বিবাড়িয়ায় আতঙ্ক বাড়াছে গ্যাং কালচার

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারী, ২০২০ ১২:৫৪:০৬

বিবাড়িয়ায় আতঙ্ক বাড়াছে গ্যাং কালচার

দিনের পর দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। একই সাথে কিশোর অপরাধীর সংখ্যাও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। তাদের সৃষ্ট গ্রুপগুলোর মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার, মারামারি, চুরি, ছিনতাই ও যৌন নিপীড়নসহ নানারকম অপরাধে জড়াচ্ছে।

জেলায় কোনো কিশোর সংশোধনাগার না থাকায় বাধ্য হয়েই অনেক অপরাধীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে পুলিশ। কিছু অপরাধীকে মামলায় চালান দিয়ে আদালতে পাঠানো হলেও বয়স বিবেচনায় জামিন পেয়ে আবারও অপরাধে জড়াচ্ছে।

জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, বাসা-বাড়িতে চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্ত কিশোর অপরাধীরা। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে মাদক কারবারিরা কিশোরদের ব্যবহার করছে। আর টাকার লোভে কিশোররাও মাদক কারবারিদের ফাঁদে পা দিয়ে অপরাধে জড়াচ্ছে। ধীরে ধীরে এসব কিশোরদের কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছে মাদক কারবারেও।

জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় কিশোর অপরাধীর সংখ্যা দিন-দিন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করেও অনেক কিশোর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শহরের পাড়া-মহল্লার বাসা-বাড়িতে চুরি, ছিনতাই ও ইভটিজিংসহ নানা অপরাধের দায়ে প্রায়ই এসব কিশোর অপরাধীদের আটক করে পুলিশ। পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও অপরাধ করে বেড়ায় তারা। এতে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কিশোর অপরাধীদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস বলেন, কোনো কিশোরের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা থাকলে আদালতের নির্দেশে তাকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আমাদের শিশু পরিবারগুলোতে সরকারি খরচে এতিম শিশুদের লালন-পালন করা হয়। সেখানে কোনো কিশোর অপরাধীকে আমরা রাখতে পারি না। দুই-তিন দিনের জন্য রাখতে হলে তাদের জন্য চট্টগ্রামে আমাদের সেফ হোম রয়েছে।

রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করে অপরাধে জড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সুজন দত্ত বলেন, কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না বলেই অপরাধ এবং অপরাধীর সংখ্যা বাড়ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকেই কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, অপরাধ জগৎ থেকে কিশোরদের ফিরিয়ে আনতে তাদের পরিবারকেই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, আইন দিয়ে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কী কারণে কিশোররা অপরাধে জড়াচ্ছে সেটি আগে খতিয়ে দেখতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় পারিবারিক বঞ্চনা, নিম্ন আর্থ-সামজিক ব্যবস্থা এবং সঙ্গ দোষে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তারা। বাবা-মাসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কিশোর অপরাধ দমন সম্ভব নয়।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ