দেশে এলপিজি’র বাজার বছরে এক মিলিয়ন টন

প্রকাশিত: ০৪ মার্চ, ২০১৯ ০৬:১০:২৩

দেশে এলপিজি’র বাজার বছরে এক মিলিয়ন টন

বাংলাদেশে এলপিজি’র চাহিদা ৮০ হাজার থেকে এক মিলিয়ন টন। এই চাহিদা আগামীতে আরও বাড়বে বলে মনে করেন জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বিশ্ব বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে এলপিজি’র দাম বেশি এমন মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

এলপিজি খাতে কিছু বেসরকারি কোম্পানির ‘একচেটিয়া আধিপত্যের’ লাগাম টানতে অচিরেই নীতিমালা প্রণয়ন ও রেগুলেটর নিয়োগ দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী সাউথ এশিয়ান এলপিজি সামিটের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে থাকা বাংলাদেশে এলপিজি চাহিদা দ্রুত বাড়ছে বলে বেশ কয়েকজন অতিথির বক্তব্যে উঠে আসে। পরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি কোম্পানিগুলো এলপিজির যা ইচ্ছা দাম বাড়াচ্ছে। এখন সময় আসছে এদের শক্তভাবে ধরার। প্রাইসের ব্যাপারে আর কমপ্রোমাইজ করার সুযোগ নেই। বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম কমছে। কিন্তু বাংলাদেশে যখন তিনটি হাত ঘুরে এই এলপিজি গ্রাহকের কাছে যায় তখন এমনিতেই দাম ৪০০-৫০০ টাকা বেড়ে যায়।

বর্তমানে ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে গাড়িতে প্রতি লিটার এলপিজি ৪২ টাকায় দেওয়া হয়। অন্যদিকে আবাসিকের জন্য নির্ধারিত ১২ কেজি এলপিজির সিলিন্ডারের দাম রাখা হয় ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা। কেজি আর লিটারের পার্থক্য এড়িয়ে গেলে এই দামে পার্থক্য প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকার এ পর্যন্ত ৫৫টি কোম্পানিকে এলপিজির জন্য প্রাথমিক লাইসেন্স দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে মাঠে আছে মাত্র ১৮টি থেকে ২২টি কোম্পানি। এর বাইরেও গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে বেশ কয়েকজনের হাত ঘোরে এলপিজির সিলিন্ডার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলপিজির দাম কীভাবে আরও সাশ্রয়ী করা যায় সেটা চিন্তা করা হচ্ছে, আমরা একটা পলিসি তৈরি করছি। এই ব্যবসাকে একটা রেগুলেশনের আওতায় আনতে হবে। যারা ব্যবসা করছে তারা সব কিছু মেনে ঠিকঠাকভাবে করছে কি না, তা রেগুলেটর দেখবে। সরকারি কোম্পানি বিপিসি এলপিজির ব্যবসা করলেও তার অবস্থা ‘খুবই খারাপ’ বলে জানান জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে ইউরোগ্যাস কোম্পানির এমডি ও এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এলপিজি কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মুনাফার ধারণাটা সঠিক নয়। কোম্পানিগুলো বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতি তিনমাস পর পর দাম ঠিক করে। ডিলার ও এজেন্ট পর্যায়ে গিয়ে সেই দাম বেড়ে যায়।

এর আগে দুই দিনব্যাপী এলপিজি সামিটের উদ্বোধনী বক্তব্যে এলপিজি অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, এলপিজি একটি ইনোসেন্ট পণ্য। গত চার বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ প্রচলিত জ্বালানি থেকে বেরিয়ে এলপিজির ব্যবহার শুরু করেছে। দেশে এলপিজির বাজার ধীরে ধীরে আরও বড় হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই খাতে মাঝারি মানের বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কতা রয়েছে। এই খাতে অপরিকল্পিত বিনিয়োগ ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।

আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও অন্তত ১০টি কোম্পানি বাংলাদেশের এলপিজি খাতে যুক্ত হচ্ছে বলে জানানো হয় অনুষ্ঠানে। দুই দিনের এই সম্মেলনে ৮০টিরও বেশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান তাদের এলপিজি সম্পর্কিত সর্বশেষ প্রযুক্তি ও তথ্য উপস্থাপন করছে। এতে প্রায় ২০০ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিপিসির চেয়ারম্যান শামসুর রহমানসহ অন্যান্য অতিথিরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শিল্পে এলপিজি ব্যবহারের জন্য সেন্ট্রাল প্ল্যান্ট, বিভিন্ন আকারের বোতল, এলপিজিচালিত মোটরসাইকেল, ভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী প্রদর্শন করছে দেশ-বিদেশি কোম্পানিগুলো।

প্রজন্মনিউজ২৪/দেলাওয়ার হোসাইন।

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ