অর্থমন্ত্রী রিজার্ভ উদ্ধার মামলার তথ্য সংসদে জানাবেন

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ ০৫:৪০:৪৩

অর্থমন্ত্রী রিজার্ভ উদ্ধার মামলার তথ্য সংসদে জানাবেন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি যাওয়া ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পক্ষে মামলা করেছে দেশটির একটি আইনি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে যখনই কোনো আপডেট তথ্য পাওয়া যাবে তখনই স্পিকারের মাধ্যমে সংসদকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে তিনি এ তথ্য জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাংকগুলো এবং আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনায় আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর্থিক খাতের ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ব্যবস্থা তারাই করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত ফেডারেল ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সংরক্ষণ করা হয়।

পৃথিবীর প্রায় সব দেশের রিজার্ভই এখানে সংরক্ষিত থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকে সংরক্ষিত আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের একটি অংশ শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে পাচার করা হয়।মন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যহারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা ৭০টি ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৯৫১ মিলিয়ন ইউএস ডলার পাচারের চেষ্টা করে। এর মধ্যে ৫টি মিথ্যা চেকের মাধ্যমে ১০১ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার করার পর নিউইয়র্কের ফেডারেল ব্যাংক সন্দিহান হয়ে বাকি পেমেন্টগুলো করতে পারেননি।

তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সরকার চুরি হয়ে যাওয়া অর্থ উদ্ধার, চুরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণ ও ভবিষ্যৎ চুরি রোধে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে।এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি দ্রুত সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট পেশ করে।

পাশাপাশি সিআিইডিকে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সিআইডির তদন্ত এখনও চলমান আছে। মন্ত্রী বলেন, ফৌজদারি কার্যক্রমে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে সে জন্য রিপোর্টটি এখনও প্রকাশ করা হয়নি। রিজার্ভ চুরির বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ এবং বিদেশি একাধিক প্রতিষ্ঠান জড়িত আছে। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ইউএসের এফবিআই এবং ফিলিপাইন সরকার তদন্তে নামে।

এরই ধারাবাহিকতায় শ্রীলংকা থেকে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করা হয় এবং ফিলিপাইন থেকে ১৪ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ৬৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধারে এখনও কার্যক্রম চলমান আছে।তিনি বলেন, এফবিআই নিজ দেশের হ্যাকারদের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং ফিলিপাইনে এন্ট্রি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল মানি লন্ডারিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

এখান থেকে আমরা পর্যাপ্ত প্রমাণাদি পেয়েছি এবং প্রমাণাদিসহ ২০১৮ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আইনি প্রতিষ্ঠান ‘কোজেন অব অনার’কে দায়িত্ব দেয়া হয়। যারা গত জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পক্ষে মামলা করেছে। উল্লেখ্য, নির্দিষ্ট সময়ে আমরা মামলাটি করতে পেরেছি। চুরি যাওয়া রিজার্ভ অর্থ উদ্ধারের কাজ এখনও চলমান আছে।

স্পিকারের সঙ্গে কোরিয়ান সংসদের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ : জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে কোরিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মিন খিয়াংউক এমপির নেতৃত্বে কোরিয়ান সংসদের এক প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে। সাক্ষাৎকালে তারা সংসদীয় কার্যক্রম, বিনিয়োগ, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কোরিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রজন্মনিউজ২৪/ওসমান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ