বিক্ষোভে উত্তাল আসাম, সেনা মোতায়েন

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১২:৫২:১৬ || পরিবর্তিত: ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১২:৫২:১৬

বিক্ষোভে উত্তাল আসাম, সেনা মোতায়েন

ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে আসাম। গত কদিন ধরেই রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বুধবারও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সেখানকার পরিস্থিতি। বিলের প্রতিবাদে করা আন্দোলন যেন মুহূর্তে সহিংস রূপ পায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে মনে হচ্ছে যেন বারুদের গোলার ওপর অবস্থান করছে আসাম।

ইতিমধ্যেই রাজ্যটির চারটি অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকাজুড়ে টহল দিচ্ছে তারা। বিক্ষোভের মধ্যেই লোকসভার পর বুধবার রাজ্যসভাতেও পাস হয়েছে বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব বিল। সেখানে এ বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ১২৫টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯৯টি। নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর ধারাবাহিকভাবে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিলটি পাস হলে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে আন্দোলনকারীরা।

এর জেরেই শেষ পর্যন্ত আন্দোলন দমনে সেনা মোতায়েনে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। সেনা মোতায়েন নিয়ে সংবাদমাধ্যম পিটিআই-এর সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল পি খোঙ্গসাই। তিনি জানান, গুয়াহাটি শহরে দুই কলাম (এক কলামে থাকে ৭০ জন জওয়ান, যার নেতৃত্বে থাকেন এক বা দুইজন অফিসার) সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তারা এলাকায় টহল দিচ্ছে। তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড় ও জোড়হাট জেলাতেও টহল দিচ্ছে সেনারা।

আসামের বৃহত্তম শহর ও বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল গুয়াহাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। বহু জায়গায় বন্ধ করে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তেলির বাসভবন লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা পাথর নিক্ষেপ করে। মূলত এরপরই জোরদার করা হয় ডিব্রুগড়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ল

ক্ষ্মীনগর এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পাথর নিক্ষেপের পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা দুলিয়াজনে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। বিক্ষোভকারীরা যেভাবে রাস্তায় টায়ার আর গাছপালা ফেলে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে দাবানলের সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকে। ভারতের বিজেপি সরকার বলছে, এই নাগরিকত্ব বিল পাসের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত অমুসলিমদের আশ্রয়স্থল হবে ভারত।

তবে সমালোচকদের মতে, দেশটির মুসলমানদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতেই এ বিল আনা হয়েছে। বিলটিকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। বিতর্কিত ওই বিলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে বসবাসরত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটিকে মুসলিমদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

এইচআরডব্লিউ’র দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রধান মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, ‘ভারত সরকারের দাবি, নাগরিকত্ব আইনের লক্ষ্য হচ্ছে পাকিস্তানের আহমদিয়া এবং মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা। বিলে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলা হলেও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ধর্মীয় ভিত্তিতে বৈষম্য করা হয়েছে।’

এইচআরডব্লিউ বলছে, ভারত সরকার মুসলিমদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ আর বাকিদের ‘শরণার্থী’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। বিল উত্থাপনের পর বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘শরণার্থী ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এই বিল শরণার্থীদের জন্য।’ তার এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিল্লির অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে।

প্রজন্মনিউজ২৪/ মামুন

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত



ব্রেকিং নিউজ