আমরা চাচ্ছি বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতকে দিতে: পিডিবির চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর, ২০১৯ ১২:০২:০২

আমরা চাচ্ছি বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতকে দিতে: পিডিবির চেয়ারম্যান

পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদের কাছে বিদ্যুৎ রফতানির প্রসঙ্গ তুলে ধরলে তিনি বলেন, ‘ভারত তো আগে থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিচ্ছে। এবার আমরা চাচ্ছি আমাদের বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতকে দিতে। এজন্য দুই দেশের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে সম্ভাব্যতা দেখতে একটি কমিটি করা হয়েছে। তারা একটি রিপোর্ট দেবে, যা পরবর্তী মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে। সেখানেই এ বিষয়ে আবার আলোচনা হবে।’

প্রসঙ্গত, আগস্টের শেষ দিকে ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয় ঢাকায়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রফতানির প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও সেই প্রস্তাবে কোন পয়েন্ট থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রফতানি করা হবে এবং যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ রফতানির কথা বলা হচ্ছে সেখানে এর সংকট রয়েছে কিনা তা বৈঠকে উপস্থাপন করতে পারেনি বাংলাদেশ। এই প্রস্তাবে ভারত কোনও সাড়া দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কেবল প্রস্তাব দিয়েছি।

এখনও ভারত এ বিষয়ে হ্যাঁ বা না কিছু বলেনি। কিংবা গত এক মাসেও ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চাইলেই তো আর সম্ভব নয়। ভারতের সঙ্গে আমাদের সঞ্চালন ব্যবস্থা কতটুকু উপযুক্ত, তাও বিবেচনা করতে হবে। ওই বৈঠকের কার্যপত্রে (ওয়ার্ক অর্ডার) দেখা গেছে, শীতের সময় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। সে সময়ে উৎপাদিত বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতে রফতানি করতে চায় বাংলাদেশ।

ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতে রফতানি করতে পারবে। তবে তা তাদের বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানির গাইডলাইন অনুযায়ী হতে হবে। ভারতের গাইডলাইন ফর এক্সপোর্ট/ইমপোর্ট (ক্রস বর্ডার) অব ইলেকট্রিসিটি ২০১৮ এবং সিইআরসি রেগুলেশন অব ক্রসবর্ডার ট্রেড অনুযায়ী এই বিদ্যুৎ কিনতে পারে ভারত। তবে ভারতের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির বিষয়ে বাংলাদেশও আনুষ্ঠানিক কোনও প্রস্তাব তৈরি করতে পারেনি।

উল্টো পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করতে প্রস্তাব দিয়েছেন।  ত্রিপুরাও বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চায়। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ভারত এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে।  এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের চাহিদার সময় নয়, সবসময় বিদ্যুৎ দিচ্ছে ভারত।

ভালো হতো যদি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতো। একই নিয়ম করা যেতে পারে ভারতের ক্ষেত্রেও। ভারতের যেখানে বিদ্যুৎ প্রয়োজন বাংলাদেশ নিজেদের চাহিদা পূরণের পর বাড়তি বিদ্যুৎটুকু তাদের দিতেই পারে।’ তিনি বলেন, ‘এই বিদ্যুৎ বিনিময়ের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিকল্পনা। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে যেখানে যতটুকু বিদ্যুৎ দরকার ততটুকু নেবে। এতে দু’দেশই লাভবান হবে। ভারতের যে এলাকায় গ্যাস নাই সেখানে এখন এলপিজি রফতানি করবে বাংলাদেশ, ঠিক একই নিয়মে বিদ্যুৎও রফতানি করা যেতেই পারে।  তবে পরিকল্পনাহীনভাবে বিদ্যুৎ আনা-নেওয়ার মধ্যে কোনও দেশেরই উপকার হবে না। তাই বিষয়টি ভালোভাবে বিবেচনা করেই করা উচিত।’ 

প্রসঙ্গত, এখন ভারত থেকে মোট এক হাজার ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। কুমিল্লা ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা দিয়ে এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছে।

প্রজন্মনিউজ২৪/তারেক আজিজ

 

              

              

              

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ