মুগ্ধতায় কেটে গেল সাকিবের ১৩ বছর

প্রকাশিত: ০৬ অগাস্ট, ২০১৯ ১২:০৭:২৯

মুগ্ধতায় কেটে গেল সাকিবের ১৩ বছর

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০০৬ সালের আজকের তারিখ অর্থাৎ ৬ আগস্ট, প্রতিপক্ষ ছিলো জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের ৮২তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন ১৯ বছর বয়সী লিকলিকে এক তরুণ। যিনি আজ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

১৩ বছর আগের সে ম্যাচে টিম টাইগার্স পেয়েছিল আট উইকেটের বড় জয়। বল হাতে ১০ ওভারে ৩৯ রান খরচায় এলটন চিগুম্বুরার উইকেট এবং ব্যাট হাতে ৪৯ বলে ৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে নিজের আগমনী বার্তাটা ভালোভাবেই দেন সাকিব আল হাসান।

সেই যে শুরু! তারপর থেকে চলতে তো চলছেই। ব্যাট আর বল ছাড়াও তিনি মেতে উঠেছেন রেকর্ড নিয়ে ছেলেখেলায়। আর তাই তো তাকে 'রেকর্ড আল হাসান' নামে ডাকতেও ভালোভাসে ভক্ত-সমর্থকরা।

অভিষেকের পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে সাকিব আর বাংলাদেশের ক্রিকেট হয়ে উঠেছে একে অপরের সমার্থক। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ব্যাটে বলে পারফর্ম করে যাওয়া কোন ক্লান্তি ছাড়াই। ভেন্যু বদলেছে, বদলেছে দেশ কিন্তু ব্যাটে মরিচা ধরেনি, বোলিং তার লাইন লেন্থ হারায় নি।

দ্রুত উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে বাংলাদেশ? চিন্তা নেই সাকিব আছেন ড্রেসিংরুমে। ছোট রানের টার্গেট দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা একদমই সম্ভব নয়? ভয় নেই সাকিব আছেন বল হাতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে ব্রেকথ্রু দিয়ে ম্যাচে ফিরিয়ে আনবে।

ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- সবকিছুতেই সাকিব। সাকিবে জয়ের স্বপ্ন বোনা, সাকিবে আশা, সাকিবে ভরসা। সবসময়ই যে সফল হয়েছে এমন কিন্তু নয়। অনেক সময় প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, কিন্তু চেষ্টার কোন কমতি থাকে না কখনোই।

জন্মস্থান মাগুরাতেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের বেড়ে উঠা। আজকের এই সাকিবকে তার নিজের শহর মাগুরাতে ফয়সাল নামেই চিনতো সবাই। পাড়ার ক্রিকেটে সবসময়ই ফয়সাল চাইতো আগে ব্যাট আর বোলিং করবে। নিজের দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবে।

কে জানতো একদিন পুরো দেশের ক্রিকেটকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটা তার কাঁধে উঠবে। কিন্তু এর পেছনে আগে অনেক গল্প, অনেক ত্যাগ আর কঠোর পরিশ্রম। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান! এই কথাটিতে এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে সবাই। কিন্তু এর তাৎপর্য অনেক অনেক গভীর। এ দেশের কেউ পুরো বিশ্বের সেরাদের সেরা হয়েছে এটা ভাবতেই গর্ববোধ বেড়ে যায় বহুগুণ।

মাগুরার সেই ফয়সালকে এখন পুরো বিশ্ব চেনে। এই অলরাউন্ডারকে পুরো বিশ্ব চেনে একজন বাংলাদেশি হিসেবে। তার জন্যই এখন উত্তরসূরিরা বিশ্বাস করতে পারে একজন বাংলাদেশি বিশ্বসেরা হওয়ার যোগ্যতা রাখে।

সাকিব আপনি সুপারম্যান। এদেশের ক্রিকেটীয় ঐতিহ্যে জড়িয়ে আছেন আপনি। যতদিন এই বিশ্বে ক্রিকেট থাকবে, যতদিন এই ক্রিকেটে অলরাউন্ডার তকমা থাকবে ততোদিন আপনাকে স্মরণ করতেই হবে। এদেশের ক্রিকেটকে দুহাত ভরে দিয়েছেন। সামনে আরো দিবেন।

আপনি শুধুই একজন ক্রিকেটার না, তার চেয়েও বেশি কিছু। দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন ১৩ বছর। আরো বহু পথ পাড়ি দেয়ার বাকি। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ রেকর্ড আল হাসান।

প্রজন্মনিউজ২৪/শেখ ফরিদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন