খালেদা জিয়ার মুক্তি আগে চায় বিএনপি

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী, ২০১৯ ১২:০৮:৪১

খালেদা জিয়ার মুক্তি আগে চায় বিএনপি

প্রায় এক বছর হতে চললো কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে অঙ্গীকার করেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি।দলের নেতারা ধারণা করেছিলেন নির্বাচনে তারা বিজয়ী হবেন এবং বেগম জিয়ার মুক্তি মিলবে।কিন্তু বিএনপি ভরাডুবির শিকার হওয়ার পর এখন তার মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন নেতা-কর্মীরা।

তাদের জিজ্ঞাসা-কারাগার থেকে কবে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন?এবিষয়ে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকে এখন সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের নেতারা।বিএনপির লক্ষ্য হলো-আইনি লড়াই জোরদার, রাজপথে আন্দোলন, সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার ও প্রভাবশালী বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে কূটনৈতিক পর্যায় থেকে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি।

সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই দফা বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ সন্ধানে করণীয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।সেখানে নানা প্রস্তাব উঠে আসে।নির্বাচনের পর খালেদা জিয়ার সিনিয়র আইনজীবী প্যানেলের সদস্যরা দুই দফা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন।দ্রুত কিভাবে তিনি জামিনে মুক্তি পেতে পারেন তা নিয়ে আলোচনা হয় এসব বৈঠকে।বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলা ও এসব মামলার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে একটি তালিকা প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার আইনজীবী প্যানেলের সদস্যরা।

একইসঙ্গে কুমিল্লার আদালতে চলমান হত্যা মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি দীর্ঘায়িত করায় এ বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বড় পুকুরিয়া ও নাইকো দুর্নীতি মামলার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন আইনজীবীরা।আগামীকাল ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি অভিযোগ গঠনের জন্য রয়েছে।গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট আদালত শাখা থেকে সংগ্রহ করেছে।

এছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকায় ২টি এবং নড়াইলে দায়ের হওয়া একটি মানহানির মামলার কার্যক্রম স্থগিত করতে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইনজীবীরা।পাশাপাশি এখন থেকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর যাবতীয় নথি ও আদেশের অনুলিপি উত্তোলনের ব্যয়ভার বিএনপির পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলেও বৈঠকে আলোচনা হয়।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমাদের নেত্রীকে কারাগার থেকে বের করে আনতে হবে।

সেজন্য আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমগ্র দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।মুক্ত করতে হবে গণতন্ত্রকে। এই শপথ নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে।একজন নিরপরাধ ব্যক্তি, যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তিনি বিনাদোষে সাজা খাটবেন,তা হতে পারে না। তাকে মুক্তি দিতেই হবে।রাজপথ ও আইনি লড়াই চলছে। এটি আরও জোরদার করা হবে।

এদিকে দলের কাউন্সিল করে ঘুরে দাঁড়ানোর যে পরিকল্পনা চলছে তা বাস্তবায়ন করতে বেগম জিয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন সিনিয়র নেতারা।তারা বলছেন, বেগম জিয়া মুক্তি না পেলে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করা সম্ভব হবে না।নতুন করে গঠিত হচ্ছে বিএনপির বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটি বিএনপির ‘বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। কূটনীতিক তত্পরতা জোরদার করার জন্য এ কমিটি নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সমপ্রতি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কমিটি স্থগিতের বিষয়টি বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্যদের অবহিত করা হয়।জানা গেছে, শমসের মবিন চৌধুরী দল থেকে পদত্যাগের পর কমিটির হাল ধরেন সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমান। ২০১৫ সালে তিনি গ্রেফতার হয়ে কারাগার থেকে বেরুনোর পর কমিটিতে কাজ বন্ধ করে দেন। বর্তমানে তিনি লন্ডনে বসবাস করেন।পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া ইনাম আহমেদ চৌধুরীকে এই কমিটির দায়িত্ব দেন।

সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে ইনাম আহমেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন।লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুরের অবসরের চিন্তা শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনীতি থেকে অবসরের চিন্তাভাবনা করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল(অব.)মাহবুবুর রহমান।এরই মধ্যে দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন।এপ্রসঙ্গে মাহবুবুর রহমান বলেন, বয়স হয়ে গেছে।শারীরিকভাবে আমি অসুস্থ। তা ছাড়া বাংলাদেশে সুরাজনীতির ভবিষ্যত্ও অন্ধকার।তরুণদেরও রাজনীতিতে জায়গা করে দেওয়া উচিত।তাই এখন আমার অবসর নেওয়াই উচিত।

প্রজন্মনিউজ২৪/ওসমান

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ