আজ না হয় কাল!


আজ না হয় কাল

-এ আর তানভীর

নাহ, পড়াশোনা হচ্ছে না একদমই, পড়তে বসতে হবে। তবে আজ নয় একেবারে কাল থেকেই শুরু করবো।মনে পরে, এই ধরণের কথা আমরা প্রায়-ই বলে থাকি? আসলে অনেকের মুখ থেকেই এ ধরনের কথা শোনা যায় বা এমন ঘটনা ঘটে যে আজ না হয় কাল,করে করে অঢেল সময় পার করে দিয়েছে।

শুরু করার জন্য আজ আর কালকের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই শুধু পার্থক্য এই যে আজ না হয়ে কাল হলে তোমার জীবন থেকে একটি দিন বৃথা চলে যাবে। শুধু তাই নয়, যদি এমন হতো যে আজ নয় কাল বলে তুমি কাল থেকে পড়াশোনা শুরু করতে পেরেছ তাহলেও সেটা মানা যেত। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখবে যাদের মধ্যে এই আজ নয় কাল, বলার প্রবণতা আছে তারা কালও সে কাজটি শুরু করতে পারছে না। আসলে আজ নয় কাল,এই কথাটি বলে এমন একধরণের মানুষ যাদের মধ্যে লেগে থাকার স্বদিচ্ছার অভাব, কাজের প্রতি অনীহা, এমন কি জীবনে সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষ্যও থাকে না।

এই কাল থেকে শুরু করবো, এটা আসলে কোন কাল? এর উত্তর দুইভাবে দেওয়া যায়। একরকম এমন যে, কাল বলতে আগামী কালকে বোঝায়। আর অন্য অর্থে কাল বলতে আমরা ভবিষ্যৎ বা অনন্ত কাল বুঝি। সমস্যা হয়েছে যেটা তা হচ্ছে, আমরা এই কাল থেকে শুরু করবো,কথাটির মধ্যে যে কালের কথা বলা হয়েছে তার ভুল ব্যাখ্যা করে ফেলি। আমরা ভাবি এই কাল মনে হয় অনন্ত কাল। তাই যদি না হয় তবে খেয়াল করলে দেখবে, যারা এই কথা বলে তাদের কিন্তু কাল আর আসেনা।

কারণ আজ গিয়ে যে কাল আসে, সে কাল কিন্তু কাল আবার আজ হয়ে যায়। ফলে সামনে আবার একটি কাল চলে আসে। আগামী কাল। আর এই কালও শেষ হয়না, তোমাদের পড়াশোনা শুরু করার জন্য নির্ধারিত কালটিও আসে না। শুধু তাই নয়। বলা হয়ে থাকে, মানুষ অভ্যাসের দাস। এই আজকালের খেলায় এমন এক অভ্যাস তৈরি হয়ে যায় আমাদের ভেতর যা একসময় স্বভাবের সঙ্গে মিশে যায়। যার ফলে জীবনের সকল ক্ষেত্রেই সে এই কাল কাল করে তার কাজগুলোকে ঝুলিয়ে রেখে সময়ক্ষেপণ করে।

আর শেষে একবারে অনেক কাজের বোঝা মাথায় চাপিয়ে দিকবিদিক হারিয়ে ফেলে গোটা কাজটাকেই পণ্ড করে দেয়। কথায় আছে, সময়ের কাজ সময়ে করা উচিত। সফল ব্যক্তিদের জীবনের দিকে তাকালে দেখবে তারা প্রতিদিন নিজেদেরকে কি পরিমাণ কাজের মধ্যে সম্পৃক্ত রাখেন।

তাই আড়মোড়া ভেঙ্গে আজই বসে পরো পড়ার টেবিলে, তৈরি করে ফেলো দৈনন্দিন একটি রুটিন এবং সে অনুযায়ী আজ থেকেই শুরু করে দাও পড়াশোনা। কালকের জন্য পড়া জমিয়ে রেখো না। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন করে রাখলে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম হয়।

লেখক: এ অার তানভীর 

 বিইউপি