দুই সিটির ভোটের তারিখ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী, ২০২০ ১১:২০:৩৯

দুই সিটির ভোটের তারিখ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ বদলাবে নাকি আগের নির্ধারণ করা দিনই ঠিক থাকবে সেই প্রশ্নে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত জানা যাবে আজ। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সরস্বতী পূজার শেষ দিন ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনের ভোটের তারিখ পেছানোর জন্য এক রিট আবেদনের শুনানি করে বিষয়টি আদেশের জন্য রাখেন একই বেঞ্চ।

সোমবার আদালতে রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট অশোক কুমার ঘোষ নিজেই শুনানি করেন। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন তৌহিদুল হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।

৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে তারিখ অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।

কিন্তু ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা থাকায় ভোটের তারিখ পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে এক রিট আবেদন করেছেন আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ।

শুনানিতে সরস্বতী পূজার ছুটি কবে- তা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন আদালত। কিন্তু ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক বিভ্রান্তিকর কথা বলায় তাকে তিরস্কার করা হয়।

তৌহিদুল হক শুনানিতে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রাতষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় সব আচার-অনুষ্ঠান যথাযথভাবে দেখে কমিশন ভোটের দিন ঠিক করে। ঢাকা সিটির জন্য যে ভোটের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে, তা আগানো বা পেছানো ঠিক হবে না।

আদালতে রিটকারী আইনজীবীর অশোক কুমার ঘোষ বলেন, সংবিধানের ৮, ১২, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিককে ধর্ম পালনের যে মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনের ঘোষিত তারিখ সংবিধানের এই অনুচ্ছেদগুলোর সাথে ‘সাংঘর্ষিক’।

৩০ জানুয়ারি ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ২৯ জানুয়ারি দিনের দ্বিতীয় ভাগ থেকে ৩০ জানুয়ারি আধাবেলা সরস্বতী পূজা, যে পূজাটি দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়ে থাকে। ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন হলে তার কয়েক দিন আগেই ভোটের কার্যক্রম শুরু হবে। পূজা পালনে বিঘ্ন ঘটবে বা পূজার আচার-আনুষ্ঠানিকতা বাধাগ্রস্ত হবে।

এর আগে করা রিট আবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ মুসলিম দেশ নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক দেশ। ফলে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতেই ৩০ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করা হোক।’

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঘোষিত তারিখ ৩০ জানুয়ারি কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে রুলও চাওয়া হয় রিটে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে রিটে বিবাদী করা হয়।

এর আগে পূজা উদযাপন পরিষদও সরস্বতী পূজার বিষয়টি তুলে ধরে ভোটের দিন পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিল ইসির কাছে। তারপর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদও একই অনুরোধ করে। নির্বাচনের তারিখ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মানববন্ধন হয়।

দেশের সর্ববৃহৎ পূজামণ্ডপ রামকৃষ্ণ মিশন ও ঢাকায় স্বরস্বতী পূজার মূল কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পড়েছে। এখানে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র পড়েছে, যেখানে প্রতিবছরই সরস্বতী পূজার আয়োজন হয়।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ