রাজউকের অনুমোদনই কি অগ্নিকান্ড রোধের উপায়!


মানুষের মৃত্যুর সারি দীর্ঘ হচ্ছে। একটি বড় দূর্ঘটনা ঘটলেই শুধু আমাদের টনক নড়ে। তাও আবার দু-চার দিন পর আবারো স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ থেকে যদি আমরা শিক্ষাই না নিতে পারি, আর সে শিক্ষা যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে লাভ কি।

কোনো একটি আলোচিত ঘটনা সামনে আসলেই আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। নতুন আরেকটি ঘটনা আসলেই তা খুব সহজে ধামাচাপা পড়ে। তখন সমালোচক-আর দোষী কারোরই কোনো হদিস থাকেনা। সবাই নতুন ইস্যু নিয়ে আলোচনায় মুখর। কিন্তু দূর্ঘটনার কারণে যাদের ক্ষত তৈরী হলো সেই ক্ষতিগ্রস্থরাও কি এতো সহজে ভূলে যেতে পারে? সর্বোপরি মানুষ হিসেবে আমাদের শিক্ষা হবে কবে?

সেই নিমতলী থেকে চুড়িহাট্টা কোথায় আামাদের শিক্ষা। সেই ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই আবারো বনানীর অগ্নিকান্ড। বনানীর অগ্নিকান্ডের পরপরই শুরু হয়েছে নানামুখী আলোচনা সমালোচনা।

 

একদিকে ভবনটি রাজউকের অনুমোদন ছিলনা, ফায়ার সার্ভিস দেড়ি করেছে, পানি থাকলে জীবনের ক্ষতি কমানো যেতো, দর্শনার্থীদের জটলা ক্ষতিকে বাড়িয়েছে, উদ্ধারে আসা সামরিক বাহিনী মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেনি ইত্যাদি ইত্যাদি। সত্যিকার অর্থে এরপরও আমরা শিক্ষা নিতে পারবোনা। চোখের সামনে এসব ঘটনা ঘটে যাবে আর আমরা এভাবেই দেখে যাবো।

বনানীর ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি হয়েছে। মেয়র বলেছেন, সব বাড়ীর কাগজপত্র দেখা হবে। মন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সব তদারক করছেন সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। রাজউক বলছে, ১৮তলার পরিবর্তে ২২তলা ভবন করেছে, আরো কতোকি। কিন্তু একসপ্তাহ পরে যদি একন আরো আরেকটি ২২তলা ভবনে আগুন লাগে তাহলে এসব শিক্ষা কি সেই আগুন নিভাতে কোনো সহায়ক হবে।

রাজউকের অনুমোদনে ১৮তলার পরিবর্তে ২২তলা হলেই কি আগুন নিভানো সহজ হতো। নাকি বিল্ডিংয়ের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা সচল হতো, দালানো অবস্থানকারী ব্যক্তিরা আগুন নিভাতে দক্ষতার পরিচয় দিতো এ প্রশ্ন থেকেই যায়। আসলে আমাদের চরিত্রেই সমস্যা।

এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হয়তো মিডিয়ার সংবাদ তৈরীর খোরাক জমিয়েছে বটে। কিন্তু, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর কথা আমরা কতদিন মনে রাখবো। এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের করণীয় ঠিক করার পাশাপাশ্বি দরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, যার বড় ই অভাব। রাজধানীতে এমন বহু আর এফ টাইয়ার পাওয়া যাবে যাদের অনেক সমস্যা আছে কিন্তু তারা কি বনানীর আগুন দেখে কিছুও শিক্ষা নিয়েছে। যতদিন এ শিক্ষা তাদের মধ্যে জাগরণ তৈরী না করবে ততদিন হয়তো লাশের এ মিছিল থামবেনা। সর্বোপরী এ সারি শূন্যতে নেমে আসুক এটাই প্রত্যাশা।