আগুনের ঝুঁকিতে চট্টগ্রামের ৯৭ ভাগ বহুতল ভবন

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ, ২০১৯ ০৩:০৮:৫২

আগুনের ঝুঁকিতে চট্টগ্রামের ৯৭ ভাগ বহুতল ভবন

চট্টগ্রাম নগরীতে আবাসিক ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত বহুতল ভবনগুলোর ৯৭ শতাংশ আগুনের ঝুঁকিতে আছে। এসব ভবনের মধ্যে ৯৩ শতাংশের অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত অনাপত্তিপত্র এবং ৯৭ শতাংশের ছাড়পত্র নেই। আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে বহুতল ভবনগুলোর মালিক ও বাসিন্দাদের অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনার আওতায় আনতে না পারলে চট্টগ্রামেও রাজধানীর মতো বিপর্যয় অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা।

বহুতল ভবনের পরে চট্টগ্রাম নগরীতে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বিভিন্ন বস্তি-কলোনি, মার্কেট, শপিং মল ও বিপণী বিতানগুলো। আগুনের ঝুঁকিতে থাকা চট্টগ্রাম নগরীর ৪৩টি এই ধরনের জনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি তালিকা করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ অনুযায়ী ছয় তলার বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণ করতে হলে তিন স্তরের অগ্নিনিরাপত্তা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এর নিচে হলে দুই স্তরের অগ্নিনিরাপত্তা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

এই আইন অনুযায়ী, যেকোনো বহুতল ভবন নির্মাণের আগে অনাপত্তিপত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর ১৫ দিনের মধ্যে চিঠি দিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরকে অবহিত করতে হবে। ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে বসবাস ও ছাড়পত্রের আবেদন করতে হবে।দুই বছর পরপর একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক স্থাপনা, ফিটিংস ও ওয়্যারিং পরীক্ষা করতে হবে।

ভবনে ব্যবহৃত আসবাব অগ্নি নিরোধক হতে হবে। ফায়ার এক্সিট আগুন, সিগারেটের ধোঁয়া ও তাপমুক্ত হতে হবে।এই আইন অমান্য করলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ যেকোনো সময় ভবনটিকে আবাসিক অথবা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী ঘোষণা করতে পারবে।

চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের উপসহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে বলেন, ‘বহুতল ভবন যদি ছয়তলার ওপরে হয়, তাহলে সামনে ৩০ ফুট প্রশস্ত জায়গা থাকতে হবে। সিঁড়ি হতে হবে কমপক্ষে ছয় ফুট প্রশস্ত। প্রতি ৫৫০ বর্গফুটের মধ্যে একটি করে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকতে হবে। ছাদের ওপর যে পানির রিজার্ভার আছে, সেখানে অগ্নি নির্বাপনের জন্য আলাদা সংযোগ লাইন থাকতে হবে। কমপক্ষে অর্ধেক পানি সংরক্ষণ করতে হবে শুধু আগুন নেভানোর জন্য।

বাসার দরজাগুলো হতে হবে অগ্নিনিরোধক, যাতে সেগুলো দিয়ে আগুন প্রবেশ করতে না পারে। সিঁড়ি থাকবে ধোঁয়া ও আগুনমুক্ত।’‘আইনে সবই আছে, কিন্তু চট্টগ্রামের বহুতল ভবনগুলোতে তো সেটা মানা হচ্ছে না।

অথচ যারা বহুতল ভবনের বাসিন্দা বা মালিক, সবাই শিক্ষিত এবং উঁচু শ্রেণির মানুষ। এ অবস্থায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রামের বহুতল ভবনগুলোর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিতে শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। যেসব ভবনে এরই মধ্যে বসবাস ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, সেগুলোকে প্রয়োজনীয় অগ্নি নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুসরণ করে ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রায় তিন লাখ ভবন আছে। এর মধ্যে ৬-৭ হাজার বহুতল ভবন আছে। এর মধ্যে গত পাঁচ বছরে যেসব ভবন তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে কিছুটা অগ্নিনিরাপত্তা আইন মানা হয়েছে। কিন্তু ১০-১২ বছর আগে যেসব বহুতল ভবন বানানো হয়েছে, সেগুলো অগ্নি নিরাপত্তার কোনো তোয়াক্কা করেনি। ফলে চট্টগ্রামে বিশাল এক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে একটা বিপর্যয় সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে।

’ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাও এগিয়ে আসুক। আমরা আইন মানতে তাদের বাধ্য করি। দুর্ঘটনা ঘটবে। কিন্তু বিপর্যয় থেকে যেন আমরা মানুষকে হেফাজত করতে পারি। মানুষকেও নিজেদের রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

প্রজন্মনিউজ২৪/মামুন

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ