পরকীয়ার জেরেই খুন নাসিরনগরের জুয়েল


 

নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের চাপরতলা গ্রামের জুয়েল মিয়া (২৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। পরকীয়ার জেরেই তিনি খুন হয়েছেন।গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। জুয়েল হত্যাকাণ্ডের পুরো তদন্ত কাজ তদারিক করেন তিনি। জুয়েল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হারুন মিয়া ও তার স্ত্রী আসমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আরও পাঁচ অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।

নিহত জুয়েল চাপরতলা গ্রামের মৃত আনব আলীর ছেলে।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, চাপরতলা গ্রামের মৃত আলতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিভিন্ন কসমেটিকস্ ফেরি করে বিক্রি করতেন। বাড়িতে তার স্ত্রী আসমা একাই থাকতেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আসমার সঙ্গে ডেকোরেটর্স কর্মী জুয়েল মিয়ার পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।তিনি আরও জানান, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জুয়েল ও আসমা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন।

বিষয়টি জানতে পেরে হারুন তাদের সতর্ক করে দেয়। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এ কারণে ২০ দিন আগে রাগের মাথায় আসমার মাথার চুলও কেটে দেন হারুন। সেই থেকে জুয়েলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। সে অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ রাতে আসমার মাধ্যমে ফোন করে জুয়েলকে বাড়িতে ডেকে আনেন।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হওয়ার এক মিনিটের মাথায় হারুন লাঠি দিয়ে জুয়েলকে আঘাত করেন। পরে হারুনের ছোট বাচ্চার শার্ট দিয়ে জুয়েলের পা এবং আসমার গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো হয়।এর পর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া বাকিরা ধারালো ছুরি দিয়ে তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ একটি ডোবায় ফেলে দেয়।

হত্যাকান্ডের পর হারুন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চলে যান। এর পাঁচ দিন পর ১৯ মার্চ জুয়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের চাচা আবদুল হক মামলা দায়ের করেন। এর সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।গত ৮ এপ্রিল ভোরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে ৯ এপ্রিল সকালে চাপরতলা গ্রাম থেকে আসমাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে হত্যাকা-ে জড়িত আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান আলমগীর হোসেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/সিফাত