প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতি করলে কঠোর শাস্তি

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারী, ২০১৯ ১২:৪১:১৭

দুর্নীতি করলে কঠোর শাস্তি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেছেন, কেউ দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়েছে। এখন আর দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই। দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠাই সরকারের অগ্রাধিকার। সেদিকে খেয়াল রেখে সকলকে জনস্বার্থে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

 চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের মতো সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ।

 এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ ও সচিব সাজ্জাদুল হাসান প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

 সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেটা প্রয়োজন সেটাতো আমরা মিটাচ্ছি। তাহলে দুর্নীতি কেন হবে। মন মানসিকতাটা পরিবর্তন করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আপনাদের দিতে হবে একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত। শেখ হাসিনা জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, কেউ দুর্নীতি করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

 কারণ যে হারে বেতন আমরা বাড়িয়েছি, এ উদাহরণ মনে হয় পৃথিবীর কোনো দেশেই নেই। তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে তার সরকার সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে।

 উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি তা আমরা পূরণ করতে পারব, তার জন্য প্রয়োজন সুশাসন, তার জন্য দরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সততা-আন্তরিকতা নিয়ে জনসেবা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাণকেন্দ্র জনপ্রশাসন। আপনাদের সেভাবে কাজ করতে হবে, আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবেন।

 আপনাদের দায়িত্ব কিন্তু অনেক অনেক বেশি। শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে অনুরোধ করব, একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, দেশটা আমাদের। আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। আজকে সারাবিশ্বে একটা সম্মানজনক জায়গায় আসতে পেরেছি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি সেই পাকিস্তানও এখন আর্থ-সামাজিক সূচকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশকে অনুকরণ করতে চায়।

 তিনি বলেন, ‘এখন সেই পাকিস্তানও বলে আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আজকে কিন্তু আমাদের আর তলাবিহীন ঝুড়ি বলার সাহস কারো নেই। কারণ আমরা অনেক এগিয়েছি। এই এগিয়ে যাওয়াটা, এই যাত্রাটা আমাদের কিন্তু অব্যাহত রাখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনপ্রশাসনে বিশেষ দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁর সরকার ‘জনপ্রশাসন পদক’ প্রবর্তন করেছে।

 প্রশাসনসহ সবক্ষেত্রে শুধু জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নয় দক্ষতাকেও প্রাধান্য দিতে হবে। কে কত বেশি কাজ করতে পারে, সততার সঙ্গে কাজ করতে পারবে এবং নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলবে, সব কিছু বিবেচনা করে পদোন্নতি হওয়া উচিত। যে কর্মকর্তা যে বিষয়ে অভিজ্ঞ তাকে সেই বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সর্বক্ষেত্রে এর সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

 এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে। বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রয়াত জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কথা স্নেহভরে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা । সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তাঁর অনুজ প্রতীম ছিলেন উল্লেখ করে তাঁর পিতা (সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পিতা) মুজিব নগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তিনি।

 সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নামকরণের প্রস্তাব সৈয়দ আশরাফ করেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি এজন্য নামটি পরিবর্তন করে দিয়েছিলাম। কেননা জনগণের সেবা করা এই মন্ত্রণালয়ের সবথেকে বড় দায়িত্ব। এখান থেকেই সেবাটা মানুষের কাজে পৌঁছে যায়।

 

পাঠকের মন্তব্য (০)

লগইন করুন



আরো সংবাদ














ব্রেকিং নিউজ