বেকারত্বের অভিশাপ

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল, ২০১৯ ১১:৪২:৫৩

বেকারত্বের অভিশাপ

সততা এখন পাঠ্যপুস্তকে ছাপানো একটি শব্দ মাত্র। অথচ মানুষ হিসেবে বাঁচার জন্য সততা একটি অপরিহার্য বিষয়। দুর্নীতির কালো থাবায় বিপন্ন আজ মানবসভ্যতা। এ সর্বনাশা ব্যাধির মরণ ছোবলে বর্তমান সমাজ জর্জরিত, প্রশাসন থেকে শুরু করে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ-সংস্কতি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা সর্বত্রই চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। একটি দেশের ভবিষ্যৎ হল শিক্ষিত ছাত্রসমাজ। দুর্নীতির করাল গ্রাসে সম্ভাবনায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ক্রমেই হয়ে উঠছে অনিশ্চিত।

বাংলাদেশের বেকার যুবসমাজের অর্ধেকের বেশি শিক্ষিত বেকার। আর এ শিক্ষিত বেকারত্বের অন্যতম কারণ হল সর্বক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই বেকারত্বের হার বেশি। বাংলাদেশের বেকারত্বের পরিস্থিতির বিশেষ কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে উচ্চ শিক্ষিতদের। আর তাদের নাম দেয়া হচ্ছে বেকার। এরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভাগা।

উচ্চশিক্ষিত হয়েও তারা পাচ্ছে না কোনো কর্ম। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাস্টার্স শেষ করে বসে বসে ভাবতে হয়, এখন কী করবে! কোথাও তাদের নেই কোনো কর্মের সুযোগ। শিক্ষিত বেকারের হার খুব দ্রুতগতিতে বেড়েই যাচ্ছে। শিক্ষিত হয়ে এখন আর যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হয় না। চাকরি দেয়া হয় ঘুষের টাকার ওপর ভিত্তি করে। যে যত বেশি ঘুষ দিতে পারবে তার সবার আগে চাকরি হবে।

ঘুষ দিয়ে চাকরি দেয়ার ফলে যে যার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছে না, ফলে বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্র মেধাহীন হয়ে পড়ছে। যারা সব ক্ষেত্রে ঘুষ নিয়ে চাকরি দিচ্ছে তাদেরও মাথায় রাখা উচিত যে, একটি দেশের উন্নতির জন্য অবশ্যই মেধাবী মানুষ দরকার। প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই লাখ লাখ টাকা ঘুষ ছাড়া চাকরি নেই।

আর যে তিনবারে এসএসসি পাস করছে সেও টাকা দিয়ে এখন প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক। যারা এ দুর্নীতি করছে তারা কখনও আমাদের দেশ তথা এ বাংলাদেশের ভালো চায় না। তারা দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু। এরা বাংলাদেশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে। সরকারের উচিত এসব শত্রুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। স্বাধীন বাংলার মাটিতে দুর্নীতিবাজদের দেখতে চায় না জনসাধারণ।

উচ্চশিক্ষিত বেকারদের নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। দেশে এত বিশ্ববিদ্যালয়, অনার্স, মাস্টার্স ডিগ্রিধারী লোকের দরকার আছে কিনা, তা-ও কেউ খতিয়ে দেখছে না। সিডারের প্রতিবেদন বলছে, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষিত বেকারের হার তুলনামূলকভাবে কম। উচ্চশিক্ষিত বেকারের হার বেশি।

প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি অফ ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল গঠন করছে। সব পর্যায়ে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ পদ্ধতি উদ্ভাবন, প্রশিক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের জন্য শ্রমিকদের মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। কিন্তু এসব করে কী লাভ হবে? যে দেশে ইতিহাস পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি করা যায় ঘুষ দিয়ে, সেখানে এসব মানায়?

কল্পনা আক্তার : শিক্ষার্থী, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

প্রজন্মনিউজ২৪

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ