প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল, ২০১৭ ১১:০১:৩১
এক প্লেট মুড়ি মাখানোর দাম পাঁচ শ টাকা। অবাক হচ্ছেন? যেখানে পাঁচ টাকায় মেলে মুড়ি সেখানে পাঁচশ টাকা কেমন করে বা কি আছে সেই মুড়িতে? এমন প্রশ্ন সবার মনে জাগতেই পারে।এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে। ডিজিএফআইএর প্রধান কার্যালয়ের ঠিক উল্টোপাশের রাস্তায়, হাইটেক হসপিটালের সামনে দাঁড়ালেই চোখে পড়বে আব্দুল মজিদের মুড়ির দোকান। দেখতে পাবেন চেয়ারে বসে ও লাইনে দাঁড়িয়ে আছে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।মুড়ি মাখানোর মেন্যু যে এতো বিচিত্র হতে পারে সেটা দোকানের গায়ে দামের ফিরিস্তি না দেখলে বুঝবেন না। অন্তত ২৭ প্রকারের মুড়ি পাওয়া যায় এখানে।
১৫ টাকা থেকে শুরু আর শেষ ৫০০ টাকায় গিয়ে শেষ। কত যে তার বাহার! পাঁচ কালার মুড়ির পাঁচ রকম টেস্ট। ওটার দামই ৫০০ টাকা প্লেট। দেওয়া হয় আস্ত কোয়েল পাখি, কোয়েলের ডিম, চিংড়ি, গরু ও মুরগির কলিজাসহ বিভিন্ন উপকরণ। এছাড়া হরেক রকম উপকরণের মুড়ি তো রয়েছেই।এই খানদানি মুড়িমাখার দোকানটির মালিক আব্দুল মজিদ। ভিষন আন্তরিক তিনি তার খদ্দেরদের নিয়ে। পরিচিত কিংবা নতুন কোন ক্রেতা দোকানে আসলে প্রথমে তাকে খেজুর দিয়ে আপ্যায়ন করেন আব্দুল মজিদ।জানালেন, ১৯৯৮ সালে কাজের খোঁজে জামালপুর থেকে আসেন রাজধানী ঢাকায়। প্রথমে শুরু করেন হোটেল বয়ের কাজ। সেখানে বেশিদিন কাজ করা হয়নি কারণ বেতন একেবারেই অল্প।
সেই টাকায় সংসার চলতো না একদমই। পরে নিজেই কিছু একটা করবেন ভেবে শুরু করেন ফুটপাতে মুড়ি বিক্রি। মিরপুর, মতিঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে মুড়িমাখা বেঁচতেন তিনি। ব্যবসা একটু দাঁড়িয়ে গেলো। তখন মিরপুর ১২ নম্বরে একটা ভ্যানগাড়ি নিয়ে স্থায়ী ভাবে ব্যবসা শুরু করেন আব্দুল মজিদ। সেখানেই, একই জায়গায় ভ্যান ফেলে দীর্ঘ সাত বছর ব্যবসা করছেন তিনি। তবে এই সামান্য মুড়ি মাখানোর রেসিপির পেছনেই দিয়েছেন প্রচুর মেধা আর শ্রম। খেঁটেছেন নিজেও, খাঁটিয়েছেন মাথা। একের পর এক নতুনত্ব নিয়ে এনেছেন মুড়ি মাখানোর কায়দা-কানুনের মধ্যে। আর সেটার বলেই অল্প সময়ে পেয়ে গেছেন ব্যাপক পরিচিতি।
শুরু করার বছর কয়েকের ব্যবধানে ব্যবসা আরো ভালো হয় তার। শেষে আট মাস আগে আব্দুল মজিদ ফুটপাত ছেড়ে স্থায়ী দোকান দেন মিরপুর-১২ তে হাইটেক হাসপাতালে আগে রাস্তার পাশের একটি মার্কেটে। জাকিয়ে ব্যবসা করছেন তিনি এখন।আব্দুল মজিদ জানান, প্রতিদিন সাড়ে চারশোর মতো ক্রেতা সামলাতে হয় তাকে। শুক্রবার সহ বিভিন্ন অছিলায় আরো বাড়ে ক্রেতার সংখ্যা। ভোর থেকে মুড়ির বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করার পর তিনি দোকান খোলেন ১১ টার দিকে। চলে রাত সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ক্রেতা সামলাতে এরই মধ্যে দোকানে নিয়োগ দিয়েছেন তিনজন কর্মচারি। প্রতিদিন দশ-পনেরো হাজার টাকার বেশি মুড়ি মাখানো বিক্রি করেন এই বিক্রেতা।দোকানে সব সময়ই মানুষের আনাগোনা।
দোকানের বাইরেও ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মত। ক্রেতারা অর্ডার করছেন আর মজিদ মুড়ি মাখাচ্ছেন বিভিন্ন পাত্রে রাখা মশলা দিয়ে।পরিবারের জন্য পার্সেল নিতে আসা পুলিশের এক কর্মকর্তা বললেন, ‘এই দোকানের মুড়ি মাখানো খুবই প্রিয় আমার পরিবারের সদস্যদের। কারণ মানটা অনেক ভালো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আর মুড়ি তো ব্যাপার না মুড়ি মাখানোর জন্য উনি (মজিদ) যে উপকরণ দেন যেমন মাছ, ডিম, আলুসহ বিভিন্ন জিনিস সেটাই মুড়িটার অন্যরকম টেস্ট আনে।বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবির শিক্ষার্থী রুম্মন এসেছেন তার ক্যাম্পাসের সাত আট জনকে নিয়ে। কেন এসেছেন এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ফেসবুকে শুনেছি তার মুড়ির গল্প।
দুই রকম মুড়ি মাখানো খেয়েছি খুবই চমৎকার যা না খেলে বোঝা যাবে না। কারণ ফেসবুকে বা বন্ধুদের মুখে গল্প যা শুনেছিলাম আজ তার স্বাদ পেলাম।সাব্বির নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থেক এসেছি মুড়ি মাখানো খেতে। প্রায় আসি এখানে বন্ধুদের সাথে। কারণ ঢাকায় এমন ব্যতিক্রম খাবার আমি এর আগে খাইনি।মুড়িকে এতো মুখরোচক কীভাবে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মজিদ বলেন, ‘গরুর মাংস রান্না করতে কি লাগে সবাই জানেন। কিন্তু সেটার ঘ্রাণ সুন্দর করার কৌশলটা সবাই জানে না। আমি নিজেও তো একদিনে এমন সুস্বাদু করতে পারিনি। দিনে দিনে হয়েছে। তবে গরু, মুরগি, কোয়েল পাখি বা ডিম রান্নার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের গরম মশলা ব্যবহার করি।
তার মধ্যে দেশি বিদেশি মশলা রয়েছে।ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে আব্দুল মজিদ বলেন, ‘এবারের রমজানে মেনু আরো বাড়বে। সংযোজন হবে নতুন আরো পদের।আব্দুল মজিদের দোকানের মেন্যুতে পাবেন ঝালমুড়ির নানা পদ। যেমন- শুধু ঝালমুড়ি ১৫ টাকা, ছোলা মুড়ি ও শুধু ছোলা ২০ টাকা, টিকা কাবাব ও ঝালমুড়ি ২০ টাকা, মিউজিক মচমচে ঝালমুড়ি ৩০ টাকা, টক ঝাল মুড়ি ও মিষ্টি ঝাল মুড়ি ৩০ টাকা, সস-ঝাল মুড়ি ৩০ টাকা, বিফ চপ-ঝাল মুড়ি ৩০ টাকা, ডিম ঝাল মুড়ি ৩০ টাকা, কালিজিরা ঝাল মুড়ি ৩০ টাকা, কাঠি কাবাব ৩৫ টাকা, কোয়েল পাখির ডিম ও ছোলার ঝাল মুড়ি ৪০ টাকা, চিকেন ঝাল মুড়ি ৫০ টাকা, গিলা কলিজার ঝাল মুড়ি ৬০ টাকা, চিকেন ছোলা মুড়ি ৮০ টাকা, মাছের মুড়ি ১০০ টাকা, গরুর ঝাল মুড়ি ১০০ টাকা, বিফ ছোলা মাখানো মুড়ি ১০০ টাকা, কোয়েল পাখির ঝাল মুড়ি ১০০ টাকা, গিলা ঝালমুড়ি ১২০ টাকা, মাছ ঝাল মুড়ি ২০০ টাকা, বিফ ঝাল মুড়ি ২৫০ টাকা ও পাচ কালার মুড়ি পাচ রকম টেস্ট ঝালমুড়ি ৫০০ টাকা প্রতি প্লেট।
প্রজন্মনিউজ২৪/রাফসান
৫০০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ৭০০ টাকায় বিক্রি
নওগাঁয় শিক্ষকের দু'পায়ের রগ কেটে দিলো দুর্বৃত্তরা
ভিসা নীতিতে কিছু যায় আসে না: শমশের মবিন
বাগেরহাটে জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা ব্যারিয়ার সরানোর ঘোষণা ফিলিপাইনের
গ্রহাণু থেকে সবচেয়ে বড় নমুনা নিয়ে ফিরল নাসার ক্যাপসুল
হাইকোর্টের নির্দেশ: অ্যাটক থেকে আদিয়ালায় যাচ্ছেন ইমরান
শুনেছি আমাকেও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে: রাঙ্গা
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once