উত্তাপের মাঠে, উত্তাপের নতুন লড়াই!


সংযুক্ত আরব আমিরাতের উত্তাপটা একটু বেশিই। আভাস অনুযায়ী, ৪১ থেকে ৩৭ এর মধ্যে থাকবে মাপমাত্রা। সেখানে বাড়তি উত্তাপের আভাস দিচ্ছে বাংলাদেশ-শ্রীলংকার ম্যাচ। ময়দানি লড়াইয়ে বাঘ-সিংহের লড়াইটা ইদানিং বেশ জমজমাট হচ্ছে।

শ্রীলংকার মাটিতে প্রথমে বাংলাদেশ টেস্ট জয় করে ফিরেছে। লংকানরা বাংলাদেশে এসে তার শোধ নিয়ে ফিরেছে। জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশকে ফাইনালে হারিয়েছে লংকানরা। টাইগাররা লংকানদের ঘরের মাঠে তাদেরই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত নিদাহাস ট্রফিতে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে।

ওই টুর্নামেন্টে মাঠের লড়াই মাঠের বাইরেও বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছে। নাগিন ড্যান্স, ড্রেসিং রুমের কাঁচ ভাঙা, অ্যাম্পিয়ারের নো বল কান্ড, মাঠে থাকা বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের উঠে আসার ইঙ্গিত, ফাইনালের আগেই টিকিটে  শ্রীলংকা-ভারত লিখে রাখা, দু'দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বাকযুদ্ধ; কত ঘটনা!  এরপর এশিয়া কাপ দিয়ে আবার মুখোমুখি হচ্ছে দু'দল। তাতে শোধ-প্রতিশোধ নিয়ে কথা অবশ্য কোন দলই বলেনি। তবে ময়দানে বা বাইরে নতুন উত্তাপ ছড়াতে পারে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচ। নিরপেক্ষ ভেন্যু হতে পারে বাড়তি অনুপ্রেরণা।

বাংলাদেশ দলে তামিম ইকবাল, লিটস দাস, সাকিব, মাশরাফি, মুস্তাফিজরা যেমন ম্যাচের নির্ধারক হতে পারেন। তেমনি লংকান দলে আছেন ম্যাথুস, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, থিসারা পেরেরা কিংবা মালিঙ্গারা। সমানে সমানে টক্কর দেওয়ার মতো দল আছে দু'দলের হাতেই। তবে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ ম্যাচ কিংবা টাইগারদের সর্বশেষ সিরিজ তামিমদের আত্মবিশ্বাসী করতে পারে। বাংলাদেশ নিদাহাস ট্রফিতে লংকানদের বিপক্ষে সর্বশেষ টি২০ ফরমেটে হওয়া ম্যাচে জয় পায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে-টি২০ সিরিজ জয়ের ইতিহাসও টাটকা।  

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে এ ম্যাচে চোখ থাকবে তামিমের দিকে। বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান  ওয়ানডের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওপরের দিকে আছেন। চলতি বছরে ৮৯.৮৩ গড়ে ৫৩৯ রান করেছেন তিনি। তবে বাংলাদেশ এই ওপেনারের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে মাশরাফিরা। কারণ দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী ওপেনিং সঙ্গী নেই তার। তার দ্রুত ফিরে যাওয়া তাই বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত হতে পারে।

শ্রীলংকা দলের মধ্যে অধিনায়ক অ্যাঞ্জেল ম্যাথুস থাকবেন নজরে। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দারুণ খেলেছেন তিনি। দলের হয়ে খেলেছেন ৯৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। দিনেশ চান্দিমাল, গুনাথিলাকারা লংকান দলে না থাকায় দায়িত্ব বাড়বে অধিনায়কের ওপর। এছাড়া লাসিথ মালিঙ্গা দলে ফেরায় প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন তিনি।  খেলোয়াড়, পরিসংখ্যানকে উপনায়ক বানিয়ে ম্যাচের আলোচনার বিষয় হতে পারে দুবাইয়ের উইকেট। গরম থাকায় প্রথমে ব্যাট করা দল ভালো রান তুলতে পারে। সন্ধ্যার পরে পড়তে পারে শিশির। এছাড়া ব্যাটিং উইকেট হওয়ায় শুরুতে ব্যাট করা দল সুবিধা পেতে পারে। দুবাইয়ের শেষ ম্যাচগুলো আবার অন্য কথা বলে।

গত বছর সেখানে হওয়া পাঁচ ওয়ানডে ম্যাচের চারটিতে পরে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে। তবে এশিয়া কাপকে কেন্দ্র করে নতুন উইকেট বানানোয় অতীত রেকর্ড অকার্যকর হতে পারে। এছাড়া স্পিনে বিশেষ সহায়তা পেতে পারে দল। তবে দুবাইয়ের উইকেটের বড় ধাঁধাঁ হলো কখন ব্যাটিং, কখন পেস সহায়ক আর কখন স্পিন তা বলা কঠিন। তামিম ইকবাল সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন।  

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মেহেদি মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলংকার সম্ভব্য একাদশ: নিরোশান ডিকভেলা, উপুল থারাঙ্গা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেল ম্যাথিউস (অধিনায়ক), ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, থিসারা পেরেরা, দাশুন সানাকা, দিলরুয়ান পেরেরা, সুরাঙ্গা লাকমাল, লাসিথ মালিঙ্গা।

প্রজন্মনিউজ২৪/নিরব