বিরোধীদের মহাঐক্যের প্রচেষ্টা বিজেপিবিরোধী জোট গঠনে

প্রকাশিত: ১৮ মে, ২০১৯ ০৩:২৮:১৫

বিরোধীদের মহাঐক্যের প্রচেষ্টা বিজেপিবিরোধী জোট গঠনে

শেষ দফার নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতে বিজেপিবিরোধী মহাজোট সরকার গঠনের উদ্যোগ জোরালো হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু, বহুজন সমাজবাদী পার্টির মায়াবতীসহ বেশকিছু বিরোধীদল ঐক্য প্রক্রিয়ায় বিজেপিবিরোধী জোট গঠনকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়ার কথা জানিয়েছে। ২৩ মে নির্বাচনি ফল ঘোষণার আগে ২১ মে’র সম্ভাব্য বৈঠক সামনে রেখে বিজেপি বিরোধী দলগুলোকে কাছে আনার চেষ্টা জোরালো করেছেন নাইডু।  বৃহত্তর জোট গঠনের লক্ষ্যে কমিউনিস্ট পার্টি, আম আদমি পার্টিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলোও থাকছে সেই ঐক্য প্রক্রিয়ায়। তবে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকেও বিরোধী জোট গঠন প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে কেউ কেউ।

২৩ মে নির্বাচনি ফল ঘোষণার আগে বিরোধী দলগুলোকে কাছে আনার চেষ্টা জোরালো করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নাইডু। এ লক্ষ্যে  শুক্রবার  মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও আম আদমি পার্টির (এএপি) আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাথে বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠকে নির্বাচন পরবর্তী সম্ভাব্য জোট গঠন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এদিকে সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি জনিয়েছে, নাইডু  ৮ মে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীর সাথে বৈঠক করেন আর ২১ মে বিরোধী দলগুলোর বৈঠক ডাকায় একমত পোষণ করেন বলে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি হান্ট জানিয়েছে, ১৮ মে শনিবার নাইডু সম্ভবত দিল্লিতে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী ও বহুজন সমাজবাদী পার্টির প্রধান মায়াবতীর সাথে লক্ষ্মৌতে বৈঠক করতে পারেন।  দক্ষিণ ভারতে সক্রিয় তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) প্রধান নাইডু বলেছেন, গেরুয়া (বিজেপির পতাকার রং) দল  বিরোধী যেকোনও দলকেই বৃহত্তর জোটে স্বাগত জানানো হবে। শুক্রবার তিনি ইঙ্গিত দেন প্রয়োজনে নিজেদের আঞ্চলিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) সাথেও জোট গঠন করবেন। 

শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সাথে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তরফে নাইডুর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী জোট গঠনে সক্রিয় টিআরএস যদি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেয় তাহলে কী হবে? জবাবে নাইডু বলেন, ‘আমরা কেবল টিআরএস-কে নয় বিজেপি বিরোধী বিরোধী যেকোনও দলকেই স্বাগত জানাবো। এধরণের সব দলকেই আমাদের বৃহত্তর জোটের অংশ হতে স্বাগত জানাবো। তিনি বলেন, আমি সবার সাথেই বৈঠক করছি। সব নেতার সাথে বৈঠকের পর একটি পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলবো।’

নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠকে টিডিপি প্রেসিডেন্ট নাইডু নির্বাচন কমিশনকে ইভিএম মেশিন নিয়ে ওঠা সমালোচনা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান। সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন তিনি। নাইডু বলেন, ‘আমি গত ২৫ বছর ধরে দলের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু  এধরনের কমিশন কখনোই দেখিনি’। ‘নির্বাচনের পুরো সময় জুড়ে তারা সরকারকে সমর্থন করে গেছে এটা দুঃখজনক, বলেন তিনি।

মহাঐক্যের এই পরিকল্পনায় শরিক হবে না বলে জানিয়েছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)।প্রেসিডেন্ট চন্দ্রশেখর রাও এর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আইন প্রণেতা বিনোদ কুমার জানিয়েছেন, নির্বাচনের ফল পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক করতে আগামী ২১‌ মে বিরোধী দলগুলোর সাথে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকের অংশ হবে না টিআরএস। বিনোদ কুমার বলেন, চন্দ্রবাবু নাইডুর সাথে কোনও বৈঠকের অংশ হতে পারবো না আমরা। এটা খুবই পরিষ্কার। বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট গড়ার চেষ্টায় মূল ভূমিকা পালন করছেন নাইডু। তবে তার এই ভূমিকাকে ‘স্বঘোষিত’ বলে দাবি করেন বিনোদ কুমার। কংগ্রেস আর বিজেপি-কে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টায় আছেন চন্দ্রশেখর রাও। টিডিপি এই জোটের অংশ হতে যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিনোদ কুমার বলেন, অন্ধ্র প্রদেশের বিধান সভা ও লোক সভা নির্বাচনে জিতবে না সে (নাইডু)। ২৩ মে’র পর তার ভূমিকা গৌন হয়ে যাবে।

আনন্দবাজার পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেছেন,  রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী কংগ্রেসকে বাদ রেখে শুধু আঞ্চলিক দলগুলির পক্ষে জোট বেঁধেও অন্তত ২৭২ আসন নিয়ে সরকার গঠন যেমন কঠিন, তেমনই কংগ্রেস এবং তার ইউপিএ শরিকরা মিলে ২৭২ আসন জিতে সরকার গড়তে পারবে— তেমনটাও এখনই জোর দিয়ে বলা যায় না। তাই মোদীকে হারিয়ে বিকল্প একটি সরকার গড়তে হলে কংগ্রেসের সঙ্গে অন্য বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির ‘মহাগঠবন্ধন’ই যে একমাত্র পথ, অচিরেই সেই উপলব্ধি হল সকলের।

দেবাশিসের মতে, ‘নীতিগত ভাবে’ এ বারের নির্বাচনী লড়াই হয়তো সেই পথ ধরেই এগোতে চেয়েছে। হয়তো তাই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি বার বার একত্রে বৈঠক করেছে। মমতার ডাকে ব্রিগেডে ২৩টি বিরোধী দলের সভায় যোগ দিয়েছে কংগ্রেস। তবু বলতেই হবে, যে সব রাজ্যে বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেস প্রধান শক্তি, সেখানে তাদের এগিয়ে দিয়ে অন্যান্য রাজ্যে বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিকে প্রাধান্য দেওয়ার তাত্ত্বিক ফর্মুলা সর্বত্র মসৃণ ভাবে কাজ করেনি। পশ্চিমবঙ্গে তো নয়ই, সবচেয়ে বেশি আসন যেখানে, সেই উত্তরপ্রদেশেও মায়াবতী-অখিলেশদের জোটের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের লড়াই এড়ানো যায়নি।

প্রজন্মনিউজ২৪/মুজাহিদ

এ সম্পর্কিত খবর

ব্লাড ফাইটার ফর হিউম্যানিটি

মালদ্বীপে বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

ঈদে ঢাকা ছাড়বে দেড় কোটির বেশি মানুষ, ছুটি ২ দিন বাড়ানোর দাবি

ইউ এন ও এর সভাপতিত্বে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

ভারত বিষয়ে কৌশল ঠিক করছে বিএনপি

ফরিদপুরে ২৬ শে মার্চ উপলক্ষে বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয় মহান স্বাধীনতা দিবস

শরীয়তপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২৬ মার্চ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

স্থানীয় সংসদ সদস্যর উপস্থিতিতে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন।

নানা কর্মচসূচির মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে

খুলনায় বিএনপির মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত



ব্রেকিং নিউজ