মিতুর বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন

প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ ০৫:৪১:২৮

মিতুর বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন

চট্টগ্রামে তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরীকে সাত দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ। রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁন্দগাও থানার এএসআই আবদুল কাদের। শনিবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিকালে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে ডা. আকাশের ফেসবুক থেকে স্ত্রী মিতুর ‘বহুগামিতা’ এবং এ সংশ্লিষ্ট যেসব ছবি ও মেসেঞ্জার চ্যাটের স্ক্রিনশট আপলোড করা হয়েছিল, সেগুলো ডিলিট করে দেয়া হয়েছে।কে বা কারা এ কাজটি করেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. মিজানুর রহমান জানান, ডা. আকাশের আত্মহত্যায় স্ত্রী মিতুর প্ররোচনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আকাশ তার পোস্টে মিতুর যেসব ছেলেবন্ধুর নাম বলে গেছেন, তাদের বিষয়েও পুলিশ তদন্ত করবে। গ্রেফতার মিতুর প্রাথমিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, আমানত শাহ মাজার এলাকা থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ডা. আকাশের ব্যক্তিগত মুঠোফোনটিও জব্দ করা হয়েছে। দুটি মোবাইলই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।কিভাবে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁন্দগাও থানার ওসি আবুল বাশার শনিবার ‍ বলেন, ডা. আকাশের ফেসবুক কিংবা মুঠোফোন থেকে কি কি তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে যেসব তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহারে সেগুলো উদ্ধার করা হবে। তিনি জানান, মিতু ও আকাশের দুটি ফোনই পুলিশের কাছে আছে।

একাধিক পুরুষের সঙ্গে স্ত্রী দিনের পর দিন পরকীয়া কুরে খাচ্ছিল ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশকে। যন্ত্রণা এতটা প্রকট হয়ে উঠেছিল যে, শেষ পর্যন্ত স্ত্রীকে পাপের পথ থেকে ফেরাতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তরুণ সম্ভাবনাময়ী এ চিকিৎসক। নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাসা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ডা. আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগে চিকিৎসা কর্মকর্তা ছিলেন।

তিনি চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার হন তার স্ত্রী তানজিলা হক মিতু।শুক্রবার বিকালে মিতুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেছেন আত্মহত্যাকারী চিকিৎসকের মা জমিরা খানম। মামলায় মিতু, তার বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, মা এবং আমেরিকা প্রবাসী এক বোন ও মিতুর দুই ছেলে বন্ধুকে আসামি করা হয়েছে।মৃত্যুর এক ঘণ্টা আগে ডা. আকাশ নিজের ফেসবুকে স্ত্রীর উদ্দেশে একটি স্ট্যাটাস দেন।

স্ট্যাটাসটিতে স্ত্রীর প্রতি তার অভিমান ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।ডা. আকাশ স্ট্যাটাসে স্ত্রীর উদ্দেশে লেখেন- ‘ভালো থেকো, আমার ভালোবাসা তোমার প্রেমিকাদের (প্রেমিকদের) নিয়ে।চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল বাশার  বলেন- প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর সঙ্গে রাতে ঝগড়া করেন আকাশ। এর পর আকাশ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে একপর্যায়ে নিজের শরীরে ইনজেকশন পুশ করে বিষপ্রয়োগ করেন। আকাশের স্ত্রী মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান শুক্রবার জানান, আত্মহত্যার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ওই দম্পতির মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছিল।

তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিতু কিছু কিছু বিষয় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। আবার কিছু বিষয় এড়িয়ে গেছেন।আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করে যান। এর ‘প্রমাণ’ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার ‘বন্ধুদের’ বেশ কিছু ছবিও তিনি ফেসবুকে তুলে দিয়ে যান। অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান আরও বলেন, বছর তিনেক আগে প্রেম করে বিয়ে করেন আকাশ ও মিতু। বিয়ের পর পরই মিতু যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।

তখন থেকেই বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তিনি জানান, গত ১৩ জানুয়ারি মিতু দেশে আসার পর তা আরও বেড়ে যায়। বুধবার রাতে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হাতাহাতিও হয়।সেদিন রাতেই মিতুর বাবা এসে আকাশদের বাসা থেকে মেয়েকে নিয়ে যান। ভোরের দিকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন আকাশ।প্রসঙ্গত, কয়েক বছরের প্রেমের পরিণতি হিসেবে ২০১৬ সালে তানজিলা হক মিতুকে বিয়ে করেন আকাশ। কিন্তু বিয়ের তিন বছর না যেতেই সেই ভালোবাসা ফিকে হয়ে যায়।

আকাশের ভাই নেওয়াজ মোরশেদ জানান, আকাশের স্ত্রী মিতুর মা-বাবা আমেরিকায় থাকেন। মিতুও মাঝেমধ্যে মা-বাবার কাছে যান। ১৬ জানুয়ারি তিনি দেশে আসেন। বিয়ের বছর না যেতেই পরকীয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আকাশের সঙ্গে মিতুর দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। পরকীয়া থেকে মিতুকে ফেরাতে না পেরে আমার ভাই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, যা মৃত্যুর আগে তার দেয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেই স্পষ্ট।মৃত্যুর আগে ডা. আকাশ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘২০১৬-তে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন আগে জানতে পারি- কিছু দিন আগে শোভন নামে চুয়েটের ৮ম ব্যাচের এক ছেলের সঙ্গে ও হোটেলে রাত কাটায়; আর কত কি লজ্জা লাগছে সব লিখতে।

ততদিনে সবাইকে বিয়ের দাওয়াত দেয়া শেষ। আমাকে যেহেতু চট্টগ্রামের সবাই চিনে, তাই বিয়ে কেনসেল (বাতিল) করতে পারিনি লজ্জাতে।কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রের সঙ্গে মিতুর পরকীয়া তুলে ধরে ডা. আকাশ লেখেন- ‘ওর মোবাইলে দেখি, ভাইবারে দেখতে পাই মাহবুব নামে কুমিল্লা মেডিকেলের ব্যাচম্যাটের সঙ্গে হোটেলে ...শত শত ছবি। আমি তো বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেলাম। তার পর ক্ষমা চাইল (স্ত্রী) শবেকদরের রাতে কান্না করে পা ধরে আর কখনো এমন হবে না। আমিও ক্ষমা করে দিয়ে এক বছর ভালোভাবেই সংসার করলাম।

প্রজন্মনিউজ২৪/ওসমান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined index: category

Filename: blog/details.php

Line Number: 417

Backtrace:

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/blog/details.php
Line: 417
Function: _error_handler

File: /home/projonmonews24/public_html/application/views/template.php
Line: 199
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/application/controllers/Article.php
Line: 87
Function: view

File: /home/projonmonews24/public_html/index.php
Line: 315
Function: require_once

বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ