কমিটির মানসিক চাপে মাদ্রাসা সুপারের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল, ২০১৯ ০৪:৩২:০০

কমিটির মানসিক চাপে মাদ্রাসা সুপারের মৃত্যু

মোঃ শরিফুজ্জামানদিনাজপুরঃ দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মাদ্রাসার কমিটিকে টাকা দিতে না পারায় মানসিক চাপে ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্বাস আলী (৪৭) ব্রেইন স্টোক করে মৃত্যুবরণ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাণীরবন্দর (কংগ্রেস) দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসায়।

সুপার আব্বাস আলীর পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৩শে এপ্রিল মঙ্গলবার মাদ্রাসা কমিটির ঘরোয়া অফিস মিটিংএ আব্বাস আলীর ভারপ্রাপ্ত সুপার পদ বহাল রাখাতে চাইলে কমিটির সভাপতি সেকেন্দার আলী শাহসহ সবাই তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।অন্যথায় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার হুমকি দেন এবং দু'দিনের মধ্যে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দেন।

এ ঘটনার পর গত ২৫শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে অধ্যক্ষ আব্বাস আলী ব্রেইন স্টোক করলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দিনাজপুর ইসলামিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ২৮শে এপ্রিল রবিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদ্রসার কয়েকজন শিক্ষক জানান ২৩শে এপ্রিল মঙ্গলবারের মাদ্রাসা কমিটির মিটিং এ তাকে নানা ধরনের কথা বলে অপদস্ত করা হয় এবং বিনা কারণে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে সরে আসার হুমকি দেয়া হয় এবং ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে সহকারী মাদ্রাসা সুপার মো: ফজলুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হবে বলে কমিটির মিটিংএ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া তারা আরো অভিযোগ করে বলেন মাদ্রাসার শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলে কমিটির সভাপতি সেকেন্দার আলী শাহ্ চাঁদা আদায় করে থাকেন।

নিহত আব্বাস আলীর মেয়ে মোছা: আয়েশা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ বহাল রাখার জন্য ২০০৪ সাল থেকে প্রতিনিয়ত ওই কমিটিকে ৬ মাস অন্তর অন্তর মোটা অংকের টাকা দিতে হয়। পুনরায় কমিটিকে টাকা দিতে না পাড়ায় আমার বাবাকে পদ থেকে সরে আসার হুমকি দেয়া হয়। তার স্ত্রী মোছা: মমতাজ খাতুন জানান, কমিটির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও বার বার টাকার দাবি এটা তার বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে হয়ে আসতেছে।

কিন্তু গত ২৩ এপ্রিল মিটিং এ তাকে অপমান করার পর তিনি গুরতর অসুস্থ হয়ে ব্রেইনস্টোক করে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তার স্বামীর মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার চান। অভিযুক্ত মাদ্রাসার সভাপতি সেকেন্দার আলীর সাথে কথা হলে তিনি চাপ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার মিটিং এ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্বাস আলীর বিষয়ে কোন কথা হয়নি। এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মন্জুর হকের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রজন্মনিউজ২৪/মামুন

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ