বিজিবির রথযাত্রা আবেদন খারিজ


বিজেপির রথযাত্রার আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দিনভর শুনানির পর আইন-শৃঙ্খলা প্রশ্নেই বিজেপির আবেদন খারিজ করল আদালত। 

কোচবিহার জেলা প্রশাসন বিজেপি-র রথযাত্রার অনুমতি না দেওয়ায়, বুধবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। বৃহস্পতিবার রথযাত্রার বিরোধিতা করে কোচবিহার জেলা পুলিশের এই রিপোর্টকেই আদালতে পেশ করলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।

 

গোরক্ষার নামে অন্য সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালিয়ে অশান্তি-গন্ডগোল বাধানোর ছক তৈরি করা হয়েছে কোচবিহারে। আর সেই কারণেই এই মুহূর্তে বিজেপি-র রথযাত্রার অনুমতি দিতে পারছে না প্রশাসন।

 

বুধবার নবান্নে কোচবিহারের পুলিশ সুপারের পাঠানো রিপোর্টে বলে হয়েছে যে, ওই জেলা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। অতীতে একাধিক অশান্তির ঘটনা ঘটেছে এবং সেই সমস্ত ঘটনায় প্রাণহানিও হয়েছে। পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন, “রথযাত্রাকে সামনে রেখে কিছু দুস্কৃতী ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের অন্য প্রান্তের মতো এখানেও গোরক্ষকরা অশান্তি পাকানোর পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যেই এ রকম একটি চেষ্টা হয়েছিল। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।” পুলিশ সুপার তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, এ রকম স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে রথযাত্রা জেলায় পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।

অ্যাডভোকেট জেনারেল এদিন কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহার রিপোর্টও পেশ করেন আদালতে। সেই রিপোর্টেও উল্লেখ করা হয়েছে, রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়াতে পারে জেলায়।

 

বিজেপি-র রুজু করা এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রশ্ন করেন, “বিজেপি প্রথমে ডিজি এবং পরে আইজির কাছে অনুমতি চায়। তারপরেও অনুমতি দেওয়া হয়নি কেন?” বিচারপতি বলেন, ‘‘স্বয়ং রাজ্যপাল এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন।তারপরেও কেন মনে হয়নি, অনুমতি দেওয়া যায়?’’জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতকে স্পষ্ট জানান, ডিজি-আইজি ওই অনুমতি দেওয়ার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নন। পাশাপাশি তিনি জানান, রাজ্যপালের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও সাংবিধানিক অধিকার নেই।

বিচারপতি এ দিন প্রস্তাব দেন, রাজ্য সরকার বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারে কি না। অ্যাডভোকেট জেনারেল জবাবে বলেন, মাত্র এক দিনের মধ্যে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব নয়। এত কম সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশি ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়, আদালতকে জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল। এ দিন অ্যাডভোকেট জেনারেলের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর আদালত জানায়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত রথযাত্রা করতে পারবে না বিজেপি। ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।

 

প্রজন্ম নিউজ/শাহারিয়ার রহমান