তোমাকে আটকে রেখে ওরা একটা লাশ চেয়েছিল: ঢাবি ভিসি

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০১:১৪:১৪

তোমাকে আটকে রেখে ওরা একটা লাশ চেয়েছিল: ঢাবি ভিসি

বেশ উত্তপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘটনা প্রবাহের ধারবাহিকতায় । ক্ষমতাশীল ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ -এর মধ্যে একাধিকবার মারামারি ও ঘটনা পরম্পরায় সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল বারবার। কিন্তু গতকাল যা হলো সেটা সত্যিই অবাক করেছে   ।

‘আমি জেনেছি– সুপরিকল্পিতভাবে বড় আকারের একটা ঘটনা ঘটানোর প্রয়াস ছিল। আমি কিছু ছবি দেখলাম, বহিরাগত– ওরা কারা? তোমাকে আটকে রেখে একটা লাশ চেয়েছিল বোধহয়। তুমি বোধহয় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যাচ্ছ।’

কথাগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (ডাকস) ভিপি নুরুল হক নুরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে তাকে এসব কথা বলেন ভিসি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরকে রোববার রাতে দেখতে যান উপাচার্য আখতার ও প্রক্টর গোলাম রব্বানী। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।

ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তাদের পদত্যাগ করতে বলেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমাদের গুলি করেন স্যার। আমাদের মেরে ফেলেন। আমরা কিছু করব না।’ পরে হাসপাতাল থেকে চলে আসেন এ দুই শিক্ষক।

নুরকে দেখে হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় উপাচার্য ও প্রক্টরকে ‘ভারতের দালাল’ ও ‘নির্লজ্জ’ বলে গালি দেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা বলেন, আপনারা শিক্ষকতার সম্মানকে ধূলিসাৎ করেছেন। আপনারা সরকারের ও ছাত্রলীগের পক্ষে আর কত দালালি করবেন। দায়িত্ব না নিতে পারলে পদ ছেড়ে দিন।

অপর এক শিক্ষার্থী চিৎকার করে বলেন, ‘নুর ভাইয়ের কক্ষে দরজা লাগানো ছিল। সাদ্দাম ভাই আর সঞ্জিত ভাই সেটি খুলেছে, কাঁচিগেটটা খোলার পরই মারধর হয়েছে। ওরা মারা এনশিওর (নিশ্চিত) করে তার পর বের হয়েছে স্যার। ওরা ভাবছে, নুর মরে গেছে, তার পর সেখান থেকে গেছে।’

এক ছাত্র প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ভিসিকে বলেন, ‘স্যার (প্রক্টর) আমার অভিভাবক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। উনি আমাকে রক্ষা করবেন। উনি আমার বাবার বয়সী। উনি আমাকে বলেছেন, তোমাকে বহিষ্কার করব। পুলিশে দেব। আমার বুকটা ফেটে গেছে।’

ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন সিফাত বলেন, ডাকসু ভিপি নুরসহ অন্যদের ওপর হামলার সময় আমি প্রক্টর স্যারের কাছে বিচারের দাবি নিয়ে গেলে তিনি আমাকে বলেন, ‘তুমি বেশি নেতা হয়ে যাচ্ছ। তোমাকে বহিষ্কার করব।’

আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী, তিনি আমাকে রক্ষা না করে উল্টো বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন, পুলিশে দেয়ার কথা বলেছেন। একজন শিক্ষক ও দায়িত্বশীল হিসেবে তিনি এটি করতে পারেন না।’

এ সময় কয়েকজন ছাত্র বলেন, ‘স্যার দায়িত্ব পালন করতে না পারলে আপনি পদত্যাগ করেন। যদি মনে করেন, আপনি পারবেন না, তা হলে পদত্যাগ করেন। আমাদের গুলি করেন স্যার। আমাদের মেরে ফেলেন। আমরা কিছু করব না।’

তোপের মুখে উপাচার্য ও প্রক্টর হাসপাতালের কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে থাকলে বিক্ষুব্ধরা নানা স্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সমস্বরে বলে ওঠেন, ‘আমরা আপনাদের চাই না। যদি মনে হয়, আপনারা এর বিচার করতে পারবেন না, দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তা হলে পদত্যাগ করুন।’

প্রসঙ্গত রোববার ডাকসুতে ভিপি নুরের কক্ষে ঢুকে লাইট নিভিয়ে তাকে ও তার সঙ্গীদের বেধড়ক মারধর করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ভিপি নুরসহ আহতদের দাবি– ছাত্রলীগও এ হামলায় সরাসরি জড়িত। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ফারাবীর অবস্থা সংকটাপন্ন।

প্রজন্মনিউজ২৪/আ.ম.

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ