চিকিৎসকদের জন্য চালু হচ্ছে ‘ডিজিটাল হাজিরা’

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী, ২০১৯ ১২:২২:৩৮

চিকিৎসকদের জন্য চালু হচ্ছে ‘ডিজিটাল হাজিরা’

কর্মচারীরা সময়মতো অফিসে আসেন না। কোনো কিছুতেই তাদের বাগে আনা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় আঙুলের ছাপে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বসানো হলো যন্ত্র। এই ডিজিটাল পদ্ধতি চালুর পর গরহাজির আর দেরিতে উপস্থিতি দুটোই দূর হয়।

যশোরের এই অভিজ্ঞতা দেশের বিভিন্ন জেলাতেও সরকারি কার্যালয়কে উদ্বুদ্ধ করেছে একই পদ্ধতি চালুর। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না থাকায় কোনো কোনো জেলায় উদ্যোগী কর্মকর্তারাই কেবল চালু করেছেন এই পদ্ধতি। আর সুফল মিলেছে সব জায়গায়।

চিকিৎসা প্রশাসন বারবার তাগাদা দিয়ে বা সতর্ক করেও যখন চিকিৎসকদের হাসপাতালে আনতে পারছে না, তখন আঙুলের ছাপ দিয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করাকে একটি উপায় হিসেবে ভাবা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পারভীন আখতার জানান, সব উপজেলা হাসপাতালেই এই যন্ত্র বসাবেন তারা।

মফস্বল শহর, উপজেলা ও গ্রাম এলাকায় হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসকদের ব্যাপকভাবে অনুপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ আছে। এ নিয়ে অসংখ্যবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও সরকার হাসপাতালে ডাক্তার নিশ্চিত করার মতো ব্যবস্থা করতে পারেনি। এমন অভিজ্ঞতাও আছে, চিকিৎসকেরা মাসে বা সপ্তাহে এক বা একাধিক দিন গিয়ে বাকি সব দিনের হাজিরা খাতায় সই করে আসেন।

এর মধ্যে সোমবার দেশের আটটি জেলার ১১টি হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে এই বিষয়টির দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়। কেবল ঢাকার একটি হাসপাতালে শতভাগ চিকিৎসকের উপস্থিতি পায় দুদক। সারা দেশে অনুপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৪০ শতাংশ। তবে রাজধানী বাদ দিলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনুপস্থিতির হার আরও বেশি, শতকরা প্রায় ৬২ শতাংশ।

এরই মধ্যে দুদক এই প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দেবে তারা। আর অভিযানের পর হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের উপস্থিতি কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে একাধিক বৈঠকও হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পারভীন আখতার বলেন, ‘আমাদের কিছু জায়গায় ডিজিটাল সিস্টেম আছে। তবে সব উপজেলায় ডিজিটাল সিস্টেম চালুর বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি, খুব শিগগির এটা চালু হয়ে যাবে।’

এই যন্ত্র বসানোর পর উপস্থিতি খাতার পদ্ধতি বাতিল হয়ে যাবে। যন্ত্রে আঙুলের ছাপ দিয়েই জানাতে হবে হাজিরা, হাসপাতালে উপস্থিতি এবং হাসপাতাল ত্যাগের সময়। ফলে কেউ দেরিতে এলেন কি না, কেউ অনুপস্থিত কি না, এই বিষয়টিতে নজরদারি নিশ্চিত হবে। কারও পক্ষে একদিন অফিস না করে সেদিনের হাজিরা দেওয়া যাবে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করছে, এই পদ্ধতি চালু হলে কেউ অনুপস্থিত থাকলে সেটির প্রমাণ থাকবে। ফলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। বিদ্যমান পদ্ধতিতে অনুপস্থিত কেউ পরে হাজিরা খাতায় সই করলে কিছু করার থাকে না।

দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, ‘ডিজিটাল হাজিরার পাশাপাশি যদি হাসপাতালগুলোকে স্থানীয় সরকারের অধীনে নিয়ে আসা হয়, তাহলে জবাবদিহি আরও বেশি নিশ্চিত হবে।’

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘সারা দেশের উপজেলায় হাজিরা ফিঙ্গারপ্রিন্টের আওতায় আনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুদকের অভিযানের পরই আমরা সারা দেশের সিভিল সার্জনদের নির্দেশনা দিয়েছি। কঠোর মনিটরিং আরোপ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় যাতে কোনো চিকিৎসক ফাঁকি দিতে না পারেন, সে জন্য দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন





ব্রেকিং নিউজ












A PHP Error was encountered

Severity: Core Warning

Message: PHP Startup: Unable to load dynamic library '/opt/cpanel/ea-php56/root/usr/lib64/php/modules/redis.so' - /opt/cpanel/ea-php56/root/usr/lib64/php/modules/redis.so: cannot open shared object file: No such file or directory

Filename: Unknown

Line Number: 0

Backtrace: