হকিস্টিক ছেড়ে দূরন্ত ফাস্ট বোলার!

প্রকাশিত: ০৫ মে, ২০১৯ ০৫:৪০:৪৭

হকিস্টিক ছেড়ে দূরন্ত ফাস্ট বোলার!


দিনটা ছিল ২০১১ সালের ২ মার্চ, বেঙ্গালুরুতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৩২৭ রানের বিশাল স্কোর গড়েছে ইংল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে আইরিশরা। তবে কেভিন ও’ব্রায়েন নামের একজন ‘ব্যাটিং দানব’ হয়ে হাজির হলেন দৃশ্যপটে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে অবিশ্বাস্যভাবে আয়ারল্যান্ডকে ম্যাচটা জিতিয়ে দেন এই অলরাউন্ডার। বহুদূরে আয়ারল্যান্ডে বসে খেলাটা দেখছিল ১১ বছর বয়সের এক বালক। সেদিনই দেশের হয়ে কেভিন ও’ব্রায়েনের মতো কিছু একটা করার প্রত্যয় নেন সেই বালক। প্রিয় হকি গ্রাউন্ডে ছুটে চলা ছেলেটি ছেড়ে দেন স্টিক, নাম লেখান ক্রিকেটে।

সময়ের পরিক্রমায় বাঁহাতি ফাস্ট বোলার বনে যাওয়া সেই জশ লিটল এখন আয়ারল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলে। ডেথ ওভারের বিশেষজ্ঞ বোলার হিসেবে ১৯ বছর বয়সেই শুক্রবার ডাবলিনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে তাঁর। অবশ্য এর আগে মাত্র ১৬ বছর ৩০৯ দিন বয়সে হংকংয়ের বিপক্ষে ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টি-টোয়েন্ট অভিষেক হয়ে যায় তাঁর।

জন্মসূত্রেই শারীরিকভাবে অ্যাথলেটিক প্রতিভার অধিকারী জশ লিটল। তবে জুনিয়র লেভেলে আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে হকি খেলা জশের ক্রিকেটে আসাটা যেন গল্পকেও হার মানায়। তবে হকিস্টিক ছেড়ে ক্রিকেট বল হাতে নেওয়ার মূল কারণ হিসেবে কেভিন ও’ব্রায়েনের সেই সেঞ্চুরির কথাটাই বলেছেন এই আইরিশ ফাস্ট বোলার। সংবাদমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই ম্যাচের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘সেই ম্যাচের দিনই আমি সর্বপ্রথম ভালো করে ক্রিকেট খেলা দেখি। এরপরই আমার মনে হলো, দেশের হয়ে আমি যদি এমন কিছু করতে পারি তাহলে দারুণ হবে।’

তবে হকি ছেড়ে ক্রিকেটে আসার পর খুব একটা বেগ পেতে হয়নি জশের। দ্রুত শিখতে পারার কল্যাণে অল্পদিনের মধ্যেই ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে আসতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আয়ারল্যান্ড স্কোয়াডে ডাক পেয়ে যান এই পেসার। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় বলেই উইকেট তুলে নেন বাঁহাতি পেসার। তখনই ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার গতি তোলা জশ সেই ম্যাচে ৫২ রানে তিন উইকেট পেয়েছিলেন। ভারতের সেই দলে থাকা ক্রিকেটারদের দিকে চোখ বুলালেই বোঝা যাবে সেই ম্যাচে তাঁর বোলিংয়ের মাহাত্ম। জশের প্রতিপক্ষ হয়ে সেদিন মাঠে থাকা ঋষভ পান্ত, খলিল আহমেদ এবং ওয়াশিংটন সুন্দর এরইমধ্যে ভারতীয় জাতীয় দলের তারকা।

বাঁহাতি পেস বোলার জশ ইনিংসের শেষ দিকে বল করতে সিদ্ধহস্ত। আয়ারল্যান্ডের অন্যতম বিশেষজ্ঞ ডেথ বোলার বলা হয় তাঁকে। দ্রুতগতির বল ছাড়াও করতে পারেন কার্যকর স্লোয়ার। হকি ছেড়ে ক্রিকেটে এসে ভুল করেননি জানিয়ে ১৯ বছর বয়সী বোলার বলেন, ‘স্কুলে হকিই খেলতাম আমি। একটা এশিয়ান পরিবারের একজন বয়স্ক লোক একদিন আমাকে পেমব্রক ক্রিকেট ক্লাবে নিয়ে আসে। আমার চোখ আর হাতের সমন্বয়টা নাকি বেশ ভালো, এমন কিছু বলেন তিনি। সেদিনই মনে হয়েছিল, এতদিন আমার আসল খেলা কোনটা বুঝিনি। যখন বোলিং করতে শুরু করলাম, তখনই নিজের খেলাটা চিনতে পারলাম।’
প্রজন্মনিউজ২৪/নাবিল

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ