একটি মটর চালিত হুইল চেয়ারই স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজছে

প্রকাশিত: ২১ অগাস্ট, ২০১৯ ০৩:৪৯:৩৯

একটি মটর চালিত হুইল চেয়ারই স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজছে

প্রীতিলতা সাহা জন্মগতভাবেই একজন প্রতিবন্ধী। নিজের পায়ে হাটতে পারে না। অন্যের সহযোগীতায় তাকে হাটতে হয়। বান্ধবীদের সহায়তায় প্রীতিলতা এখন নবম শ্রেণিতে পড়ে। এভাবে সে উচ্চ শিক্ষা শেষ করতে চায়।

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের সুজাতা সাহার মেয়ে প্রীতিলতা। এ গ্রামের স্বাবলম্বীএকটি ঝুপড়ি ঘরে মা-মেয়ের বসবাস। সে স্থানীয় মস্তবাপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

বাড়ি থেকে তার স্কুলে দুরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতে তার একটি মটর চালিত হুইল চেয়ারের দরকার প্রীতিলতার। কিন্তু সে সামর্থ নেই বিধবা মা সুজাতা সাহার।

২০০৯ সালে প্রীতিলতার বাবা প্রশান্ত সাহা মারা যান। এরপর থেকে অভাব তাদের নিত্য সঙ্গী। দিশেহারা মা সুজাতা সাহা ২০১১ সালে স্বামীর বাড়ি যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল সামনগর গ্রাম ছেড়ে বাবার বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চলে আসেন। এরপর থেকে একটি ঝুপড়ি ঘরে মা- মেয়ের বসবাস।

প্রীতিলতার নানার বাড়িতেও তেমন কোন জমাজমি নেই। তাই প্রীতিলতার এক চাচাত মামার জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘর তৈরী করে মাথা গোজার ঠাই করেন। কোন রকম অর্ধাহারে আর অনাহারে চলে তাদের সংসার। শত কষ্টের মাঝেও থেমে নেই প্রতিবন্ধী প্রীতিলতার লেখাপড়া।

প্রীতিলতা ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির পর তার নানা বাইসাইকেলে করে স্কুলে নিয়ে যাওয়া আসা করতো। নানা শষ্যাশায়ী হবার কারনে প্রীতিলতাকে পড়তে হয় মহাবিপদে। সেসময় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রীতিলতাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দুইটি হুইল চেয়ার ও জেলা পরিষদ থেকে একটি ব্যাটারী চালিত গাড়ি পায়।

 হুইল চেয়ার দুইটি এখন প্রায় অকেজো এবং ব্যাটারী চালিত গাড়িটি স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিব হোসেন নিয়ে অন্য আরেক প্রতিবন্ধীকে দেয় বলে প্রীতিলতার পরিবার জানায়। মা সুজাতা জানায় ঐ গাড়িটি থাকলে আজ মেয়েকে এতো কষ্ট করে স্কুলে যেতে হতো না।

প্রীতির বান্ধবী ইভা, জয়া, রুনা, সাদিয়াসহ আরো অনেকে জানায়,‘‘হুইল চেয়ার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাকে ওই চেয়ারে করে স্কুলে আনা-নেয়া করতে আমাদের বেশ কষ্ট হয়”।  তারা প্রীতিলতার জন্য সমাজের বিত্তবানদের নিকট একটি হুইল চেয়ার দাবী করছে।

প্রীতি জানায়,“বান্ধবীদের সহয়াতায় বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিনিয়ত স্কুলে যাই। হুইল চেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বান্ধবীদের বেশ কষ্ট হয়। তার পরও ওরা কষ্ট করে আমাকে স্কুলে নিয়ে আসে।

আমি ওদের প্রতি কৃতজ্ঞ। উচ্চ শিক্ষা শেষ করে স্বাবলম্বী হতে চাই। প্রীতিলতার মা সুজাতা সাহা জানান, তার দুই মেয়ে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। অভাবের সংসারে এখন ছোট মেয়ে প্রীতিলতাকে নিয়েই তার স্বপ্ন। প্রীতিলতা পড়াশুনায় অনেক ভালো।

স্কুলের স্যাররা প্রীতিলতাকে সহযোগীতা করেন। স্কুলে যাওয়া আসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে একটি মটর চালিত হুইল চেয়ারের দাবি করেন প্রীতিলতার মা সুজাতা সাহা। সহযোগিতা পেলে আমার মেয়ে প্রীতিলতা অনেক

ভালো কিছু করতে পারবে বলে স্বপ্ন দেখেন এই মা।

প্রীতিলতা জানান, সে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চাই। সারা জীবন তাকে যেনো মানুষের করুনার পাত্র হয়ে বেঁচে থাকতে না হয়। এ জন্য আমি শত প্রতিকুলতার মধ্যেও জীবন সংগ্রামে নেমেছি। সবার সহযোগীতা পেলে সফল হব বলে আশা প্রকাশ করে এই শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রীতিলতা সাহা।

প্রজন্মনিউজ২৪/রেজাউল

এ সম্পর্কিত খবর

শরীয়তপুরের জাজিরায় হাতবোমার বিস্ফোরণে আহত:৪

যেই ৩ আমলে সহজেই হবে বিয়ে

পরিমাপে কম দেওয়ায় মহাখালীর ইউরেকা এন্টারপ্রাইজ ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা

পঞ্চগড়ে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন'২৪

সিংড়ায় মসজিদের অর্থ আত্মসাৎ ও মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা

ছয় দিনের সরকারি সফরে আজ বুধবার থাইল্যান্ড গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গাজার অর্ধেক জনসংখ্যা ‘অনাহারে’ : জাতিসঙ্ঘ

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলের ভেতর গভীরতম হামলা হিজবুল্লাহর

বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিতে রাবিতে 'মলাট' চালু

ফরিদপুরে দুই শ্রমিক হত্যার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত কমিটি

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ