অর্থনৈতিক সংকটে বড় কফি ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই, ২০১৯ ০৬:২০:৫৯ || পরিবর্তিত: ৩১ জুলাই, ২০১৯ ০৬:২০:৫৯

অর্থনৈতিক সংকটে বড় কফি ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

অর্থনৈতিক সংকটের ভেতর নিখোঁজ হওয়া ভারতের কফি ধনকুবের খ্যাত ভি. জি. সিদ্ধার্থের লাশ বুধবার নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর দেশটির সবচেয়ে বড় কফি চেইন ‘ক্যাফে কফি ডের’ এই প্রতিষ্ঠাতার লাশ পাওয়া গেল।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মেঙ্গালুরুর উল্লালের কাছে নেত্রাবতী নদীর পারে তার লাশ পায় স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। পুলিশ জানিয়েছে, দুই দিন আগে সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের কর্নাটক রাজ্যের উপকূলীয় শহর মেঙ্গালুরুর কাছে নেত্রাবতী নদীর একটি সেতুতে তাকে শেষবার দেখা গিয়েছিল।

তারপর থেকেই কর্নাটক রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণার মেয়ের স্বামী ভারতের প্রতিষ্ঠিত এ ব্যবসায়ী নিখোঁজ ছিলেন। ডগ স্কোয়াড দিয়ে অনুসন্ধানের পর পুলিশ অনুমান করে সিদ্ধার্থ নদীটির সেতু ধরে মাঝামাঝি পর্যন্ত গিয়েছিলেন। এরপরই নদীতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযানে নামে বিভিন্ন সংস্থার উদ্ধারকারী দলগুলো। স্থানীয় মৎস্যজীবীরাও উদ্ধারকারীদের সহায়তা করেন।

তার গাড়িচালক বলেন, সেতুটির কাছে এসে সিদ্ধার্থ নিজের গাড়ি থেকে নেমে চালককে সেতুর অপর প্রান্তে গিয়ে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন। তিনি হেঁটে সেতু পার হবেন বলে চালককে জানিয়েছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার একদিন আগে সিদ্ধার্থ (৬০) ক্যাফে কফি ডে-র বোর্ড সদস্য ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছিলেন বলে জানা গেছে।

চিঠিতে ব্যবসায় লাভ করতে না পারার জন্য হতাশার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। ক্যাফে কফি ডে ভারতের সবচেয়ে বড় কফি চেইন শপ। ভারতজুড়ে এর ১,৭৫০টি ক্যাফে শপ আছে। এছাড়া মালয়েশিয়া, মিসর, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়ায় স্টোর রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের। যাতে ৩০ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে বাড়তে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ক্যাফে কফি ডের সম্প্রসারণের গতি কমে গিয়েছিল। কোম্পানিটি ছোট কয়েকটি আউটলেট বন্ধও করে দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর বলছিল, সিদ্ধার্থ তার কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার জন্য কোকা-কোলার সঙ্গে কথা বলছিলেন।

মেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সন্দীপ পাটিল বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতা শেষ করে সিদ্ধার্থের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ধনকুবের আত্মহনন করেছেন কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হবে। ১৩০ বছর ধরে কফির ব্যবসা করে আসছে সিদ্ধার্থের পরিবার। আর তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্যাফে কফি ডে স্টোর খোলেন। আর এভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কফি ব্যবসার মালিক হন সিদ্ধার্থ।

অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ক্যাফে কফি ডে বোর্ডের এই ৫৭ বছর বয়সী চেয়ারম্যান। চিঠিতে তিনি বলেন, ঋণদাতাদের কাছ থেকে ব্যাপক চাপ আসছে। ভারতীয় কর কর্তৃপক্ষ তাকে হয়রানিও করেছেন। সিদ্ধার্থ বলেন, কাউকে প্রতারণা কিংবা ভুলপথে নিয়ে যাওয়া আমার উদ্দেশ্য না। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমি ব্যর্থ হয়েছি।

প্রজন্মনিউজ২৪/রেজাউল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ