরাফি।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন টাইগার দলের ওয়ানডে ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। তাই তাঁর বিদায়ী ম্যাচটাও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই দিতে চাই বিসিবি। আর সে কারণেই জিম্বাবুয়েকে ঢাকায় আনতে বদ্ধ পরিকর বিসিবি। গতকালও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বেশ আস্থা ও দৃঢ়তার সাথে জানিয়েছেন জিম্বাবুয়ে আসবে।

আইসিসির নিষেধাজ্ঞা তাদের বাংলাদেশের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে খেলতে আসায় কোন বাধা হবে না। এখন প্রশ্ন উঠেছে, কবে আসবে জিম্বাবুয়ে? তা নিয়ে কোন বোর্ড শীর্ষকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ না খুললেও বিসিবির দায়িত্বশীল সূত্রের খবর, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ ভাগে না হয় অক্টোবরের একদম প্রথম অংশেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ বা সিরিজটি খেলবেন মাশরাফি।

১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ, আফগানিস্তান আর জিম্বাবুয়েকে নিয়ে একটি তিন জাতি টি-টোয়েন্টি সিরিজও অনুষ্ঠিত হবে।  আর ঠিক এরপরই জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ২ বা ৩ ম্যাচের একটি ওয়ানডে সিরিজ আয়েজনের চিন্তা ভাবনা চলেছে এবং ইতোমধ্যেই বিসিবির পক্ষ থেকে জিম্বাবুয়েকে সে ওয়ানডে সিরিজ খেলার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, ঐ বাড়তি তিন বা দুই ওয়ানডে ম্যাচ খেলার জন্য বিসিবি জিম্বাবুয়েকে কোটি টাকার অফারও করেছে। এখন আইসিসির আইনগত জটিলতা না থাকলে জিম্বাবুয়ে হয়ত ৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঢাকা চলে আসবে।

প্রজন্মনিউজ২৪/মামুন