যেখানে ৩ বছর অন্তর কবর থেকে তোলা হয় লাশ


আর্থিক অনটন যতই থাক না কেন, প্রিয়জনের অন্ত্যেষ্টির কাজে কোনো ত্রুটি হওয়া চলবে না। তাই মৃত্যুর সপ্তাহ খানেক পর কবর থেকে লাশ তুলে এনেও তার অন্ত্যেষ্টির কাজ করা হয়! তবে একবার নয়, এমনটি করা হয় প্রতি তিন বছর পর পর।

বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে এমনই সামাজিক রেওয়াজ পালিত হয়ে আসছে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি পর্বতের বিচ্ছিন্ন একটি গ্রামে বসবাসকারী তোরাজান উপজাতির মধ্যে।তোরাজান উপজাতির শতাব্দী প্রাচীন এই রীতির নাম ‘মানিন।

জানা যায়, তোরাজান উপজাতির মানুষেরা বিশ্বাস করেন, মৃত্যুই জীবনের শেষ নয়।কারণ, তাদের মতে মৃত্যু আসলে আধ্যাত্মিক জীবনে প্রবেশের একটি পর্যায়।এ ছাড়াও তাদের বিশ্বাস, মৃত্যুর পর তাদের প্রিয়জনের আত্মা পুনরায় ঘরে ফিরে আসে।তাই প্রতি তিন বছর পর পর কবর থেকে লাশগুলো তুলে এনে দেখে নেওয়া হয়, কী পরিস্থিতিতে রয়েছেন তারা।

এ ছাড়াও, মেরামত করা হয় কফিনগুলো।ইন্দোনেশিয়ার এই উপজাতিরা প্রাচীন রীতি মেনে তিন বছর পর পর কবর থেকে প্রিয়জনের লাশগুলো তুলে নিয়ে আসেন।এমনকি সাজিয়ে গুজিয়ে রীতিমতো হাঁটিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়।এবং দেহগুলি থেকে পুরোনো মলিন জামা কাপড় পরিবর্তন করে পরানো হয় নতুন জামা কাপড়।

তোরাজান উপজাতিরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে, যে যার সাধ্য মতো খরচ করে এই রীতি পালন করে থাকেন। তিন বছর ধরে এর প্রস্তুতি চলে একটু একটু করে।৯৭৯ সালের পর ডাচ মিশনারিদের হাত ধরে সভ্যতার আলো কিছুটা হলেও পৌঁছেছে সুলাওয়েসির এই গ্রামে।

এ ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তোরাজান উপজাতি এই মানুষদের।তবে এখনো ‘মানিন’-এর রীতি একইভাবে পালিত হয় এখানে।

প্রজন্মনিউজ২৪/মামুন