মেট্রোরেলে বেড়েছে ভোগান্তি!

প্রকাশিত: ২৮ অগাস্ট, ২০১৯ ০৫:৩৫:৩৯

মেট্রোরেলে বেড়েছে ভোগান্তি!

রাজধানীর এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলো মেট্রোরেল। রাজধানীর ফার্মগেট থেকে শাহবাগ হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের  কাজ চলছে। যার কারণে ২২মিটারের রাস্তার মাঝের ১১মিটার টিনের বেরায় ঘেরাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।  শতাধিক রুটের বাস চলছে বিকল্প পথে।বাস চলাচলের সুবিধার্থে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ফুটপাত। একদিকে হেঁটে চলা দায়, অন্যদিকে বাস চলে ধীরগতিতে। ভাঙাচোরা সড়কে রিকশা নিয়েও চলা দায়।হাটার গতিতে চলছে বাস। যার ফলশ্রুতিতে ভোগান্তি আর তীব্র যানজট  রাজধানীবাসির নিত্যদিনের সঙ্গিতে পরিণত হয়েছে। ২০১২ সালে শুরু হওয়া এই মেগা প্রকল্পের কাজ অর্ধেক শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৭ বছরে বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৩৪.৫৮ শতাংশ।

সরকারি একটি জরিপে দেখা যায়, মেট্রোরেল নির্মাণের কারণে ১৫ মিনিটে এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে বাসসহ বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় কাটাতে হয় যাত্রীদের। ফলে ভোগান্তি বেড়েছে  আরো বহুগুণে।

কাওরানবাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ফারুক জানান, পুরো রাজধানীর যানজট এখন কাওরানবাজারমুখি। অর্থাৎ কাওরানবাজারের আশপাশে সবগুলো এলাকাতেই এখন দিনভর যানজট লেগে থাকে। বিকালে বসুন্ধরা সিটিতে গাড়ির ভিড়ের কথা উল্লেখ করে ওই ব্যবসায়ী বলেন, তখন কি যে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয় তা ভুক্তভোগিরাই জানেন। তার ভাষায়, কদিন পরে বিপদে না পড়লে আর কেউই এই এলাকায় আসবে না। কিন্তু ফারুকের মতো যারা না এসে পারবেন না তাদের জন্য ‘মহাবিপদ’। বললেন, কবে যে এই বিপদ থেকে রেহাই মিলবে কে জানে?

ফার্মগেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ শুরু হতে না হতেই যেভাবে যানজটের ভোগান্তি বাড়তে শুরু করেছে তাতে যাত্রী, বাস চালক ও বাস মালিক সবাই হতাশ। তাদের মতে, গত কয়েক দিনে রাজধানীতে দুর্ভোগ বেড়েছে ফার্মগেট, বাংলামোটর, শাহবাগ, খেজুরবাগান, তেজগাঁও, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্সল্যাবরেটরিসহ আশপাশের এলাকায়। বাসের রুট পরিবর্তন করায় যাত্রীদের ভোগান্তি যেমন বেড়েছে তেমনি বাসের রুটভিত্তিক যাত্রীও কমে গেছে বলে মালিকদের দাবি।কয়েকজন মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রুট পরিবর্তন হওয়ায় গন্তব্যের দূরত্ব বেড়ে গেছে। তাতে জ্বালানী খরচও বেড়েছে। মালিকপক্ষের দাবি, দূরত্ব বাড়াতে শ্রমিকদের খরচও দিতে হচ্ছে বেশি।

যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে ১৫টি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো, মেট্রোরেল প্রকল্প, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে মাঠপর্যায়ে সমন্বয় করা, যেসব এলাকায় সড়ক বেশি সরু হয়েছে সেখানে ফুটপাত কেটে ছোট করা, বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে ফেলা, ধুলাবালিতে পরিবেশদূষণ যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা, মেট্রোরেলের ভারী কাজগুলো সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে করানো। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট বা মোড়গুলোতে নজরদারি করা। এর পাশাপাশি বড় কোনো কাজের আগে গণমাধ্যমের সহায়তায় নগরবাসীকে অবহিত করা।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার  মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয়েছে।এতে ২৪ টি ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় আপ ও ডাউন রুটে ৬০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করবে।২০২৪ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে মিরপুর হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ হবে। এর মধ্যে ২০২০ সালের মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ট্রেন চলাচল চালু করার কথা। কিন্তু আইএমইডি বলছে, এই সময়ের মধ্যে মেট্রোরেল চালু করা চ্যালেঞ্জিং হবে।

প্রজন্মনিউজ২৪.কম

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ