নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল এমপি

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৩:৫৬:২৭

নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল এমপি

ভারতের বিতর্কিত ও মুসলিম বিরোধী নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) দেশটির পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে পাস হওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সম্মতি পেয়ে তা আইনে পরিণত হয়েছে। আইনটির সাংবিধানিক ভিত্তি চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি মহুয়া মৈত্র।তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র আইনটিকে ভারতীয় সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দেশের শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শুক্রবার মামলাটি করার পর তিনি মামলার জরুরি শুনানির আবেদন করলেও শীর্ষ আদালত অবশ্য তাতে সম্মতি দেয়নি।মহুয়ার আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টকে আজ শুক্রবার কিংবা আগামী ১৬ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করার আবেদন জানান। তবে সূত্রের বরাতে এনডিটিভি বলছে, তৃণমূল সাংসদের মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হলেও জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

নতুন এই আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশী পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যেসব অ-মুসলিম ভারতে এসেছেন, তাদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে ভাবা হবে না, বরং তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হবে। বিলটি সোমবার লোকসভায় এবং বুধবার রাজ্যসভায় পাস হয়।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার অবশ্য আইনটির পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী এই আইনের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ‘ধর্মীয় নির্যাতনের’ শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত করা হবে। এতে মুসলিমদের শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বিলটির প্রতিবাদে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা ও মণিপুরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছে। পাশ্ববর্তী রাজ্য মেঘালয়ের কিছু অংশেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং যেকোনো মুহূর্তে বিক্ষোভ মোকাবিলার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

এর আগে গত বুধবার তিন রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় সেনা মোতায়েন করাও হয়।বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্য আসামের বিক্ষোভকারীদের দাবি, আইনটির মাধ্যমে অন্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা সহজেই এ দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন, আর সংকটে পড়বেন এ দেশের আদি বাসিন্দারা। তবে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, আইনটিতে উত্তর-পূর্বের অনেকটা অংশই বাদ দেয়া হবে।

বিরোধী দলের এমপিরা পার্লামেন্টে মোদি সরকারের প্রস্তাবিত এই বিলটিতে আপত্তি জানালেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সরকারকে বিলটি পাসে কোনো বেগ পেতে হয়নি সরকারকে। বিরোধীরা বলছেন, নতুন আইনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিক সুরক্ষা না দেয়ার বিষয়টি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

 প্রজন্মনিউজ২৪/নাজিম উদ্দীন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ