পয়লা বৈশাখে ৬টার পর অনুষ্ঠান নয়, মুখোশ থাকবে হাতে

প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০৩:৫০:২৫ || পরিবর্তিত: ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০৩:৫০:২৫

পয়লা বৈশাখে ৬টার পর অনুষ্ঠান নয়, মুখোশ থাকবে হাতে

বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। নিরাপদ ও আনন্দঘন পরিবেশে বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে নিরাপত্তাবলয় থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে উন্মুক্ত স্থানে সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো ধরনের অনুষ্ঠান করা যাবে না।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে পয়লা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত নিরাপত্তা ও ট্রাফিক নির্দেশনামূলক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

উপস্থিত সাংবাদিকদের নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে কমিশনার বলেন, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রবীন্দ্রসরোবর, হাতিরঝিলসহ সব অনুষ্ঠান ভেন্যুতে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি ভেন্যু ‘ডগ স্কোয়াড’ দিয়ে ও ম্যানুয়ালি সুইপিং করানো হবে। সমগ্র এলাকা থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায় এবং রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে কন্ট্রোল রুম থেকে। জনসাধারণ যাতে নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে রমনা পার্কে হেঁটে যেতে পারে, সে জন্য ট্রাফিক ডাইভারশন দিয়ে, রোড ব্লক করে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে র‍্যারিকেডের সামনে তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলের উদ্দেশে হেঁটে যেতে দেওয়া হবে। আমরা পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, অনুষ্ঠানস্থালে প্রবেশের ক্ষেত্রে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হবে। অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে থাকবে ওয়াচ টাওয়ার। যেখান থেকে ‘বাইনোকুলার’ দিয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে পুলিশ। প্রস্তুত থাকবে সোয়াট, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডিবি ও সিটিটিসির সদস্যরা। রমনা পার্ক, রবীন্দ্রসরোবর ও হাতিরঝিল এলাকায় থাকবে নৌ পুলিশ ও ডুবুরি দল। থাকবে মেডিকেল টিম, ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের পাশেই থাকবে লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকেন্দ্রিক থাকবে সেন্ট্রালি মাইকিংয়ের ব্যবস্থা। ‘পয়লা বৈশাখ’কেন্দ্রিক সব অনুষ্ঠানস্থল থাকবে ধূমপানমুক্ত। এ ছাড়া ইভটিজিং প্রতিরোধে কাজ করবে বিশেষ টিম। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ধূমপায়ী ও ইভটিজারদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

কমিশনার বলেন, রমনা পার্কে ছায়ানটের অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক থাকবে অন্তঃবেষ্টনী ও বহিঃবেষ্টনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বাহির পথের নির্দেশনা দেওয়া থাকবে। নির্দিষ্ট পথ দিয়ে প্রবেশ ও বের হতে হবে। পয়লা বৈশাখে প্রত্যেক নাগরিককে ফুল ও বাতাসা দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ছাড়া আটটি স্থান থেকে জনসাধারণের মাঝে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করবে ডিএমপি।

‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও একই রুটে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে। শোভাযাত্রার পুরো রুট থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায়। সোয়াট, ডিবি, ইউনিফর্মে থাকা পুলিশ দিয়ে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়’ বেষ্টনী করা হবে। পথের মধ্যে কাউকে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। মুখোশ মুখে পরা যাবে না। তবে হাতে রাখা যাবে। কোনো প্রকার বাণিজ্যিক ব্যানার নিয়ে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়’ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। প্রত্যেককে তল্লাশি করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়’ অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে।

নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে কমিশনার আরো বলেন, পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানস্থলে কোনো প্রকার ব্যাগপ্যাক, ট্রলি ব্যাগ, বড় ভ্যানিটি ব্যাগ, হ্যান্ডব্যাগ, ধারালো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, দাহ্য পদার্থ, ব্লেড, নেইল কাটার সঙ্গে নিয়ে আসা যাবে না। তবে নারীরা ছোট হ্যান্ড পার্স নিয়ে আসতে পারবেন। বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করে সবাইকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।

আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ঢাকা মহানগরের নিরাপত্তার স্বার্থে উৎসবমুখর পরিবেশে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করতে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও মেনে চলতে সবার সহযোগিতা কমনা করেন ডিএমপি কমিশনার।

ব্রিফিংয়ে এ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/নাবিল

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ