অসহায় শিল্পীদের পাশে সব সময়ই থাকতে : অঞ্জনা

প্রকাশিত: ০৫ মে, ২০১৯ ০২:২৪:৪৪

অসহায় শিল্পীদের পাশে সব সময়ই থাকতে : অঞ্জনা

দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন না একসময়ের সাড়াজাগানো চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী অঞ্জনা। তবে অভিনয়ে বিরতি নিলেও নাচে তা তিনি কখনোই নেন না। কারণ নায়িকা হওয়ার অনেক আগে থেকেই তিনি একজন নৃত্যশিল্পী। নৃত্যের জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেছেন। সর্বশেষ জি সরকারের নির্দেশনায় ‘হাঙ্গামা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। এরপর অনেক সময় ধরে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় থেকে দূরে আছেন।

বর্তমানে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যও এ অভিনেত্রী। সম্প্রতি তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ফান্ডে নগদ এক লাখ টাকা দিয়েছেন।অসহায় শিল্পীদের পাশে সব সময়ই থাকতে চান এই অঞ্জনা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী শিল্পী সমিতির ফান্ডে টাকাটা দিয়েছি।

শিল্পীদের পাশে সবসময়ই ছিলাম, আছি এবং থাকবো। চলচ্চিত্র জগতের আমার সহকর্মী শিল্পীরা আমাকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছে। আমিও সবসময় তাদের পাশে থাকতে চাই। চলচ্চিত্রের ভালো কিছুর জন্য যে কোনো আন্দোলনের সঙ্গে আমি ছিলাম এবং সামনেও থাকবো। শামসুদ্দীন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমার মধ্য দিয়ে অঞ্জনার ঢালিউডে অভিষেক হয় ১৯৭৮ সালে। তিনশ’র মতো সিনেমায় অভিনয় করা এ নায়িকা আশির দশকে ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের একজন।

সাবলীল অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনবার জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করতে না পারলে এ মাধ্যমের অন্য অনেক শিল্পীর মধ্যে যে ধরনের হতাশা কাজ করে তেমনটা অঞ্জনার মধ্যে করে না। এর কারণ হিসেবে এই চিত্রনায়িকা বলেন, আমি একজন নৃত্যশিল্পী। আমি তো আমার মূল কাজ প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি। তাছাড়া এখন আমি নিয়মিত বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলের টকশোসহ নৃত্যানুষ্ঠানেও অংশ নিচ্ছি। তাই খুব যে অবসরে আছি আমি তা বলা যাবে না। আর একটি কথা বলতে চাই, নৃত্যের পাশাপাশি চলচ্চিত্রে প্রস্তাব পেলে আমি অবশ্যই আবার অভিনয় করবো। আমাদের চলচ্চিত্রের বর্তমান সময়টা খারাপ যাচ্ছে।

এটা কিভাবে দেখছেন? এ প্রশ্নের উত্তরে অঞ্জনা বলেন, আমার পরিচয় আমি একজন চলচ্চিত্র শিল্পী। চলচ্চিত্র ভালো না থাকলে আমরাও ভালো থাকতে পারি না। আগের সময়ের বেশিরভাগ শিল্পী দর্শকের হৃদয়ে অভিনয় দিয়ে দাগ কেটেছে। আগে ছবি মুক্তি পেলে আমরা এক শোতেই  খবর পেতাম যে, ছবিটি হিট না ফ্লপ হবে। আগে দর্শকরা ছবি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতো। এখন তো সেই অপেক্ষা নেই। তবে ভালো মানের ছবি এখনো হচ্ছে। নতুন শপিং মলের সঙ্গে সঙ্গে ছোট পরিসরে ১৫০-২০০ আসনের আধুনিক মানের সিনেমা হল এখন বেশি প্রয়োজন। মফস্বলে এমন সিনেমা হল এখন খুব জরুরী।

যেটা তৈরি হয়ে গেলে অনেক সংকটই কেটে যাবে আমাদের। চলচ্চিত্রের সুদিন অবশ্যই ফিরবে। সেজন্য কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত অঞ্জনা। এ অভিনেত্রী তার অভিনীত অনেক ছবির মধ্যে ‘অশিক্ষিত’ ছবিতে কাজ করার জন্য সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ছবিটি আমার চলচ্চিত্র জীবনের মাইলফলক বলা যায়। ছবিটির ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাাইছে’ গানটি আজও অনেকের মুখে শুনি।

খুব ভালো লাগে এই ভেবে যে, এত আগের গান এখনো মানুষের মুখে মুখে। ‘মাটির মায়া’, ‘সুখে থাকো’, ‘সুখের সংসার’, ‘আশীর্বাদ’, ‘জাদুনগর’, ‘ভাইজান’, ‘রাম রহিম জন’ ছবিতে তার অভিনয় ছিল উল্লেখ করার মতো। অঞ্জনা এক সময় ছবি প্রযোজনাও  করেছেন ।

অঞ্জনা ফিল্মসের ব্যানারে তার প্রযোজিত ‘শুশুরবাড়ি’, ‘প্রাণ সজনী’, ‘দেশ বিদেশ’, ‘নেপালী মেয়ে’সহ বেশকিছু ছবি ব্যবসা সফলতা পায়। সামনে নতুন কোনো ছবি প্রযোজনা করবেন কি-না জানতে চাইলে অঞ্জনা বলেন, আমার একটা স্বপ্ন আছে। আমি সেটাকে বাস্তবায়ন করতে চাই। ইচ্ছে আছে সামনে ভালো একটি ছবি আমার প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মাণ করার। সময়মতো সে বিষয়গুলো সকলকে জানিয়ে দিব। চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি, এফডিসিকে ভালোবাসি। তাই চলচ্চিত্রের মানুষদের সঙ্গেই থাকতে চাই সারাজীবন।

প্রজন্মনিউজ২৪

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ