সুবীর নন্দী আর নেই

প্রকাশিত: ০৭ মে, ২০১৯ ১১:১০:৫১

সুবীর নন্দী আর নেই

একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী মারা গেছেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৪টায় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন রাইজিংবিডিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুবীর নন্দী ১২ এপ্রিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৪ এপ্রিল ঢাকায় ফেরার ট্রেনে ওঠার জন্য বিকেলে মৌলভীবাজার থেকে পরিবারসহ শ্রীমঙ্গলে আসেন। পরে তিনি ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়লে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে সুবীর নন্দীকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান। ওই দিনই রাত ১১টার দিকে তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন।

১৮ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় সুবীর নন্দীকে। সেদিন বিকেলেই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে বরেণ্য এই শিল্পীর চিকিৎসা শুরু হয়।

সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানাধীন নন্দী পাড়ায় এক কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।।তার বাবা সুধাংশু নন্দী ছিলেন চিকিৎসক ও সঙ্গীতপ্রেমী। তার মা পুতুল রানীও গান গাইতেন। সুবীর নন্দী ছোটবেলা থেকেই ভাই-বোনদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে। তবে সঙ্গীতে হাতেখড়ি মায়ের কাছেই। বাবার চাকরিসূত্রে তার শৈশবকাল চা বাগানেই কেটেছে। পাঁচ-ছয় বছর বয়স পর্যন্ত বাগানেই ছিলেন। চা বাগানে খ্রিষ্টান মিশনারিদের একটি স্কুল ছিল, সেখানেই পড়াশোনা করেন। তবে পড়াশোনার অধিকাংশ সময়ই তার কেটেছে হবিগঞ্জ শহরে। হবিগঞ্জ শহরে তাদের একটি বাড়ি ছিল, সেখানে ছিলেন। পড়েছেন হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে। তারপর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে।

১৯৬৩ সালে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াকালীন তিনি গান করতেন। ১৯৬৭ সালে তিনি সিলেট বেতারে গান করেন। তার গানের ওস্তাদ ছিলেন বাবর আলী খান। লোকগানে ছিলেন বিদিত লাল দাশ। ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম রেকর্ডিং করেন। প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়। ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ চলচ্চিত্রে। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করেছেন।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ