মুজিববর্ষে নতুন উদ্যোগ: বেকারদের কর্মের সুযোগ

প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর, ২০১৯ ১২:৪৪:৪৮

মুজিববর্ষে নতুন উদ্যোগ: বেকারদের কর্মের সুযোগ

সরকারের সর্বশেষ হিসেব মতে এখনো ২৬ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর রয়ে গেছে। এসব নিরক্ষর মানুষ টেকসই উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বাধা। সরকার লক্ষ্য বাস্তবায়নে মুজিববর্ষের জন্য কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের একটি বিশাল অংশ সাক্ষরতার আওতায় আসবে। পাশাপাশি বেকারদের একটি বিশাল অংশ পাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সরকার মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের জুনের মধ্যে ২১ লাখ লোককে সাক্ষর করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এদের বয়সের আওতা হবে ১৫ থেকে ৪৫ বছর। তাদের শিক্ষা দানের জন্য ইতোমধ্যে শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে পড়াশোনা শেষ করে এখনো চাকরি করছেন না তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হবে। সাক্ষর করে তোলার পাশাপাশি ওই সকল লোককে মৎস চাষ, হাস মুরগী পালনসহ নানাবিধ শিক্ষা দেওয়া হবে। এর মেয়াদ হবে ছয় মাস। নভেম্বর নাগাদ এর পাঠদান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে শিক্ষকদের গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়া পাইলট প্রকল্প নামে আরো একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। সেটির আওতায় ইতোমধ্যে এক লাখ শিশুকে সাক্ষর করে তোলা হয়েছে। আরো ৯ লাখ শিশুকে সাক্ষর করে তোলা হবে। এদের বয়সসীমা হবে ৮ থেকে ১৫ বছর। এদের পাঠদানের জন্য শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জানুয়ারি নাগাদ এটি শুরু হতে পারে বলে রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক তপন কুমার ঘোষ।

তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন তাদের বেতন হবে ৫ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের জন্য এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আমরা সারাদেশে চাহিদা চেয়েছি। যেসব উপজেলায় আনন্দ স্কুল পরিচালিত হয় সেগুলো এর আওতায় আসবে না। এছাড়া যেসব উপজেলায় ঝড়ে পড়ার হার কম সেগুলোও আসবে না।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রত্যেক থানা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে এটি পরিচালিত হবে। এর মাধ্যমে একটি বিশাল অংশ যেমন সাক্ষরতার আওতায় আসবে তেমনি যারা পড়াশোনা করে এখনো কিছু করতে পারছেন না তাদের জন্য একটি কর্মের সুযোগও তৈরি হচ্ছে।

সরকারের সর্বশেষ হিসাব মতে দেশে এখনো প্রায় সাড়ে তিন কোটি লোক সাক্ষরতার আওতামুক্ত। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে এটি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ২৫০ উপজেলায় ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৪৫ লাখ নিরক্ষর মানুষকে মৌলিক সাক্ষরতা ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) গত মে মাসে এ প্রকল্পের ওপর এক নিবিড় পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রদান করে। এতে প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ৩৬ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং ২৬ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতির তথ্য জানানো হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্প থেকে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তাই ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। তাতেও তেমন সাফল্য না পেয়ে মুজিবর্ষে এ প্রকল্পের আওতায় নতুন পরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ