প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী, ২০১৯ ০৩:০৬:৫৯
খুব কনকনে শীত এতো সকালে ঘুম থেকে উঠতে একদমই মন চাচ্ছে না। মনে হচ্ছে আরো কিছু সময় ঘুমাতে পারলে ভাল হতো। কিন্তু মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসছে পবিত্র আযানের ধ্বনি । তাই ইচ্ছা না থাকা সত্বেও কম্বলের নিচে আর আরাম করা যাবে না। তারপরও মনে হচ্ছে কম্বলটা ভাল করে দিয়ে আরো একটু শুয়ে থাকি । যাক দেরি না করে ঝটপট উঠে পড়লাম। কম্বলটা সড়াতেই শীতের হালকা ঠান্ডা অনুভব করছিলাম। দরজা খুলতেই হিম শীতল ঠান্ডা হাওয়া আমাকে মনে করিয়ে দেয় শীতের সকালের কথা। ঠান্ডা লাগতেই শরীরের পশম গুলো কেমন খাড়া হয়ে যেতে লাগল। তাই দেরি না করে শীতের জামাটা গায়ে জড়ালাম। দূর বাঁশ বনে পাখিদের কিচির-মিচির আওয়াজ শুনা যাচ্ছে। তারা সুরে সুরে গান গেয়ে সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, "ভোর হল দোর খোল" ।
আকাশের হালকা আলোতে চারপাশ কিছুটা আলোকিত হয়েছে মাত্র। এখন সূর্য মামা উকি দেয় নি। কিন্তু পাখিরা ছুটে চলছে তাদের আপন মনে। তাদের ছুটাছুটি আর কলকাকলিতে মুগ্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলাম কিছু সময়। হঠাৎ মনে পড়লো আমাকে তো নামাজ পড়তে হবে। যদিও শীতের সকালে পানি একটু ঠান্ডা থাকে তবুও ওযু করে নামাজ আদায় করে নিলাম।
শীতের সকালে প্রকৃতি একটু ভিন্ন রুপে সেজে থাকে। চারপাশ কুয়াশার চাদরে ঢাকা। গাছপালা গুলো স্থির হয়ে আছে দাড়িয়ে । পাতাদের দোল খাওয়া কেমন যেন বন্ধ হয়ে আছে। যেন কেউ সাদা চাদরে তাদের ঢেকে রেখেছে। বাড়ি পাশে বিলে ধারে যেতে দেখি, কুয়াশা চাদরের যেন সমস্ত পৃথিবীটা ঢেকে আছে। সামনে পথ চলবে এমন সাধ্য কার। তারপরও প্রকৃতির স্বাদ নিতে সামনে চললাম। একটু পথ যেতেই পায়ে খুব ঠান্ডা অনুভূতি হল। মনে হল কেউ আমার পায়ে বরফের খন্ড রেখেছে। কিন্তু আশেপাশে তো কেউ নেই। নিচে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম বরফের খন্ড নয় ঘাসের ঢগায় জমে থাকা শিশিরের বিন্দু গুলোই বরফের মত ঠান্ডা। শিশির বিন্দুর ঠান্ডা অনুভূতিতে মনে হচ্ছে এগুলোকে কেউ ফ্রিজ থেকে এনে এখানে ছিটিয়ে দিয়েছে। এই ঠান্ডার মাঝেও কিছু সময় হাটতে লাগলাম। শরীরে লাগছে শীত আর পায়ে ঘাসের উপর জমে থাকা শিশির বিন্দুর ঠান্ডা অনুভূতি খুব ভাল লাগছিল।
একটু সমানে যেতেই নজর কাড়ে মাকরশার জালে জমে থাকা শিশির বিন্দু গুলো। এযেন রাজত্ব জয় করে নিজেদের অবস্থা নেয়া মত। পূব আকাশের হালকা আলোতে শিশির বিন্দু গুলো মুক্তার মতো জলমল করছে। হঠাৎ আমার হাতে তাকিয়ে দেখি পশম গুলো সব সাদা হয়ে আছে। কি করে এসব হলো ভাবতে লাগলাম। পশমে হাত দিয়ে বুঝতে পারলাম শিশির বিন্দু বুঝি হাতকে ঢেকে দিতে চাচ্ছে। যখনই চুল ঠিক করার জন্য মাথায় হাত দেই, দেখি আমার হাত ভেজা। আমি পুরাই থ হয়ে গেলাম। আমার মাথায় পানি আসলো কোথায় থেকে। অবশেষে বুঝতে পারলাম এবুঝি শিশির কণার জমে থাকা পানি। ভাবলাম একটু সময়ে আমার মাথা ভিজিয়ে দিয়েছে। আর যদি সারা রাত থাকা যায় তাহলে আমাকে গোসল করিয়ে দিবে।
ঘন কুয়াশায় যেন পথ হারা পথিকের মত ঘুরছি। তারপরও ক্ষেতের আইল ধরে হাটতে ভালই লাগছিল। নিচে তাকাতে দেখি শিশির বিন্দুরা আমার পা ধুয়ে দিয়েছে। ঘন কুয়াশায় ঘেরা বালিহীন মরুভূমিতে আমি ঘুরপাক খাচ্ছি। পথ খুজে পাচ্ছিলাম না কিন্তু ঠান্ডা আর কুয়াশার মাঝে আমার পথ এতটা ভাল লাগছিল বুঝাতে পারবনা। তাই আজও মনে পরে আমার সেই শিশিরের বিন্দুতে হেটে চলা আর কুয়াশার চাদর গায়ে দিয়ে ঠান্ডা মাঝে ঘুরিয়ে বেড়ানোর কথা।
প্রজন্মনিউজ২৪/আব্দুল কাইয়ুম
সেভ দ্য রোডের ১৫ দিনব্যাপী সচেতনতা ক্যাম্পেইন সমাপ্ত
আইপিএল জুয়াড়ি সন্দেহে চারজন গ্রেফতার
রাজধানীর বনশ্রীতে আবাসিক ভবনে আগুন
খালেদা জিয়া ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিল : শেখ হাসিনা
সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী আর নেই
গাজা: বিমান হামলায় বেঁচে যাওয়া বালকের প্রাণ গেল সাহায্য নিতে গিয়ে
ঢাকায় আসতে না পেরে দুবাই-শারজাহর ১০ ফ্লাইট বাতিল