বাংলাদেশে স্মার্ট সিটি তৈরিতে আগ্রহী ভারত

প্রকাশিত: ০৭ মে, ২০১৯ ১১:১২:৩৭

বাংলাদেশে স্মার্ট সিটি তৈরিতে আগ্রহী ভারত

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ভারতের আদলে বাংলাদেশেও স্মার্ট সিটি তৈরিতে  ভারত বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

সোমবার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে শেরেবাংলা নগরে নিজ কার্যালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে তারা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সাক্ষাৎকালে অর্থমন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বানে ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী আন্তরিকভাবে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং ভারতের বিভিন্ন স্মার্ট সিটির আদলে বাংলাদেশে স্মার্ট সিটি তৈরিতে পরামর্শ দেন। অর্থমন্ত্রী স্মার্ট সিটির পরামর্শের উত্তরে বলেন, আমাদের স্মার্ট সিটি তৈরি করার যথেষ্ট সম্ভাবনা ও স্থান রয়েছে। ভারত আগ্রহী হলে আমরা যেকোনো সময়ে উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে স্মার্ট সিটি তৈরি করার জন্য প্রস্তুত আছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সময়ের আবর্তনে এ সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর ভর করে পরিপক্কতা লাভ করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ভারতের সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে ভাল সম্পর্ক, বিশ্বাস, পারস্পারিক স্বার্থ ও সম্মানের ভিত্তিতে নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, তৃতীয় লাইন অফ ক্রেডিটের আওতায় ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণে ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ, রেলপথ, সড়ক, জাহাজ চলাচল, বন্দরসহ অবকাঠামো খাতে ১৭টি অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক গতিশীলতার কারণে শুধু শহরেই নয়, উন্নয়ন হয়েছে গ্রামীণ জনপদেও।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের দেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউট সোর্সিংয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। বাংলাদেশে এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাল চলছে, যা ২০৬১ সাল পর্যন্ত থাকবে। দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে দেশের তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন ট্রেড প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। বর্তমান যুগ হলো আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স, ম্যাটরিয়াল সাইয়েন্স, বায়োকেমিস্ট্রি, ব্লক চেইন টেকনোলজি, কোয়ান্টাম সাইয়েন্স, রবোটিং, ন্যানো টেকনোলজি ইত্যাদির যুগ। আগামীর চাহিদা পূরণে শিক্ষা সংস্কারের আমাদের ক্লাসরুমগুলোতে পর্যায়ক্রমে এসব বিষয় শিক্ষা চালু করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারত চাইলে এই খাতেও বিনিয়োগ করতে পারে।

রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস বা ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে ইএফডি ক্রয় প্রক্রিয়া এনবিআর-এ চলমান আছে। এ প্রক্রিয়াতেও ভারতকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই। পাশাপাশি বাংলাদেশে এনবিআরের অটোমেশন, ব্যাংকিং খাত, জ্বালানি মজুত কেন্দ্রসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে ভারত।

বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী বাংলাদেশকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি এ অঞ্চলের সব দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালনা ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দর। রিভা গাঙ্গুলী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশকে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অবশ্যই যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের দিকে আরো বেশী জোর দিতে হবে। ভারত বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযোগী হিসাবে বাংলাদেশের এলএনজি, বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে আরো বেশী বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ