সৌন্দর্য বর্ধনে ওড়না নিষিদ্ধ হলো মতিঝিল আইডিয়ালে

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী, ২০২০ ০৬:৩৪:৪৮ || পরিবর্তিত: ১৪ জানুয়ারী, ২০২০ ০৬:৩৪:৪৮

সৌন্দর্য বর্ধনে ওড়না নিষিদ্ধ হলো মতিঝিল আইডিয়ালে

মেয়েদের ওড়না পরা নিষিদ্ধ করেছে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ছেলেদের ড্রেস কোডে কোনো পরিবর্তন না আনা হলেও এখন থেকে সাদা টুপি না পরলেও চলবে বলে জানিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছেলেদের ড্রেস কোড হচ্ছে সাদা শার্ট, নেভিব্লু প্যান্ট, সাদা টুপি ও সাদা জুতা। ছেলেদের ড্রেস কোডে তেমন পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে দীর্ঘদিন থেকে টুপি পরার নিয়ম থাকলেও তা শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে না পরলেও চলবে বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে এবং মেয়েদের ড্রেস কোড ছিল নেভিব্লু ফ্রক, সাদা পায়জামা, বড় ওড়না, ক্রস বেল্ট তার ওপরে ওড়না এবং জুতা।

বর্তমানে মেয়েদের ড্রেস হিসেবে নেভিব্লু ফ্রক, দুপাশে ফাঁড়া কামিজ, সাদা ক্রসবেল্ট ও জুতা পরতে বলা হয়েছে। বাড়তি ওড়না পরতে নিষেধ করা হয়েছে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ব্রাঞ্চে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম বলছেন, মেয়েদের ড্রেস কোডের বাইরে বাড়তি ওড়না পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মেয়েদের ড্রেসের সৌন্দর্য বাড়াতে বাড়তি ওড়না নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

স্কুল অ্যান্ড কলেজটির এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে অভিভাবকরা জানান, প্রতিষ্ঠানের এমন নির্দেশনার পর নিরাপত্তাকর্মীরা যেসব মেয়ে ওড়না পরে স্কুলে এসেছে তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। অনেকে গেট থেকে ব্যাগে করে ওড়না নিয়ে স্কুলে ঢোকার পর ক্লাসে গিয়ে তা পরলেও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক শিক্ষকরা ক্লাসে গিয়ে এ অপরাধের জন্য মেয়েদের বকাঝকা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বলেন, মেয়েদের ড্রেসের মধ্যে সৌন্দর্য বাড়াতে বাড়তি ওড়না নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গভর্নিং বডির সদস্যরা। গত বছর মাঝামাঝি গভর্নিং বডির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ড্রেস কোডে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার একটা ঐতিহ্য ছিল। শিক্ষার্থীদের ড্রেসে ইসলামি মূল্যবোধ মেনে চলা হতো। আইডিয়ালের সভাপতির মেয়ে ভিকারুননিসায় পড়ে, তাই তার মতো ড্রেস এখানে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ অভিভাবকরা এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। এটি ধর্মীয় অনুশাসনের ওপর চরম আঘাত করা হয়েছে। আমরা সকল অভিভাবক মিলে আলোচনা করে এর প্রতিবাদ কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও জানান।

এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা হিসেবে অধ্যক্ষ বলেন, স্কুল ড্রেসের সঙ্গে অনেক মেয়েরা বাড়তি ওড়না পরলেও তা গলায় ঝুঁলিয়ে রাখে, ঠিকভাবে তা পরছে না। অনেকের এই ওড়না ময়লা হয়ে গেলেও তা পরিষ্কার না করেও ব্যবহার করছে। ময়লা ওড়নার কারণে তাকে দেখতে খারাপ দেখায়। এটি নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেছেন। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মেয়েদের ড্রেসের সঙ্গে সংযুক্ত ওড়না রয়েছে, কেউ বাড়তি পর্দা করতে চাইলে ড্রেসের ওপরে হিজাব পরতে বলা হয়েছে অথবা বড় ওড়নাকে হিজাব আকারে পরতে বলা হয়েছে। কিছু মানুষ এ সিদ্ধান্তকে অন্যভাবে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের ড্রেসের সঙ্গে ওড়না পরা যাবে না বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে গুজব ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ।

প্রজন্মনিউজ২৪/ সজীব

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ