আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপ ২০১৯

অসি মিডিয়ার বাউন্সারে মাশরাফির দুর্দান্ত হুক!

প্রকাশিত: ২০ জুন, ২০১৯ ১২:০৪:৪৭

অসি মিডিয়ার বাউন্সারে মাশরাফির দুর্দান্ত হুক!

আজ নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে আরও একবার মাশরাফি প্রমাণ দিলেন, ‘আমি শুধু মাঠে সফল অধিনায়ক নই। দক্ষ বোলারই নই, বক্তা হিসেবেও ভালো। সংবাদ সম্মেলনে একের পর এক তীর্য্যক ও ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন করেও আমাকে ঘায়েল করা যাবে না।

এসবের জবাব দিতেও যথেষ্ঠ পারঙ্গম আমি। ট্রেন্টব্রিজের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে অসি মিডিয়া যেন পণ করেই এসেছিল কাল ২০ জুনের বিশ্বকাপ লড়াইয়ের আগে বাংলাদেশ অধিনায়কের মানসিক শক্তির পরীক্ষা নেবেন তারা।

শুরুই হলো দুই তীর্য্যক প্রশ্ন দিয়ে। বোঝাই গেল, মাশরাফিকে উস্কে দেয়ার জন্য। প্রশ্নের ধরণ ছিল এমন- ‘তোমরা তো অস্ট্রেলিয়ার সাথে একবার মাত্র জিতেছো, তাও সেই কতকাল আগে, ২০০৫ সালে। তোমার কি মনে হয়, আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে উন্নতি হয়েছে? তোমরা কতটা আগে বেড়েছো?’

আবার আরেকজন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, এই যে তোমরা অস্ট্রেলিয়ার সাথে পারো না, অস্ট্রেলিয়া নানা অজুহাতে তোমাদের দেশে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলতে যেতে চায় না। তোমাদেরও আমন্ত্রণ জানায় না। ভাবটা এমন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড খানিক হেলাফেলা করে তোমাদের। এসব কি তোমাদের অবচেতন মনে কুড়ে খায় না? মনের ভিতরে তেমন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে? তোমরা কি কাল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তার সমুচিত জবাব দিতে চাও?’

তবে সতর্ক মাশরাফি ধৈর্য্য ধরে আবেগতাড়িৎ না হয়ে বেশ সাবধানে প্রতিটি বাউন্সারকে হুক করে আছড়ে ফেললেন মাঠের বাইরে। আনাড়ি ব্যাটসম্যানের মত অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল পেয়েই ব্যাট পেতে দিলেন না। কিংবা তাড়াও করলেন না। প্রথম প্রশ্নের জবাবে খুব গুছিয়ে দিলেন। ‘আসলে আমরা তো তোমাদের সাথে বেশি ম্যাচই খেলি না। হ্যাঁ, ২০০৫ সালে একমাত্র জয়ের সাক্ষী আমিও।

আমি সে ম্যাচে ছিলাম। তবে আমার মনে হয়, তারপর আমরা যথেষ্ঠ উন্নতি করেছি। তোমাদের সাথে হয়ত জেতা হয়নি আর। তাই বলে আমরা বড় দলকে হারাইনি, সাফল্য পায়নি এমন নয়। এবারের বিশ্বকাপেও তো দক্ষিণ আফ্রিকার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিতেছি আমরা।’ তারপর মাশরাফি চোঁয়াল শক্ত করে যা বললেন, তার সারমর্ম হলো- ‘এখন আমরা দল হিসেবে অনেক উন্নতি করেছি।

আমাদের আত্মবিশ্বাস, সামর্থ্যের ওপর আস্থাও অনেক বেশি। দল হিসেবে অনেক পরিণত। আমরা বিশ্বাস করি, জানিও যে আমরা এখন অস্ট্রেলিয়া কেন, নিজেদের দিনে যাকে তাকে হারাতে পারি।

এরপর প্রশ্ন উঠলো, অস্ট্রেলিয়াতো তোমাদের দেশে খেলতে যায় না। একবার ট্যুর বাতিল করেছে। তোমাদেরকেও আমন্ত্রণ জানায় না। এতে করে কোন নেতিবাচক মনোভাব বা প্রতিক্রিয়া? মাশরাফি জবাব দিলেন, ‘না না। সেটা আসলে দ্বি-পাক্ষিক বোর্ডের বিষয়। আমাদের তা নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। ওটা দেখা আমাদের কাজও না। তবে হ্যাঁ, আমরা অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে যেতে পারি না অনেকদিন।

১৬ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় শেষ টেস্ট খেলেছিলাম আমরা। আমি তখন টেস্ট খেলি। তারপর আর ওদেশে গিয়ে টেস্ট খেলা হয়নি। তা নিয়ে একটা হতাশা আছেই। তবে আমার মনে হয় না, বিশ্বকাপে ওসব মাথায় রেখে কেউ মাঠে নামবে।

তারপর খানিক হেসে স্বভাবসূলভ রসিকতার সুরে ওই অসি সাংবাদিককে লক্ষ্য করে মাশরাফি বলে ওঠেন, ‘দেখো এমন নয় যে কাল তোমাদের হারিয়ে আমরা বলবো- আমাদের অস্ট্রেলিয়ায় খেলার আমন্ত্রণ জানাও। আসলে আমরা বিশ্বকাপ খেলতে এসেছি। আমাদের এখন সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকাই লক্ষ্য। আমরা তা নিয়েই ভাবতে চাই। ভাবছিও। আমরা আসলে ক্রিকেট বিশ্বকে দেখাতে চাই আমরা ভাল দল। ভাল খেলতে পারি।

প্রজন্মনিউজ২৪/মামুন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ