প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১১:১৩:৪৩
নৌযানশ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশে নৌযান ধর্মঘট (কর্মবিরতি) চলে। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। যাত্রীবাহী নৌচলাচল বন্ধ থাকায় দিনভর দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ধর্মঘট আহ্বানের প্রায় ২৪ ঘণ্টার মাথায় গতকাল রাত ১১টায় তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।ধর্মঘটের মধ্যে মালিকপক্ষের চাপে কিছু লঞ্চ, ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এই পরিস্থিতিতে অনেক যাত্রী নৌযানের অভাবে সড়ক ও রেলপথ ব্যবহার করে। কিন্তু যেসব স্থানে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই, সেখানে যাত্রীরা বিপদে পড়ে।বেতন-ভাতা বাড়ানো ছাড়াও শ্রমিকদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে পেনশন, সার্ভিস বুক চালু, নৌপথে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি বন্ধ, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মেরিন আইনের সঠিক বাস্তবায়ন ও সব ধরনের শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা, সব নৌশ্রমিককে খাদ্য ভাতা দেওয়া, কর্মস্থল ও দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ ইত্যাদি। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম জানান, দেশের প্রায় ২০ হাজার নৌযানের দুই লাখ শ্রমিক এ কর্মবিরতি পালন করছেন।নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহারে করণীয় নিয়ে গতকাল বিকেলে লঞ্চমালিকদের সংগঠনের সঙ্গে শ্রম অধিদপ্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের (যা-প) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি বদিউজ্জামান, লঞ্চমালিক সমিতির সহসভাপতি শহীদ ভূঁইয়া অংশ নেন। বৈঠকে কয়েকজন শ্রমিকনেতা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আফসার হোসেন চৌধুরী রাত সাড়ে ১১টায় প্রথম আলোকে জানান, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আগামী মার্চের মধ্যে নৌশ্রমিকদের অন্যতম দাবি খাদ্য ভাতা মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া আন্তমন্ত্রণালয়ের আলোচনার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে অন্য দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।ধর্মঘট চললেও গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে চাঁদপুর, মুলাদী, শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ এলাকায় ২১টি লঞ্চ ছেড়ে যায়। তবে লঞ্চে যাত্রী কম ছিল বলে জানান নৌযান পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান।চাঁদপুরগামী বোগদাদিয়া-৭ লঞ্চের চালক মো. হাসমত হাওলাদার জানান, লঞ্চের মালিকেরা তাঁদের ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার আশ্বাসই শুধু দেন।
বাস্তবে কিছুই পূরণ হয় না। সদরঘাট টার্মিনালের ইজারাদার কোম্পানি নিউ ভিশন ইকো সিটির তত্ত্বাবধায়ক মো. ফিরোজ জানান, ধর্মঘটের কারণে অনেক শ্রমিক কাজ না পেয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন।লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় শনিবার সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর হয়ে মেহেন্দীগঞ্জ, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুরসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা বিপাকে পড়ে।
পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েন রোগী, নারী-শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। পরে অনেকেই বাড়ি ফিরে যায়। কোনো কোনো যাত্রী বিকল্প ট্রলার ও স্পিডবোটে করে গন্তব্যে যাত্রা করে।বরিশাল স্পিডবোট সমিতির লাইন সুপারভাইজার তারেক শাহ গতকাল সকালে জানান, নৌ ধর্মঘটের কারণে বরিশাল-ভোলা পথের যাত্রীদের চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে।স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, বরিশালের সঙ্গে সরাসরি যেসব উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ নেই, সেসব এলাকার সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপাকে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থান, বিশেষ করে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ ও হিজলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে অসংখ্য ট্রলার কীর্তনখোলা নদীর ডিসি ঘাট–সংলগ্ন তীরে যাত্রী নিয়ে আসতে দেখা যায়। আবার বরিশাল থেকেও বিভিন্ন স্থানে যাত্রী পরিবহন করছে এসব ছোট নৌযান।নৌ ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে লঞ্চঘাটগুলো। দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
গতকাল সকালে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে। কর্মবিরতির ফলে মোংলা বন্দরে মধ্যরাত থেকে সীমিত হয়ে পড়েছিল পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহনকাজ। এতে ভোগান্তি ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। শনিবার সকাল থেকে খুলনার কোনো রুটে নৌযান চলাচল করেনি। পটুয়াখালীতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে আসা লঞ্চগুলো টার্মিনালেই অবস্থান করছিল।
বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য আসা যাত্রীরা ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তির শিকার হওয়ায় ক্ষোভ জানান। চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, শরীয়তপুরসহ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
তবে ঢাকামুখী অনেক যাত্রীকে সড়কপথে ঢাকায় যেতে দেখা যায়। সিরাজগঞ্জে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর এলাকায় নৌযানশ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যা–প) সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন যে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে, সেটি অযৌক্তিক। নৌযানশ্রমিকদের তিন গুণ বেশি বেতন–ভাতা দেওয়া হচ্ছে।
কিছু স্বার্থান্বেষী নৌযান শ্রমিকনেতা ফায়দা হাসিলের জন্য অহেতুক ধর্মঘট ডেকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছেন। তিনি দাবি করেন, এ সংগঠনের ডাকে নৌযানশ্রমিকেরা সাড়া দেননি। সারা দেশে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে এবং নৌযানশ্রমিকেরা কাজ করছেন।
প্রজন্মনিউজ২৪/নাজিম উদ্দনি
পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা
বিশ্ব বই দিবসে নিজের কক্ষেই লাইব্রেরি গড়ে তুললেন রাবি শিক্ষার্থী আকরাম
পটুয়াখালীর বাউফলে হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ভোটার স্মার্ট কার্ড বিতরণ
ক্রিকেটার আরিফা জাহান বিথীর ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ
পদ্মায় গোসলে নেমে একসঙ্গে নিখোঁজ ৩ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার
আধুনিক ওয়ার্ড গঠনে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চান সোহেল
বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি
Severity: Notice
Message: Undefined index: category
Filename: blog/details.php
Line Number: 417
Backtrace:
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler
File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view
File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once