‘খোলো দ্বার’ নীতি গ্রহণ করেছে সরকার

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল, ২০১৯ ০১:৩৩:৫০

‘খোলো দ্বার’ নীতি গ্রহণ করেছে সরকার

অর্থনৈতিকভাবে সরাসরি লাভজনক না হলেও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ভারতীয় উদ্যোক্তাদের জন্য চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ‘ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মিরসরাইয়ে ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ভূমি উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৯১৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা এবং অবশিষ্ট ৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা দেবে সরকার। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।

জানা যায়, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘খোলো দ্বার’ নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। মিরসরাইয়ে ‘ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল’ প্রকল্পটি একটি সেবাধর্মী ‘জেড’ টাইপ প্রকল্প।

ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত জি-টু-জি চুক্তির শর্ত মোতাবেক ভারত সরকার কর্তৃক মনোনিত ডেভেলপারদের কাছে এই জমি হস্তান্তর করবে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ’ (বেজা)। প্রকল্পের আওতায় ভূমি উন্নয়নসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে বিধায় এ পর্যায়ে প্রকল্পটির মাধ্যমে সরাসরি কোনো অর্থনৈতিক লাভ পাওয়া যাবে না।

তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক/দেশীয় বিনিয়োগ প্রবাহের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।জানা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ভারত সরকারের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক ঋণ চুক্তির আওতায় সাড়ে ১১ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ‘এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া’। ঋণের সুদের হার হচ্ছে ১ শতাংশ।

পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।বেজা সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরী স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মিসরাইকে ২১টি জোনে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সকল অবকাঠামো ও সেবা প্রদানের জন্য ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করা হবে।

ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের চাহিদা মোতাবেক সেখানে তাদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন (মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল) দেয়া হচ্ছে।জানা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১১ জন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ২৪ জন পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হবে ভূমি অধিগ্রহণে। মোট ১ হাজার একর ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৮৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

এছাড়া প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ করা হবে এর মধ্যে রয়েছেÑ ১৫২ লাখ ঘন মিটার ভূমি উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশনে ফেনী নদী থেকে ৯ কিলোটার দীর্ঘ পাইপ লাইন স্থাপন, পাম্প স্টেশন স্থাপন, পানি সংরক্ষণাগার-অভ্যন্তরীণ সংযোগ ও বহিঃ নিষ্কাশন লাইন নির্মাণ, ১০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ৫ হাজার মিটার দীর্ঘ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ১ হাজার ৬৮০ বর্গমিটার বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ২০ হাজার ৬০৩ বর্গফুট বিশিষ্ট নিরাপত্তা শেড নির্মাণ ও টেলিযোগাযোগ (অপটিক্যাল ফাইবার) স্থাপন ইত্যাদি।

প্রজন্মনিউজ২৪/সিফাত

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন