বিতর্কিত কপিরাইট আইন পাস করল ইইউ পার্লামেন্ট


শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত কপিরাইট আইনটি পাস করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পার্লামেন্ট। ইউরোপের দেশগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রচণ্ড বিরোধিতার পরেও বিতর্কিত কপিরাইট আইনটি পাস করে ইইউ পার্লামেন্ট। মঙ্গলবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ইইউ পার্লামেন্টে ভোটাভুটির পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিতর্কিত আইনটি পাস করা হয়।

ইউরোপীয় সংসদে ইইউ কপিরাইট আইনের সংস্কারের বিতর্কিত প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৪৮ জন সাংসদ, বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ২৭৪ জন।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা অনেক দিন থেকেই বলে আসছেন, এ আইন ইইউ সদস্য দেশগুলোতে প্রবর্তিত হলে ইন্টারনেটের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে। ভবিষ্যতে, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর পোস্ট প্রদর্শিত হওয়ার আগে তা সম্ভাব্য কপিরাইটের যেন লঙ্ঘন না হয়, সে জন্য ফিল্টার আপলোড দিয়ে পোস্টগুলো পর্যালোচনা করতে হবে।

ইউটিউবের মতো ইন্টারনেট পোর্টালগুলির জন্য এর ব্যবহারকারীদের কপিরাইট-সুরক্ষার বিষয়ে, ফিল্টার আপলোড দিয়ে যাচাই বাছাই করতে হবে। এ প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়ার জন্য আপলোড ইনস্টল করার প্রয়োজন হবে। ইনস্টল করা ফিল্টারটি মূলত ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর একটি ‘প্রাক-সেন্সর’ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে।

কপিরাইট আইনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত কোনো সংবাদ ও ছবির ক্ষেত্রেও কড়া বিধান করা হয়েছে। কোনো রকম চুক্তি বা লাইসেন্স ক্রয় করা ব্যতীত অন্য কেউ তা প্রকাশ করতে পারবে না।

ইইউ সদস্য দেশগুলোর নাগরিকেরা মনে করেন, আধুনিক বিশ্বে এই বিতর্কিত কপিরাইট আইন, একটি রক্ষণশীল এবং বাড়াবাড়ি রকমের সিদ্ধান্ত। বর্তমান কপিরাইট আইন প্রথম ২০০১ সালে প্রবর্তিত হয়। তখন ফেসবুক, ইউটিউব বা টুইটার ছিল না। ২০১৬ সাল থেকে ইইউ দেশগুলোতে এ আইন সংস্কার করা হয়েছিল। তবে এখন সংশোধিত এই কপিরাইট আইনের মাধ্যমে বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হলো।

এর আগে পরিকল্পিত আপলোড ফিল্টারের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ নাগরিক ইইউ পার্লামেন্ট বরাবর একটি আবেদন স্বাক্ষর করে পাঠিয়েছিল। গত শনিবার বিতর্কিত কপিরাইট আইন বা অনুচ্ছেদ ১১, অনুচ্ছেদ ১৩ সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ইউরোপের নানা দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। কপিরাইট আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে দুই লাখ মানুষ মিছিল জমায়েত করে। শুধু জার্মানির বার্লিন, মিউনিখ, ফ্রাঙ্কফুর্ট ও কোলনে প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষ এই বিতর্কিত কপিরাইট আইনের প্রতিবাদ করেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/দেলাওয়ার হোসাইন।