রমজানে ঢাকার ১১টি স্থানে হকারদের বসার ব্যবস্থা


গুলিস্তান, পল্টন, বঙ্গবাজার, মগবাজার, ধানমন্ডি ও গুলশানসহ রাজধানীর অধিকাংশ স্থানে ফুটপাত থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করেছে দুই সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ। তবে হকারদের ব্যবসা এবং সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর ছয়টি অঞ্চলে ১১টি হলিডে মার্কেট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হকাররা যাতে ব্যবসা করতে পারেন সেজন্য সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন অর্থাৎ শুক্র ও শনিবার ১১টি স্থানে হলিডে মার্কেট বসবে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হকাররা এখানে তাদের পণ্য বেচাবিক্রি করতে পারবেন। তবে ঈদুল ফিতরের পর এই মার্কেট ফের বন্ধ করে দেয়া হবে।

ডিএমপি জানায়, গত ৩০ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামকে এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা মহানগর এলাকার ফুটপাত থেকে নিয়মিত হকারসহ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান। লক্ষ্য করা গেছে ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর ফুটপাতগুলো হকারদের অস্থায়ী দোকানে পরিপূর্ণ থাকে।

ঈদের পোশাক থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য অতিদরিদ্র থেকে শুরু করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত এমনকি কিছু কিছু উচ্চ শ্রেণি-পেশার লোকও ভিড় করেন সেখানে। ফলে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ চলাচলের জন্য ফুটপাত ব্যবহার করতে পারেন না, অন্যদিকে ফুটপাত ছেড়ে প্রধান সড়কের ওপর দিয়ে যাতায়াতের কারণে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এছাড়া বর্তমানে ঢাকা মহানগর এলাকায় কয়েকটি মেগা প্রকল্প চলমান থাকায় রাস্তার প্রশস্ততা কমে গিয়ে যান চলাচলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

চিঠিতে ডিএমপি কমিশনার আরও লেখেন, আসন্ন রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দরিদ্র হকারদের বিষয়টি চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য ফুটপাতের পরিবর্তে ছুটির দিনে (শুক্র ও শনিবার) নির্দিষ্ট স্থানে হলিডে মার্কেট স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন। উক্ত মার্কেটগুলো শুধুমাত্র রমজান মাসের শেষ পর্যন্ত চালু থাকবে। ঈদের পর সব হলিডে মার্কেট অপসারণ করা হবে।

এ লক্ষ্যে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনারদের মতামত অনুযায়ী ১১টি স্থানে হলিডে মার্কেট স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। চিঠিতে অস্থায়ীভাবে হলিডে মার্কেট স্থাপনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ডিএসসিসি ও ডিএনসিসির মেয়রদের চিঠিতে অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।

          ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী (১১ মে) শুক্রবার থেকে এসব হলিডে মার্কেট চালু হবে। গত ৩০ এপ্রিল ডিএমপির ওই সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসিসি এলাকার রমনা, মতিঝিল ও ওয়ারি এলাকায় বসবে পাঁচটি হলিডে মার্কেট। স্থানগুলো হচ্ছে- কার্পেট গলি (মৎস্য ভবন থেকে শিল্পকলা একাডেমি), নালারপাড় (কাঁটাবন থেকে শাহবাগের দিকে প্রথম গলি), মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তা, বক চত্বর থেকে পূবালী ব্যাংক রোড পর্যন্ত এবং যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার পূর্বপাশ এলাকা। অন্যদিকে ডিএনসিসির আওতাধীন তেজগাঁও, মিরপুর ও উত্তরায় বসবে বাকি ছয়টি হলিডে মার্কেট।

সেগুলো হচ্ছে- লালমাটিয়া মাঠ (আড়ংয়ের পেছনে), সলিমুল্লাহ সড়কের পানির ট্যাংক মাঠ, মিরপুর-১ নম্বর থেকে রাইনখোলা, হারুনমোল্লা ঈদগাহ মাঠ, উত্তরার জমজম টাওয়ারের পশ্চিম পাশের খালি প্লট এবং কাবাব ফ্যাক্টরির সামনের খালি চত্বর।হলিডে মার্কেট স্থাপনের বিষয়ে ডিএমপির চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ এ নিয়ে কাজ করছে। অপরদিকে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এমন সিদ্ধান্তের কথা শুনেছি। তবে এখনও অফিসিয়ালি কোনো চিঠি পাইনি। হয়তো পেয়ে যাব। মেয়র মহোদয়ের পরামর্শ ও কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রজন্মনিউজ/২৪ শেখ ফরিদ