সাংবাদিক জেনেই কেটে পড়ল মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল


সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের প্রতিষ্ঠাতা পিটার দ্য গ্রেটের রাজপ্রাসাদ পেটারহফে হঠাৎই দেখা একদল বাঙালির সঙ্গে। বাংলাদেশের কয়েকজন সাংবাদিককে দেখে তাদেরই একজন জানতে চাইলেন, ‘আমরা সেন্ট পিটার্সবার্গে থাকি কি-না।’ পরিচয় জানলাম, তারা সরকারি সফরে এসেছেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দিলিপ কুমারের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল এসেছেন। এর বাইরে যুগ্ম-সচিবের স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েও রয়েছেন।

শুরুতে যুগ্ম সচিব বললেন, ঢাকার সোহরওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভের তৃতীয় ফেস কীভাবে সুন্দর করা যায় তার কিছু অভিজ্ঞতা অর্জনেই তারা রাশিয়া এসেছেন। সে সফরের অংশ হিসেবেই ঘুরছেন পিটারহফে।

বাংলাদেশের মিডিয়াকর্মীদের আগ্রহ বাড়লো, ‘বিশ্বকাপ কাভার করতে এসে বাড়তি একটা খবরও পাওয়া গেলো।’ এটা ভালো উদ্যোগ। মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলটি কোথায় কোথায় ঘুরলেন, কী কী দেখলেন এবং সেগুলোর মধ্যে আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভে কী কী উন্নয়ন করা যাবে- এমন একটা প্রতিবেদন তো হতেই পারে!

এ আগ্রহ নিয়েই যখন নিজেদের পরিচয় দিয়ে, তাদের সফর নিয়ে কথা বলতে চাইলাম, তখন তারা কেন যেন মোড়ামুড়ি শুরু করলেন। আমাদের সঙ্গে তাদের কথা বলার অনাগ্রহও তৈরি হয়ে গেলো সঙ্গে সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় ধীরে ধীরে হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলেন।

সাংবাদিক জানার আগেই অবশ্য স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ছবিতে পোজও দিয়েছিলেন সচিব মহোদয়; কিন্তু সাংবাদিক জানার পর হাঁটার গতি এমন বাড়িয়ে দিলেন, যা এক সময় দৌড়ের পর্যায়ই চলে গেলো। পেছন থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেও থামানো গেলো না। একটু সামনেই পার্ক করা ছিল তাদের বহনকরা গাড়িটি। সেই গাড়িতে উঠেই চলে গেলেন। সাংবাদিক জানার পর ওভাবে কেটে পড়ার রহস্য বোঝাই গেল না।

প্রতিনিধি দলের অন্য ৮ জন হলেন- প্লানিং কমিশনের সদস্য জুয়েনা আজিজ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ তৃতীয় ফেসের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর মো. মাইনুল হক আনসারী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জহুরুল হক, মতিয়ার রহমান, উপ-প্রধান ইউনুস মিয়া, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান, স্থাপত্য বিভাগের উপ-প্রধান স্থপতি মোহাম্মদ আসিফুর রহমান ভূঁইয়া, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের উপ-পরিচালক ফাতিমা-তুজ-জোহরা ঠাকুর।

৬ জুন তাদের এ সরকারি আদেশে (জিও) যুগ্ম সচিব দিলিপ কুমার বনিকের স্ত্রী জয়া বনিক এবং কন্যা অনন্যা বনিককে নিজ খরচে তার সফরসঙ্গী করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। যুগ্ম সচিবের ছেলে নাকি লন্ডন থাকে। সেখান থেকেই তাদের সঙ্গে রাশিয়ায় যোগ দিয়েছিল।


সূত্র: জাগো নিউজ