ভূমিদস্যুদের কবলে সরকারি বাঙলা কলেজ

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ১১:১৩:৩৫

ভূমিদস্যুদের কবলে সরকারি বাঙলা কলেজ

রাজধানীর মিরপুরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঐশ্বর্যময় ঐতিহ্যবাহী বাঙলা কলেজ হাঁটি হাঁটি পা পা করে যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৬২ সালে বাঙলা বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষে। কিন্তু আজ তা ভূমি দস্যুদের দখলে। বাঙলা কলেজ ২২.৫ একর জমির উপর প্রতিষ্টিত হলেও তা আর নেয়। জাল দলিল দেখিয়ে ডেভেলপার কোম্পানি। এবং কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ দখল করে আছেন।

৫ নভেম্বর গত মঈলবার বেলা ১২ টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে ভূমিদস্যুদের দখলকৃত জমিতে অবস্থান নেয়। এবং বাঙলা কলেজের পিছনে বরাদ্দকৃত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা হলের জায়গা ভূমি দস্যুরা দখলে নিয়েছিল। সেখানে ভূমিদস্যুরা ইটের দেয়াল দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করে ও তাদের বিলবোর্ড টাঙ্গিয়ে রাখে।এছাড়াও সেখানে বিভিন্ন অপকর্ম সংগঠিত হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা আন্দোলনরত অবস্থায়  দখলকৃত জমিতে দখলদারদের সাইনবোর্ড নামিয়ে প্রস্তাবিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। এবং দখলদারদের দেয়া দেয়াল ভেঙ্গে কলেজের সঙ্গে সংযোগ সড়ক তৈরি করে দেয়। এই বিষয়ে বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.ফেরদৌসী খান পপি বলেন এই জায়গা টা আমাদের এবং সেখানে কলেজের সাইনবোর্ড ও লাগানো ছিল।

কিছুদিন আগে আমরা কিছু চারা গাছ রোপণ করি কিন্তু ভূমি দস্যুরা গাছ গুলো কেটে ফেলে এবং আমাদের সাইনবোর্ড ও ভেঙ্গে তাদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ কিছু দিন উত্তেজনা বিরাজ করছিল কিন্তু আমি তাদের দমিয়ে রাখি। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা বলি।কিন্তু হঠাৎ করেই ৫ নভেম্বর  সাধারণ শিক্ষার্থীরা জমিতে আমাদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়।

এ খবর জানার পর আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনি। স্হানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গ এবং ডেভেলপার কোম্পানি ২০১২ সাল থেকেই এই জমি দখলের অপচেষ্টা চালায়।এবং পরবর্তীতে জাল দলিল বের করে তারা বাঙলা কলেজের জমি দখল করে। অন্যদিকে শিক্ষাগত অবকাঠামোর অভাব ভাষা আন্দোলনের প্রেরণায় বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন সময় গড়ে ওঠা এ কলেজের  সংকটাপন্ন করে তুলেছে।

ভূমি দস্যুরা বাঙলা কলেজের পিছনে একটি জায়গা দখল করে একটি ডেভেলপার কোম্পানি ১০ তলা ভবন নির্মাণ করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই ভবন উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাস করার দাবি জানিয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেছেন যেখানে আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীরাই ছাত্রাবাস সংকটে ভুগছে জমির অপ্রতুলতার কারণে ছাত্রাবাস নির্মাণ করা যাচ্ছে না। সেখানে কোন ভাবেই কোন ভূমি দস্যুকে কলেজের ১ ইঞ্চি জমি ও দখল করতে দেওয়া হবে না।

আন্দোলনের পরে কিছুদিন ভবন নির্মাণের  কাজ বন্ধ থাকলেও তা এখন চলছে তড়িৎ গতিতে। ভূমিদস্যুরা ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করেনি। ঐ খানে কর্মরত এক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি বলেন আমাদের কাজ খুব দ্রুত সম্ভব সমাপ্ত করবো। কর্মরত ম্যানেজার  এর সাথে কথা বলতে চায়লে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। সাবেক অধ্যাপক মোঃ ইমাম হোসেনের সময় থেকে ভূমিদস্যুরা কলেজের জমি দখলের অপচেষ্টা চালায়। কেউ কেউ জমির মালিকানা দাবি করায় মামলা মোকদ্দমা হয়।

পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসক জমি মেপে দেন। এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে এখানে দেয়াল নির্মাণ করা হবে বলে জানা যায়। ২০১২ সালে শিক্ষা মন্ত্রনালয় এ কলেজের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য প্রায় ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে।কিন্তু ভূমিদস্যুদের এবং কয়েক জন প্রভাবশালীদের টালবাহানায় কর্তৃপক্ষ তখন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে পারেনি। পরবর্তীতে কলেজের জমি দখলে নেয়।

বর্তমান অধ্যক্ষ ড. ফেরদৌসী খান পপি  বলেন আমরা যত দ্রুত সম্ভব মামলা করবো । উকিল ঠিক করার কাজ চলছে। উকিল ঠিক হলেই আমরা আমাদের জায়গা ফিরিয়ে আনার জন্য যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

প্রজন্মনিউজ২৪/ মকিবুল মিঞা

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ