কৃত্রিম উপায়ে দুধ তৈরী

প্রকাশিত: ০৫ মে, ২০১৯ ০৫:১৬:২৪

কৃত্রিম উপায়ে দুধ তৈরী

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বালিয়াটি ভাটারা বাজারের পাশে ১০০ লিটার ভেজাল দুধ ও দুধ তৈরির সামগ্রীসহ গ্রেফতার করা হয় আবুল কাসেম নামে এক ব্যবসায়ীকে। বিভিন্ন বাজারে পুলিশ ক্রেতা সেজে অভিযান পরিচালনা করে। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আবুল কাশেম দীর্ঘদিন ধরে পানিতে রাসায়নিক সামগ্রী মিশিয়ে দুধ তৈরি করে বিক্রি করে আসছিল। তিনি রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে এই দুধ বিক্রি করে আসছিলেন। তিনি নিজ বাড়িতেই অনুমোদনবিহীন নিম্নমানের গুঁড়া দুধ দিয়ে এই ভেজাল দুধ তৈরি করে থাকেন।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ১০৮০ লিটার ভেজাল দুধসহ ২ ঘোষালকে আটক করা হয়। বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের মাওলানা সাইফ উদ্দিন এহিয়া ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। জানা গেছে, দুধ থেকে পনির বের করার পর পরিত্যক্ত পানির সঙ্গে সাধারণত কেমিক্যাল ও গ্রিজ জাতীয় চর্বি মিশিয়ে ভেজাল দুধ তৈরি করে তা বিক্রি করা হচ্ছিল। শুধু ভেজাল দিয়ে ক্ষান্ত হচ্ছেন না এক শ্রেণির ব্যবসায়ী, এবার নকল দুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছেন তারা। এ দুধ সংগ্রহে কোনো গাভীর প্রয়োজন পড়ে না, কষ্ট করে গড়ে তুলতে হয় না গবাদি পশুর খামারও।

ছানার পানির সঙ্গে কেমিক্যাল মিশিয়ে সহজেই তৈরি করা হচ্ছে এমন ‘বিষ’। পরে ‘খাঁটি দুধ’ হিসেবে তা চালান হয়ে আসছে রাজধানীতে। দীর্ঘ সময় সতেজ রাখতে এতে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। জানা গেছে, পানি গরম করে তাতে অ্যারারুট মিশিয়ে সহজেই নকল দুধ তৈরি করা যায়। তবে প্রয়োজন পড়ে আরও কয়েক পদের রাসায়নিক পাউডারের। যা পানিতে মিশিয়ে একেবারে সাদা দুধের আকার ধারণ করে। খালি চোখে তা ধরা অসম্ভব। এর শিকার হচ্ছেন পূর্ণ বয়স্ক থেকে শিশু। চিকিৎসকরা বলছেন, কৃত্রিম উপায়ে তৈরি নকল দুধ পানে পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর প্রভাব পরতে পারে কিডনি বা লিভারের মতো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও। নকল দুধ তৈরির কারখানাগুলোতে ছানার ফেলনা পানি, খাবার পানি, থাইসোডা, পার অক্সাইড, ময়দা, ভাতের মাড় ও চিনি মিশিয়ে আগুনে ফোটানো হয় এবং পরে কাটিং অয়েল ও এসেন্স মিশিয়ে দুধের সুবাস দেওয়া হয়।

এসব দুধ প্লাস্টিক মোড়কে প্যাকেটজাত দুধ হিসেবেও বাজারে বাজারে পৌঁছে যায়। আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের চিকিৎসক বিজ্ঞানীরা বলছেন, রাসায়নিক মিশ্রিত এসব নকল দুধ পানের কারণে মানবদেহে ডায়রিয়া, জটিল পেটের পীড়া, কিডনি ও লিভার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁঁকি আরও মারাত্মক। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বর্ণনায়, ফরমালিন ব্যবহারে মানুষের দেহে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা যেমন- পাকস্থলীর ক্যান্সার, দৈহিক বিকলাঙ্গতা এমনকি প্রাণহানিও ঘটাতে পারে। মাত্রা বেশি থাকলে শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে। বৃক্ক, যকৃৎ, ফুলকা, পাকস্থলী ও লিভার সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, শিশু খাবার হিসেবে পরিচিত পাস্তুরিত তরল দুধসহ যে  কোনো ধরনের খাদ্যে ভেজাল রোধে সরকারের কঠোর ভূমিকার বিকল্প নেই। রমজান মাস উপলক্ষে খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা নেওয়া এখন জনদাবি।

প্রজন্মনিউজ২৪/মুজাহিদ

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ