বাংলা নববর্ষ উদযাপনে প্রস্তুাতি শেষ পর্যায়

প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০২:৪৭:০১ || পরিবর্তিত: ০৪ এপ্রিল, ২০১৯ ০২:৪৭:০১

বাংলা নববর্ষ উদযাপনে প্রস্তুাতি শেষ পর্যায়

সারা দেশে ব্যাপক উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখ পালনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উৎসবের রঙে সবাইকে রাঙাতে নেওয়া হয়েছে নানান কর্মসূচি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, নববর্ষ ঘিরে কোথাও কোনো জঙ্গি হামলা বা সহিংসতার হুমকি নেই। তবে যেকোনো পরিস্থিতিকে মোকাবেলায় প্রস্তুত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

ওই সভা শেষে জানানো হয়, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নজরদারি করবে সরকার। যাতে কেউ এ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ও সহিংসতা ছড়াতে না পারে এজন্যই এ উদ্যোগ বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

মন্ত্রী বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আগের দিন ১৩ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে। পহেলা বৈশাখের সব অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করে অনুষ্ঠাস্থল ত্যাগ করতে হবে। সন্ধ্যা ৬টায় পুলিশ সবাইকে বের করে দেবে।

তিনি বলেন, এবারো মঙ্গল শোভাযাত্রায় মাঝ পথে প্রবেশ করা যাবে না। মুখোশ হাতে রাখতে হবে এবং ভুবুজালা নিষিদ্ধ থাকবে।

বৈশাখের বর্ষবরণের উদযাপন অনুষ্ঠানে ইভটিজিং, উচ্ছৃঙ্খলতা ও নাশকতা প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ডিএইচ বাদলরমনা, সোহরাওয়ার্দী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হাতিরঝিল, পুরান ঢাকাসহ পুরো ঢাকাকে নজরদারির মধ্যে আনা হবে। পুলিশ মনিটরিং শেলের মাধ্যমে অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশ ও অবস্থান নজরদারি করা হবে। আর্চওয়ে বসানো হবে। মাদক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজরদারির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এদিকে, বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উদযাপন উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এম খালিদ এমপির সভাপতিত্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলেও এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উদযাপন উপলক্ষে নিম্নোক্ত কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আগামী ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৬’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কমসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দেবেন। দিনটি হবে সরকারি ছুটির দিন।

নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। ছায়ানট রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কো কর্তৃক এটিকে ‘Intangible Cultural Heritage’-এ

অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে এদিন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।

বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী র‌্যালি আয়োজন করা হবে। তাছাড়া কুইজ প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দু'দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, কপিরাইট অফিস, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও বিসিক নববর্ষ মেলা, আলোচনা সভা, প্রদর্শনী, কুইজ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট/একাডেমিসমূহ তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।

বাংলা নববর্ষে সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। শিশু পরিবারের শিশুদের নিয়ে ও কারাবন্দিদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে এবং কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। সব জাদুঘর ও প্রত্নস্থান সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে (শিশু-কিশোর, ছাত্র-ছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুদের বিনা টিকেটে)।

স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। অভিজাত হোটেল এবং ক্লাব বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের আয়োজন করবে।

সব সরকারি/বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং স্ব উদ্যোগে বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি চ্যানেলসমূহ রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করবে।

‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৬’ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রজন্মনিউজ২৪/দেলাওয়ার হোসাইন।

 

 

 

 

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ