ছেলেকে অপহরণের পর খুন করা হয়েছে, এমন অভিযোগে মামলা করেন এক মা। এরপর থেকে ছেলের শোকে ব্যাকুল তিনি। কত আকুতি-মিনতি। কিন্তু এর সবই ছিল অভিনয়। চাচাদের ফাঁসাতে অপহরণ, গুম ও খুনের এমন নাটক সাজিয়েছিলেন মা-ছেলে।

তবে শেষরক্ষা করতে পারেননি। আট মাস আগে খুন হওয়া ‘মৃত’ সেই ছেলেটিকে সোমবার রাতে আটক করেছে পুলিশ। পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের বাদলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটক ছেলের নাম মিলন হোসেন (১৭)। মিলন বাদলপাড়ার মৃত হযরত আলীর ছেলে। তার মায়ের নাম মেরিনা খাতুন। আটকের পর মঙ্গলবার ছেলেটি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা-ছেলে মিলে এই নাটক সাজিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক জানান, পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে মেরিনা খাতুনের সঙ্গে তার ভাশুর ও দেবরদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এর জের ধরেই তাদের ফাঁসানোর জন্য মা-ছেলে মিলে পরিকল্পনা আঁটেন। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ছেলেকে অপহরণের পর খুন করা হয়েছে এ অভিযোগ তুলে মেরিনা আদালতে মামলা করেন।

মামলায় দেবর সাইদুল ইসলাম, আসলাম হোসেন ও ইসলাম হোসেনকে আসামি করেন। মামলার এজাহারে মেরিনা দাবি করেন, ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে আসামিরা মিলনকে অপহরণ ও হত্যার করেন। এরপর মিলনের লাশ গুম করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পাবনা সদর থানা-পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মহিউদ্দিন বলেন, তদন্ত শুরুর পর বিষয়টি নিয়ে তাদের সন্দেহ হয়। এরপর বিভিন্নভাবে সন্ধান চালিয়ে তারা ঘটনাটি যে নাটক তা বুঝতে পরেন। পরে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছেলেটির খোঁজ পান এবং ময়মনসিংহ জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আটক করেন। পরে মিলন পাবনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

ওসি ওবাইদুল বলেন, তারা তথ্য গোপন করে অপরাধ করেছেন। মামলার নামে পুলিশকে হয়রানি করেছেন। এসব বিষয় তুলে ধরে ওই মা-ছেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা আদালতের কাছে আবেদন জানাবেন। এরপর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।