সফটওয়্যারে ৩৮ লাখ গার্মেন্টস কর্মীর তথ্য

প্রকাশিত: ৩০ অগাস্ট, ২০১৯ ১১:১২:৫৫

সফটওয়্যারে ৩৮ লাখ গার্মেন্টস কর্মীর তথ্য

দেশে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক  কারখানার কর্মী সংখ্যা প্রায় ৫৫ লাখ। এরমধ্যে ৩৮ লাখ কর্মীর একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। এই ডাটাবেজে রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মীর নাম, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর (এনআইডি), ছবি, আঙুলের ছাপ, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা,মোবাইলফোন নম্বর, কোন কারখানায় কী পদে চাকরি করেন, আগে কোথায় চাকরি করেছেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিশেষ দক্ষতা, দেশের কোন এলাকা থেকে এসেছেন ইত্যাদি তথ্য। ফলে এখন যেকোনও গার্মেন্টস কর্মী সম্পর্কে জানতে সরাসরি তার সাক্ষাৎকারের প্রয়োজন নেই। ডাটাবেজে লগইন ব্যক্তির সব তথ্য পাওয়া যাবে। এরইমধ্যে সফটওয়্যারটি অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক পুরস্কারও।

এই ডাটাবেজ সফটওয়্যার তৈরি করেছে এ দেশেরই একটি সফটওয়্যার ও সেবাপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসটেক ডিজিটাল। ‘বায়োমেট্রিক আইডেন্টিটি অ্যান্ড ওয়ার্কার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এমপ্লয়ী ডাটাবেজ’ নামের এই সফটওয়্যারটি বর্তমানে দেশের প্রায় ২ হাজার ৪০০ তৈরি পোশাক কারখানায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি তৈরিতে সহায়তা দিয়েছে টাইগার আইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের আগে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে প্রায়ই শ্রমিক অসন্তোষ হতো। ভাঙচুর, বিশৃঙ্খলা প্রায় লেগেই থাকতো। সৃষ্টি হতো অচলাবস্থা। সে সময় এই খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সঙ্গে গবেষণা করে ওই বছরই এই ডাটাবেজ সফটওয়্যার তৈরি শুরু করে সিসটেক ডিজিটাল। তাদের সঙ্গে ছিল টাইগার আইটি। এই ডাটাবেজে যুক্ত হয় তৈরি পোশাক কর্মীদের তথ্য। এরপর থেকে কোনও গার্মেন্টস কারখানায় বিশৃঙ্খলা বা শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে, ডাটাবেজ থেকে তা সহজেই  খুঁজে বের করা হয়।  জড়িতদের নামের পাশে ‘অপকর্ম’ যুক্ত করা হয়। ফলে সহজেই তাদের চিহ্নিত করতে পারছেন অন্যান্য কারখানার মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই প্রক্রিয়ায় গার্মেন্টস খাতের অযাচিত বিশৃঙ্খলা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বলা যায় এখাত এখন শান্ত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,প্রথমে ঢাকার আশুলিয়া এলাকার পোশাক কারখানাগুলোতে এই সফটওয়্যার চালু করা হয় । সংশ্লিষ্টদের গবেষণায় উঠে এসেছে— আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলো থেকেই শ্রমিক অসন্তোষের উদ্ভব হয়। ওই এলাকায় তখন ২৮৫টি কারখানা ছিল। ২০১১ সালে প্রাথমিকভাবে এখানকার কারখানাগুলোতে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার শুরু হয়। ২০১৩ সালের পরে সারাদেশের কারখানাগুলোতে তা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, শুধু যেসব কারখানা তৈরি পোশাক রফতানি করে, তাদের জন্য এই সফটওয়্যারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক  করা হয়েছে। সফটওয়্যারের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বিজিএমইএ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দিপু বলেন,‘প্রথম পর্যায়ে শ্রমিক মাইগ্রেশন (কোনও কিছু না জানিয়ে দল বেঁধে এক কারখানা থেকে শ্রমিকদের  অন্য কারখানায় যোগদান করা) রোধ করতে এই ডাটাবেজ ব্যবহার করা হয়। শ্রমিক মাইগ্রেশন ঠেকানো, অসন্তোষ দূর করা, চিহ্নিত শ্রমিকদের অপকর্ম সম্পর্কে তথ্য জানা— এই সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে সহজ হয়। এভাবেই সফটওয়্যারটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে।’

প্রজন্মনিউজ/দেলাওয়ার হোসাইন।

    

    

    

 

 

 

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ